বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালিত

বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালিত

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০২২ ০৭:২৫; আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২২ ০৭:২৭

ছবি-সংগ্রহীত

বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে এক কর্মশালার মাধমে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আয়োজনে সোমবার (১০ অক্টোবর) দিবসটি পালন করা হয়।

আয়োজিত কর্মশালায় বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপ-উপাচার্য প্রফেসর আশিক মোসাদ্দিকের সভাপতিত্বে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাসিরুল্লাহ সাইকোথেরাপি ইউনিটের মেন্টাল হেলথ প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সাইমা কমর।

সকাল ১১ টার দিকে উপ-উপাচার্য প্রফেসর আশিক মোসাদ্দিক-এর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কর্মশালাটি শুরু হয়। এসময় প্রফেসর আশিক মোসাদ্দিক বলেন, ‘পৃথিবীর সব মানুষের কাছে মনের অসুখ নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর দিন আজ। ১৯৯২ সালে প্রথমবার এই দিনটি পালন করা হয়। সেই থেকে প্রতি বছরই এই ১০ অক্টোবর দিনটিকে মানসিক স্বাস্থ্য দিবস হিসেবে পালন করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে। মেকিং মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ওয়েল-বিয়িং ফর অল অ্যা গ্লোবাল প্রায়োরিটি। অর্থাৎ সবার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতাকে বিশ্বব্যাপী অগ্রাধিকার দিন।’

মূল বক্তা সাইমা কমর বলেন, ‘বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস হলো পৃথিবীর সবার মানসিক স্বাস্থ্যশিক্ষা, সচেতনতার দিন। কিছু দেশে একে মানসিক রোগ সচেতনতা সপ্তাহের অংশ হিসেবে পালন করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে কেউ না কেউ আত্মহত্যায় প্রাণ হারান। আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুর অধিকাংশই প্রতিরোধযোগ্য। অধিকাংশ ব্যক্তিই আত্মহত্যার সময় কোনো না কোনো মানসিক রোগে আক্রান্ত থাকেন। শরীর এবং মন এ দুই নিয়ে হচ্ছে মানুষ। শরীরবিহীন যেমন মানুষের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না, তেমনি মনবিহীন মানুষও অসম্ভব। সুস্থ-সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে গেলে সুস্থ শরীর এবং সুস্থ মন সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। দেশে ৩ কোটি মানুষ মানসিক সমস্যায় ভুগছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে মানসিক সমসায় ভুক্তভুগির সংখ্যাই বাংলাদেশ শীর্ষে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোভিড মহামারির কারণে বর্তমানে মানসিক রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এখন অনেক বেশি। কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত ব্যক্তি, যাঁরা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং আক্রান্ত ব্যক্তি ছাড়াও পরিবারের সদস্য ও সমাজের নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।’

সাইমা কমর বলেন, ‘মানসিক সমস্যা ও মানসিক অসুস্থতা দুটো আলাদা বিষয়। বড় ধরনের মানসিক অসুস্থতা ৪০ বছরের বয়সের আগেই শুরু হয়। আর হতাশাজনিত অসুস্থতা বাড়ে বয়স বাড়লে। কোভিডে সমাজের বড় একটি অংশ অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এটা মানসিক স্বাস্থ্য এর উপর বড় প্রভাব ফেলেছে।

লোকলজ্জার ভয় ঝেরে ফেলে প্রত্যেককে তাঁর নিজের মানসিক অবস্থা যাচাই করা প্রয়োজন। কেউ যদি অনুভব করেন যে তাঁর মানুষের সঙ্গে চলাফেরা করতে সমস্যা হচ্ছে। তাহলে অবশ্যই তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। এ ক্ষেত্রে প্রিয় মানুষদের সাথে কথা বলা দরকার। আরও কিছু উপায় আছে, যেগুলো পালন করলে ভাল প্রশান্তি পাওয়া যায়।

মেডিটেশন, ধ্যানের অভ্যাস মনকে শান্ত করা এবং একাগ্রতা বাড়ানোর অন্যতম সেরা উপায়। ধ্যান মানসিক চাপ কমায় এবং শারীরিকভাবেও সুস্থ রাখে। এটি রক্তচাপ কমাতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতেও সাহায্য করতে পারে। রাতে শান্তিতে ঘুমান, ঘুম এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য একে অপরের সাথে সরাসরি সংযুক্ত। তাই রাতে শান্তিতে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। সময়মতো ঘুমাতে যান এবং সময়মতো ঘুম থেকে উঠুন। এমনকি সপ্তাহান্তেও এই রুটিন মেনে চলার চেষ্টা করুন।’

তিনি কর্মশালার শেষে উপস্থিত সকলকে ব্রিদিং এক্সারসাইজ করান।




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top