জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নিয়ে আপিলের রায় রোববার

রাজ টাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২৫ ১২:০৫; আপডেট: ১ জুন ২০২৫ ২৩:৩৪

- ছবি - ইন্টারনেট

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের রায় হবে রোববার (১ জুন)। আপিল বিভাগের প্রকাশিত কার্যতালিকায় মামলাটি এক নম্বর ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেবেন।

গত ১৪ মে চতুর্থ দিনের শুনানি শেষে রায়ের জন্য ১ জুন দিন ধার্য করা হয়েছিল।

সেদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক এবং আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম।

আদালতে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামীর আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল এবং ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের আমির সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।

২০০৯ সালে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির তৎকালীন মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন ব্যক্তি জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন। একের পর এক শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

পরবর্তীতে হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামায়াতে ইসলামী। তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানিতে জামায়াতের মূল আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় গত নভেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ বলে আপিল খারিজের আদেশ দেন। ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল থাকে।

এর আগে ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক (পরে প্রধান বিচারপতি হয়ে অবসর) ও বিচারপতি মো. আবদুল হাইয়ের (বর্তমানে অবসর) হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রুল জারি করেন। এরপর জামায়াত একাধিকবার তাদের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয় এবং দলের নাম পরিবর্তন করে ‘জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ’ থেকে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ রাখে।

জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় যে বেঞ্চ তার নেতৃত্বে ছিলেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন (বর্তমানে অবসর), বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম (পরে আপিল বিভাগের বিচারপতি পদত্যাগ করেন) এবং বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হক (গত বছরের ১৯ নভেম্বর পদত্যাগ করেন)।

সংক্ষিপ্ত রায়ে বলা হয়, এই নিবন্ধন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত। একইসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীকে আপিল করার অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী (বর্তমানে অবসর) একই বছরের ৫ আগস্ট জামায়াতের রায়ের স্থগিতাদেশ চেয়ে করা আবেদন খারিজ করেন। ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে।

২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর আপিল বিভাগ জামায়াতের আপিল খারিজ করে দেন। ওইদিন রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানিয়া আমীর এবং আহসানুল করীম। জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউর রহমান।

২০২৪ সালে কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরকার পতনের দাবিতে গড়ানোর তখন ১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতে ইসলামীসহ তাদের অঙ্গসংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামায়াত নিষিদ্ধের আদেশ বাতিলের উদ্যোগ নেয়।

২৮ আগস্ট সরকার সেই নিষিদ্ধ আদেশ প্রত্যাহার করে। এরপর জামায়াত আপিল বিভাগে নিবন্ধন মামলাটি পুনরায় শুনানির জন্য আবেদন করে। আদালত ২২ অক্টোবর বিলম্ব মার্জনা করে আপিলটি পুনরুজ্জীবন (রিস্টোর) করেন। এরপর ৩ ডিসেম্বর শুনানি শুরু হয়ে শেষ হয় ১৪ মে। পরে রায়ের জন্য ১ জুন দিন ধার্য করা হয়।



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top