রাজশাহীতে প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে চলছে কোচিং ও প্রাইভেট সেন্টার
রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারী ২০২২ ১২:২৩; আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫ ০৩:৫৫

জানুয়ারির শুরু থেকেই সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও হু হু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। মৃতের সংখ্যা কমছেনা মোটেও। এরকম পরিস্থিতিতে করোনার সংক্রমণ রোধে বাস-ট্রেনের যাত্রী সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে অর্ধেকে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে সপ্তাহ খানেক ধরে। এমন নানা বিধিনিষেধের মধ্যেও নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছে না প্রাইভেট ও কোচিং সেন্টারগুলোকে। খবর পদ্মাটাইমসের।
নানা বিধিনিষেধ থাকলেও সরকারি সিদ্ধান্তকে অমান্য করে নগরীর প্রাণকেন্দ্রের কোচিংগুলোতে স্বশরীরে ক্লাস চলছে প্রতিনিয়ত। ফলে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পুরো পরিবারে বিরাজ করছে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকি। বেশ কিছু কোচিং-প্রাইভেট সেন্টার প্রকাশ্যে চালানো হলেও অনেক কোচিং বা প্রাইভেট সেন্টারেরই ক্লাস কার্যক্রম চলছে দরজা বন্ধ করে।
নানা উপায়ে প্রশাসনের নজরদারি এড়িয়ে চলছে এসব কার্যক্রম। প্রশাসনের নীরবতার কারণে কোচিং মালিকদের এমন সিদ্ধান্তের বলে অভিযোগ করেন খোদ অভিভাবকরাই। তবে দ্রুতই এসব কার্যক্রম বন্ধে পদক্ষেপ নিবে বলে জানায় প্রশাসন।
শনিবার বিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, নগরীর নিউরণ নার্সিং কোচিং, নেফ্রণ নার্সিং কোচিং, রয়েল মেডিকেল কোচিং, আইরিশ নার্সিং কোচিং, নিকুঞ্জ কেমিস্ট্রি প্রাইভেট সেন্টার, মেডিভার কোচিং সেন্টার, উজ্জ্বল ম্যাথ কেয়ার, রনি ম্যাথ কেয়ার, আতিক কেমিস্ট্রি, এজি ফিজিক্স, ওয়াদুদ বায়োলজি, সোহান ইংলিশ, আইএসসি কেমিস্ট্রি, ফাহাদ বায়োলজি, বাসার ম্যাথ কেয়ার, বাংলা বিদ্যাপীঠ, অভিজিৎ ইংলিশ কেয়ার, জাহিদ ফিজিক্সসহ প্রায় বেশির ভাগ কোচিং সেন্টারই খোলা রয়েছে। অফিসগুলোর বাহিরে জটলা বেঁধে রয়েছেন অভিভাবক ও অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীরা। বাসা কিংবা ভাড়া নেওয়া রুমে ব্যাচ আকারে একসঙ্গে চলছে ২০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থীর ক্লাস-পরীক্ষা।
সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই রুমগুলোতে। এমনকি বেশ কিছু ক্লাসরুমে অনুপস্থিত হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিংবা মাস্ক পরিধানের বিষয়টিও। এক প্রকার গাদাগাদি করেই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। স্বাভাবিক ভর্তি, ক্লাস কিংবা পরীক্ষা কার্যক্রমে বোঝার উপার করোনা মহামারির ভয়াবহতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক-শিক্ষার্থী জানায়, সারাদেশের মতো রাজশাহীর করোনা পরিস্থিতিও ভয়াবহ। জনসমাগম এড়াতে যেখানে সরকার দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে, সেখানে এই নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোচিং সেন্টার চালু রাখা বেআইনী। তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব মেনে যদি হতো তবুও আশঙ্কা কম থাকতো।
স্বশরীরে শিক্ষা কার্যক্রমের বিষয়ে জানতে চাইলে নিউরণ কোচিং সেন্টার বলেন, বিধি নিষেধ থাকলেও আমরা আমাদের মতো চালাচ্ছি। সবকিছু বন্ধ হলেও কোচিং চালু আছে। নিয়মিত ক্লাস, ভর্তি, পরীক্ষা সবই চলছে।
নগরীর নেফ্রন কোচিং সেন্টারের সমন্বয়ক আহমদ উল্লাহ স্বশরীরে ক্লাস পরীক্ষার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে আমি রাজশাহীতে নেই। আলমাস নামের একজনের সাথে যোগাযোগের কথা বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
এদিকে সরেজমিনে স্বশরীরে ক্লাস কার্যক্রমের চিত্র দেখা গেলেও মোবাইলে পুরো বিষয়টিই অস্বীকার করেন নগরীর হেতেম খাঁ বিদ্যুৎ অফিস সংলগ্ন মেডিভার মেডিকেল ও ভার্সিটি কোচিংয়ের ব্যবস্থাপক তুষার খান। তিনি বলেন, স্বশরীরে কোনো ক্লাস চলছে না। আমাদের সকল শিক্ষা কার্যক্রম অনলাইনে চলছে।
এ ব্যাপারে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শরিফুল হক বলেন, কোচিং বা প্রাইভেট সেন্টার যেখানেই হোক স্বশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা চালু রাখার কোন উপায় নেই। আমাদের প্রতিনিয়তই অভিযান চলছে। এছাড়াও জনস্বার্থে এমন কোনো ঘটনা ঘটলে আমাদের তাৎক্ষণিক জানানো হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কিছু কিছু কোচিং সেন্টার গোপনে ক্লাস কার্যক্রম চালাচ্ছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, শীঘ্রই আমরা অভিযানে নামবো। আমাদের মোবাইল কোর্ট অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: