সিরাজগঞ্জে নদী ভাঙনের কবলে কবরস্থান, ভেসে যাচ্ছে মরদেহ

রাজটাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ৯ জুলাই ২০২৪ ১৯:০২; আপডেট: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৬:৫৩

ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জে চৌহালীতে ব্যাপক নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়েছে চর ছলিমাবাদ দক্ষিণা পাড়া কবরস্থান। গত চার দিনে ১০-১৫ মরদেহ নদীর তীব্র স্রোতে ভেসে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ ছাড়া কয়েকটি মরদেহ স্বজনেরা উদ্ধার করে অন্যত্র কবর দিয়েছে। ভাঙন রোধে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

গত এক সপ্তাহ ধরে যমুনা নদীর পানি বাড়ছেই। যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার ৩৪টি ইউনিয়নের ১৮ হাজার পরিবারের প্রায় ১ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজীপুর উপজেলার খাসরাজবাড়ি, তেকানী, নিশ্চিন্তপুর, চরগিরিস, শাহজাদপুর উপজেলার হাটপাচিল, জালালপুর, কৈজুড়ী চৌহালী উপজেলার ভুতেরমোড় এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দেয়। গত চার দিন হলো চৌহালীতে ভুতের মোড় থেকে চর ছলিমাবাদ দক্ষিণা পাড়া (ময়নাল সরকারের কবরস্থান) পর্যন্ত তীব্র নদী ভাঙন দেখা দেয়।

এলাকার হোমিও চিকিৎসক কামরুল ইসলাম বলেন, গত চার দিন হলো চৌহালী উপজেলার ভুতের মোড় থেকে ময়নাল সরকারের কবরস্থান পর্যন্ত তীব্র নদী ভাঙন শুরু হয়। ইতিমধ্যে কবরস্থানের অধিকাংশ জায়গা নদীতে ধসে পড়েছে।

তিনি বলেন, ‘ভাঙনের সময় আমরা আত্মীয়স্বজনের কবরের পাশে ছিলাম। আমার ফুপা সন্তেশ আলী শিকদার প্রায় ৪০ দিন আগে মারা গেছে। তার মরদেহও নদীতে ধসে পড়লে তা উদ্ধার করে অন্যত্র কবর দিয়েছি। এ ছাড়া তাহেজ ফকির, সোহার সরকারের মা, বুদ্দু শিকদারের মার মরদেহ উদ্ধার করে অন্যত্র কবর দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অনেক মরদেহ নদীর তীব্র স্রোতে ভেসে গেছে।’

ওমারপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মাস্টারের ছেলে আব্দুল হাদি বলেন, ‘নদীর এত স্রোতে সবকিছু ভেসে নিয়ে যাচ্ছে। যারা ভাঙনের সময় কবরস্থানের পাশে ছিল তাদের কয়েকজনের মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করে অন্যত্র কবরস্ত করা হয়েছে। এটি দিনের বেলার ঘটনা। কিন্তু রাতে বেলায় কেউ তো থাকে না। তখন কত মরদেহ ভেসে গেছে তা কেউ জানে না। আমার বাবা, দাদির কবর ভাঙনের মুখে রয়েছে।’

চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল কালাম মোল্লা বলেন, ‘কবরস্থানের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। ৪-৫ লাশ ভাসতে দেখেছি। দু-একটা লাশ আত্মীয়স্বজনেরা উঠাইয়া নিয়ে অন্যত্র কবর দিছে। দু-একটা চইলা গেছে ভাইসা। এখন ভাঙন নাই গতকাল সোমবার ১২টা পর্যন্ত ছিল। বালির বস্তা ফালানো হচ্ছে।’

চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুব হাসান বলেন, ‘যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছি। কবরস্থানের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। কিছু মরদেহ বেরিয়ে নদীতে পড়েছে। পরে তাদের স্বজনেরা মরদেহ উদ্ধার করে অন্যত্র কবরস্থ করেছে।’




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top