বগুড়া রণক্ষেত্র, নিহত ৩
রাজটাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ৪ আগস্ট ২০২৪ ২০:৩৩; আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৫ ২৩:৪৮
-2024-08-04-20-32-20.jpg)
বগুড়ায় অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থকদের সাথে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশের গুলিতে বগুড়া শহরে একজন ও দুপচাঁচিয়ায় একজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুইজনের লাশ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। এদের একজন বগুড়া শহরের চেলোপাড়া এলাকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম (৪০)। তিনি বিএনপি কর্মী। অপরজন অজ্ঞাত ব্যক্তি (৬০)। তারা শহরের কাঁঠালতলা এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন।
অপরজন কাহালু উপজেলার বীরকেদার গ্রামের মমিনুল ইসলাম (৩৪)। তিনি দুপচাঁচিয়া থানায় হামলা করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে মারা যান। তার লাশ দুপচাঁচিয়া উপজেলা হাসপাতালে রয়েছে।
এ ঘটনায় বিকেলে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম জিল্লুর রহমান (৪০)। বাড়ি গাবতলী এলাকায়।
এছাড়াও আন্দোলনকারীরা বগুড়া টিএনটি অফিস, আওয়ামী লীগ, ছাত্র ইউনিয়ন ও জাসদ অফিস, টাউন ক্লাব, সদর উপজেলা ভূমি অফিস ও আওয়ামী লীগ নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয়, বগুড়া সদর আসনের এমপি রাগেবুল আহসান রিপুর বাসভবনে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়।
পুলিশের টিয়ার সেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথা এলাকা। এছাড়া বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করায় ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে পরে পুরো শহর।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার দিকে শহরের সাতমাথা এলাকায় আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী সাতমাথা চত্বরে অবস্থান নেন। এসময় আন্দোলন সমর্থকরা সাতমাথায় প্রবেশের চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সাতমাথা চত্বর আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এরপর তা আন্দোলনকারীরা দখলে নেন। এসময় আওয়ামী লীগ কর্মীরা ধাওয়া খেয়ে সাতমাথা ত্যাগ করেন। সাতমাথা চত্বর দখলে নেওয়ার পরপরই বিভিন্ন স্থাপনা এবং সড়কে থাকা মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সে সময় পুলিশ সার্কিট হাউস রোডে পুলিশ প্লাজার সামনে অবস্থান নিয়ে ছিল।
আন্দোলন সমর্থকরা সাতমাথায় অগ্নিসংযোগ শেষে পিডিবি রোড হয়ে শহীদ খোকন পার্কের ভেতরে এবং সার্কিট হাউস রোড হয়ে ফুল মার্কেটের সামনে গিয়ে পুলিশের ওপরে ককটেল নিক্ষেপ শুরু করে। এসয়ম পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়ে আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দেয়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সাতমাথা থেকে তাদের হটিয়ে দিয়ে বিভিন্ন সড়কের মুখে অবস্থান নেয়। থেমে থেমে আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ চলতে থাকে।
আন্দোনলকারীরা স্টেশন রোড, শেরপুর রোড, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক ও গোহাইল রোড থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ তাদের নিবৃত্ত করতে ফাঁকা গুলি অব্যাহত রাখে। বেলা পৌনে ২টার দিকে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরাও সাতমাথা চত্বরে অবস্থান নেন।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, তারা একজনকে মৃত অবস্থায় পেয়েছেন। অপর একজনের লাশ মর্গে আছে এমন তথ্য তিনি জানেন না।
এদিকে বেলা ১২টার দিকে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানা ও উপজেলা পরিষদে হামলা চালায় আন্দোলন সমর্থকরা। এসময় পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ বাধে। সেখানে গুলিবিদ্ধ একজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইএমও ডা. আওফী খান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিষয়: বগুড়া অসহযোগ আন্দোলন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: