আয়া সোফিয়ায় ঐতিহাসিক ঈদের নামাজ আদায়

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১ আগস্ট ২০২০ ২০:২৭; আপডেট: ২ আগস্ট ২০২০ ২১:৪৪

আয়া সোফিয়ায় ঐতিহাসিক ঈদের নামাজ আদায়রত মুসল্লিরা

মুসলিম বিশ্বে এখন সবচেয়ে আলোচিত নাম ঐতিহাসিক আয়া সোফিয়া। কিছুদিন আগে ও যেটি ছিল একটি জাদুঘর এখন তা মসজিদ। তুরষ্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়েপ এরদোগানের শাসনামলে এটি তার অন্যতম একটি সফলতা।

আয়া সোফিয়া মসজিদ তুরস্কের অন্যতম স্থাপত্য নির্দশন। দীর্ঘ ৮৬ বছর পর আজ আদায় করা হয় পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ।

ঐতিহাসিক নামাজ আদায় শেষে প্রত্যেক মুসল্লিদের ঈদের উপহার হিসেবে দেয়া হয় রোপ্য নির্মিত স্মরক। খবর ডেইলি সাবাহ।

হাজার বছরের ইতিহাসে প্রারম্ভ থেকে এটি ছিল একটি গির্জা। পরবর্তীতে তা কেনা হয় মসজিদের ওয়াকপ হিসেবে। এরপর এটি পরিণত হয় একটি জাদুঘরে।


এরদোগান এটিকে মসজিদে রূপান্তরের পরেই ২৪ জুলাই আদায় করা হয় প্রথম জুমআর নামাজ। আর ১ আগস্ট (শনিবার) আদায় করা হয় প্রথম ঈদের নামাজ।

 

পেছনের ইতিহাস

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি জন্মলগ্ন থেকে কখনও অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের গির্জা, কখনও ক্যাথলিক গির্জা, কখনও মসজিদ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। দেড় হাজার বছর আগে ৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে বাইজান্টাইন সম্রাজ্যের অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের সর্ববৃহৎ গির্জা হিসেবে এটি নির্মাণ করা হয়। যা ১৪৫৩ সাল পর্যন্ত ৯১৬ বছর গির্জা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

১৪৫৩ সালের শুরুর দিকে সুলতান মোহাম্মাদ ফাতিহ ইস্তাম্বুল বিজয় করেন। তারপর আয়া সোফিয়ার এ স্থাপনাটি কিনে নেন এবং তা মসজিদ হিসেবে ওয়াকফ করে দেন। তারপর থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪৮১ বছর মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

১৯৩৫ সালে আধুনিক তুরস্কের জনক মোস্তফা কামাল (আতাতুর্ক) পাশা এ মসজিদকে বিলুপ্তি ঘোষণা করে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করেন।

তারপর থেকে বিভিন্ন সময় এটিকে মসজিদে রূপান্তরের দাবি উঠলেও তা বাস্তবায়নে কেউ এগিয়ে আসেনি। বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপে এরদোয়ান ক্ষমতায় আসার পর এ দাবি জোরালো হয়। তিনি এটিকে মসজিদে রূপান্তরের বিষয়ে জনগণের দাবির বিষয়টি আদালতের উপর ন্যস্ত করেন।

দীর্ঘ ৮৬ বছর পর গত ১০ জুলাই তুরস্কের সুপ্রিম কোট ১৯৩৪ সালের নভেম্বরে কামাল আতাতুর্কের জাদুঘর করার সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে আবার তা মসজিদে রূপান্তরের নির্দেশ দেয়। পরে ২৪ জুলাই জুমার নামাজের মধ্য দিয়ে ফের সেখানে নামাজ শুরু হয়।

গত ২৪ জুলাই জুমআর মাধ্যমে আয়া সোফিয়া নামাজ শুরু হলেও ৩১ জুলাই মোতাবেক দ্বিতীয় জুমআর দিন ৮৬ বছর পর ঐতিহাসিক এ স্থাপনা পড়া হলো পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ।

সব ধরণের স্বাস্থ্যবিধি তুরষ্কের হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের
অংশগ্রহণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রধান আলি ইরবাসের ইমামতিত্বে ঈদুল আযহান নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

সব ধরণের স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাজার হাজার মুসল্লির অংশগ্রহণে তুরস্কের ঈদুল আজহা তথা কুরবানির ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখযোগ্য, কুরবানির ঈদের এ দিনে আয়া সোফিয়া অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক নামাজির জন্য ফাতিহ জেলার কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে রূপার তৈরি স্মারক উপহার দেয়া হয়।

এসএইচ



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top