ক্ষমতায় টিকে থাকতে সর্বগ্রাসী আগ্রাসন চালাচ্ছে আ. লীগ সরকার : ফখরুল

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০২২ ০২:২৫; আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫ ০৪:৫৯

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার ‘সর্বগ্রাসী’ আগ্রাসন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে এই সরকারের আগ্রসনটা সর্বগ্রাসী। একদিকে আমাদের ইতিহাস বিকৃত করছে, আরেক দিকে আমাদের অর্থনীতি পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়ে পরনির্ভরশীল করে ফেলছে।’

আজ বুধবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লা্বরে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে শেরেবাংলা এ কে এম ফজলুল হকের ৬০তম ম্ত্যৃুবার্ষিকী উপলক্ষে শেরেবাংলা জাতীয় যুব স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘আজকের প্রেক্ষাপটে শেরেবাংলার প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অন্যদিকে আমাদের রাজনীতিকে পুরোপুরিভাবে একটা একদলীয় শাসনব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে গিয়ে আমাদের যে মূল গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনা, তার থেকে একেবারে সরিয়ে দিয়ে পুরো একনায়কতন্ত্র ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের দিকে চলে যাচ্ছে। এই সরকার এগুলো পরিকল্পিতভাবে করছে। নট দ্যাট যে, শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার ব্যাপারটা না। একই সঙ্গে দার্শনিকভাবে এটাকে প্রতিষ্ঠিত করবার সে কাজ করছে। ’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্যদিকে আমাদের রাজনীতিকে পুরোপুরিভাবে একটা একদলীয় শাসনব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে গিয়ে আমাদের যে মূল গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনা, তার থেকে একেবারে সরিয়ে দিয়ে পুরো একনায়কতন্ত্র ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের দিকে চলে যাচ্ছে। এই সরকার এগুলো পরিকল্পিতভাবে করছে।

তিনি বলেন, ‘আজকে দেখুন কী অবস্থা হয়েছে? নিজেরা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আজকে সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আপনারা দেখছেন যে পুলিশ কিছুদিন ধরে এ কাজটা করছে। এই যে ঢাকা কলেজ এবং নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যে সংঘর্ষ হলো, দুইজন প্রাণ দিলেন। এটাতে পুলিশ প্রথমে কী করল? বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাদের অ্যারেস্ট করে একজনকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠাল। অথচ প্রত্যেকটি মিডিয়ায়, তাদের সমস্ত ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে এর জন্য মূলত দায়ী হচ্ছে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা, যারা অস্ত্র হাতে নিয়ে আক্রমণ করেছে এবং ওই দুজনকে হত্যা করেছে। ’

‘আরেকবার দেখুন, ওই পাশেই কলাবাগানে যে পার্ক দখল, বাচ্চাদের যে ফুটবল খেলার মাঠ, সেই মাঠ দখল করে সেখানে থানা বানাচ্ছে। এ রকম অসংখ্য ঘটনা। আজকে বাংলাদেশে মানুষের কোনো রকমের নিরাপত্তা তো দূরের কথা, কী করে তাদের আরো বেশি হয়রানি করা যায় সেই ঘটনাগুলো চলছে। ’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে রাজনীতিকে ধ্বংস করা হচ্ছে, বিরোধী রাজনীতিকে ধ্বংস করা হচ্ছে। মিথ্যা মামলায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একসাথে ছয়টা জায়গায় বোমা মারার মামলা আছে। এই যে মিথ্যাচার, এই যে ভয়াবহভাবে পুরো রাজনীতিকে বিনষ্ট করে দেওয়া- এটা আওয়ামী লীগ শুরু করেছে। ’

‘আমরা সেই কারণে সব সময় বলি- আওয়ামী লীগ প্রকৃতপক্ষে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, রাজনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সে জন্য আজকে শেরেবাংলা এ কে এম ফজলুল হক আমাদের কাছে আরো বেশি প্রাসঙ্গিক। যদি আমাদের মূল জায়গাটা আমরা বুঝি, আমাদের মূল অস্তিত্ব রক্ষা রক্ষা করার জন্য কাজ করতে পারি, তা হলে আমরা অবশ্যই সেই জায়গায় সফল হওয়ার চেষ্টা করতে পারব। '

শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের বর্ণাঢ্য জীবনী তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক সম্পর্কে একেবারেই ভুলতে বসেছি। আমাদের পাঠ্যপুস্তক বাদ দিন, অন্যান্য যে বইপত্র রচনা হয়, সেখানেও তার প্রাসঙ্গিকতা সেভাবে আসে না। আমরা যখন দেখি, স্মৃতি সংসদগুলো আলোচনা করে, সেখানে শেরেবাংলার ওপর গবেষণার কাজ করেছেন এ ধরনের মানুষ কিন্তু আমরা আসতে দেখি না, কথা বলতে শুনি না। '

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবেই হচ্ছে যে একটা মাত্র পরিবার, একটা মাত্র দর্শন, তাকেই সামনে নিয়ে আসার জন্য, তাকে প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য আজকে সমস্ত বাংলাদেশের ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে। আজকে পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে কিন্তু একজন নেতা ছাড়া কারো কোনো নামগন্ধ নেই। আমাদের ছোট ছোট নাতি-নাতনি, যারা স্কুলে পড়াশোনা করে, সেখানে কিন্তু তারা একজনের নাম জানে, অন্য কারো নাম জানে না। এমনকি আপনার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে, তারাও বোধহয় কিন্তু শেরেবাংলার নাম একেবারে ভুলে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে। কেউ কি জানে শেরেবাংলা ফজলুল হক সাহেবের কবর এখান (জাতীয় প্রেস ক্লাব) থেকে খুব কাছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনে? এখানে তিনজনের কবর আছে, তার মধ্যে শেরেবাংলা সাহেবের কবরও আছে...। '

সংগঠনের সভাপতি আখতারুল আলম খানের সভাপতিত্বে ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপনের পরিচালনায় আলোচনাসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মহানগর দক্ষিণের সদস্য ইশরাক হোসেন এবং শেরেবাংলার নাতনি ফাহসিনা হক লীরা বক্তব্য দেন।



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top