মালদ্বীপের কাছে হেরে ফাইনাল কঠিন করে ফেললো বাংলাদেশ

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৮ অক্টোবর ২০২১ ১৪:২৭; আপডেট: ৩ মে ২০২৪ ১৮:৫২

ছবি: সংগৃহিত

কাল কোন কিছু অনুকুলে ছিলো না বাংলাদেশের। স্বাগতিকদের কঠোরতায় মাঠে আসতে পারেননি প্রবাসীরা। মাঠেও জামাল তপুরা নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। আক্রমনভাগে মতিন ছিলেন একেবারে নিস্প্রভ। প্রথম ম্যাচে নেপালের কাছে হেরে তেতে থাকা মালদ্বীপ গতকাল শুরু থেকেই ছিলো আগ্রাসী। মালের রাশমি ধান্দু স্টেডিয়ামে দর্শকদের উন্মদনায় সময় যতো গড়িয়েছে সেই আগ্রাসী মনোভব আরো বেড়েছে স্বাগতিকদের। আর তাতেই উড়ে গেছে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে ১০জন নিয়ে ভারতকে রুখে দেয়া জামালরা এদিন স্বাগতিক মালদ্বীপের কাছে হারে ২-০ গোলে।

গোল দুটি করেন হামজা মোহাম্মদ ও আলী আশফাক। এ জয়ে টুর্নামেন্টে টিকে থাকলো মালদ্বীপ। তিন ম্যাচে চার পয়েন্ট পাওয়া বাংলাদেশেরও ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা আছে। এজন্য ভারতের কাছে নেপালের হার প্রত্যাশার পাশাপাশি শেষ ম্যাচে হারাতে হবে নেপালকে।
করোনা প্রটোকল অনুযায়ী প্রতিটি ম্যাচে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক টিকেট বিক্রির কথা আয়োজকদের। বাংলাদেশ মালদ্বীপ ম্যাচে মানা হয়নি করোনা প্রটোকল। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে জয়ের বিকল্প ছিলো না বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। এমন ম্যাচে দলকে উৎসাহ যোগাতেই পুরো গ্যালারী ভর্তি করে ফেলেন আয়োজকরা। স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শকের সামনে শুরু থেকেই দারুন ফুটবল খেলতে থাকে মালদ্বীপ। উল্টো আগের দুই ম্যাচে যে ফুটবল খেলেছে বাংলাদেশ তার ছিটে ফোটাও ছিলো না এই ম্যাচে। আক্রমনভাবে উঙ্গগার রাকিব হোসেনের শূন্যতা অনুভব হয়েছে প্রবলভাবে। মাঝমাঠেও এদিন নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেননি জামাল-সোহেলরা। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর বিশ মিনেট মালদ্বীপের তিন আক্রমন ভাগের ফুটবলার আলী আশফাক, আলী ফাসির ও হামজা মোহাম্মদকে রুখতে পারেনি বাংলাদেশ। এই সময়েই গোল গোল আদায় করেনেয় মালদ্বীপ। প্রথম গোলটি এসেছে কর্নার থেকে। ইব্রাহিম আসামের কর্নার দারুন বাইসাইকেল কিকে গোল করেন হামজা মোহাম্মদ। দ্বিতীয় গোলটি এসেছে পেনাল্টি থেকে। অযথা নাইস মোহাম্মদকে ফাউল করে বিদপ ডেকে আনেন সোহেল রানা। পেনাল্টি থেকে ব্যবধান বাড়ান আলী আসফাক। এরপর তিনটি পরিবর্তন করে আক্রমনের ধার বাড়ানোর চেষ্ঠা করেছেন ব্রুজন। রহমত মিয়ার যায়গায় জুয়েল রানা, বিপলুর যায়গায় সুমন রেজা এবং ইব্রাহিমের যায়গায় মাহবুবুর রহমান সুফিল মাঠে নামেন। তাতেও কাজ হয়নি। হারতে হয়েছে ২-০ ব্যবধানে।
এদিন ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই কাউন্টার এট্যাকে বিপলুর শট আশ্রয়নেন মালদ্বীপের গোলরক্ষকের হাতে। ম্যাচের চার মিনিটে আলী ফাসিরকে ফেলে দেন সাদউদ্দিন। ডাকদিকে ফ্রিকিক পাায় মালদ্বীপ। যদিও ফাসিরের নেয়া ফ্রিকিক আস্থার সঙ্গে রুখেদেন জিকু। শুরুর দশ মিনিটে বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকে স্বাগতিকরা। তবে আস্তে আস্তে নিজেদের খোলস থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্ঠা করে বাংলাদেশ। মাঝমাঠে সোহেল রানা-জামাল নিয়ন্ত্রণ নিলে খেলায় ফিরে ব্রুজনের শিষ্যরা। ম্যাচের ২১ মিনিটে প্রথম কর্নার পায় বাংলাদেশ। জামালের সে কর্নারে মাথা ছোয়াতে পারেননি তপু-ইয়াছিনরা। ২৭ মিনিটে অযথা ফাইল করে বিপদ ডেকে আনেন ইয়াছিন। বক্সের বাইরে আলী ফাসিরকে ফেলে দিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন এই ডিফেন্ডার। ম্যাচের ৩০তম মিনিটে কাউন্টার এট্যাকে বল নিয়ে ঢুকে পরেন মতিন মিয়া। কিন্তু সাহায্যে কেউ না থাকায় সে সুযোগ কাজে আসেনি। প্রথমার্ধের বাকী পনের মিনিটি আধিপত্য বিস্তার করে খেলে মালদ্বীপ। আলী ফাসির, আলী আশফাক ও হামজা মোহাম্মদের সমন্ময়ে সেসব আক্রমন প্রতিহত হয়েছে বাংলাদেশের রক্ষণে। এই সময়ে দুটি ফ্রিকিক আদায় করে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। যার মধ্যে আলী আশফাকের ফ্রিকিক কর্নারে রক্ষা করেন আনিসুর রহমনা জিকু। ম্যাচের ৫৩ মিনিটে আলী ফাসিরের শট ডানদিকে ঝাপিয়ে পড়ে রক্ষা করেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক। পরের মিনিটেই গোল হজম করে বাংলাদেশ। কর্নারে বাইসাইকেল কিকে গোল করেন হামজা মোহাম্মদ (১-০)। স্বাগতিক দর্শকদের উল্লাসে ফেটে পরে মালের রাশমি ধান্দু স্টেডিয়াম। এই উল্লাস থামতে না থামতে দ্বিতয়ি গোল পায় স্বাগতিকরা। বক্সে নাইস মোহাম্মদকে ফেলেদেন সোহেল রানা। এতে পেনাল্টি পায় মালদ্বীপ। তা থেকে বাংলাদেশের কফিনে শেষ পেরেকটি ঢুকেদেন আলী আশফাক।
এ জয়ে দুই ম্যাচে মালদ্বীপের সংগ্রহ তিন পয়েন্ট। টানা দুই জয়ে ছয় পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে নেপাল। তিন ম্যাচে বাংলাদেশের সংগ্রহ চার ও দুই ম্যাচে ভারতের সংগ্রহ দুই পয়েন্ট। তিন ম্যাচ ১ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে আছে শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশের একাদশ: আনিসুর রহমান জিকো (গোলরক্ষক), তপু বর্মণ, তারিক কাজী, ইয়াসিন আরাফাত, রহমত মিয়া (জুয়েল রানা) , জামাল ভূঁইয়া (অধিনায়ক), ইব্রাহীম (সুফিল), বিপলু (সুমন রেজা), সাদ উদ্দিন, সোহেল রানা ও মতিন মিয়া।




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top