খাবারের মান বাড়ানোর দাবিতে রাবির জিয়া হলে বিক্ষোভ

রাবি প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৫৪; আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:২৭

হল গেটে তালা লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ প্রদর্শন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ডাইনিং ডালের পাত্রে কটনবাড পাওয়ার অভিযোগ তুলে হল গেইটে তালা লাগিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীর আড়ালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি জানায় তারা।

বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের খাবার গ্রহনকালে ডালের পাত্রে কটনবাড পাওয়ার অভিযোগ তুলে পাত্র ছুড়ে ফেলেন পূর্বে থেকেই সাজানো একদল ছাত্রলীগকর্মী।

এরপর থেকে হল গেইটে এসে ঝরো হতে থাকে ক্ষুদ্ধ ছাত্রলীগকর্মীরা। এতে কিছু সংখ্যক সাধারণ শিক্ষার্থীও যোগদেন।
এক পর্যায়ে হল গেইটে তালা ঝুলিয়ে স্লোগান দিতে থাকে তারা, 'প্রভোস্টের অনিয়ম মানি না মানবো না', 'প্রভোস্টের দুইগালে জুতা মারো তালে তালে', 'যেই প্রভোস্ট হলে থাকে না সেই প্রভোস্ট চাইনা' 'খাবারে ময়লা কেন? প্রশাসন জবাব চাই'।

আবাসিক শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলে তারা জাগো নিউজকে বলেন, 'হলের খাবারের মান আগের থেকে অনেক খারাপ হয়েছে তা ঠিক কিন্ত ডালের পাত্রে কটনবাড পাওয়া যাবে এমনটিও মানতে নারাজ তারা। হলের খাবারে মশা মাছি পাওয়া যায় কিন্তু কটনবাড তা অবিশ্বাসযোগ্য । আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে খাওয়ার সময় একটি ডালের পাত্রে কটনবাট পাওয়া গেছে শুনেছি কিন্তু আমরা স্বচক্ষে দেখিনি যার ফলে আমরা অনেকেই তা বিশ্বাস করতে পারছি না।

এ জানতে বিষয়ে চাইলে ডাইনিং কর্মচারীরা বলেন, প্রায়ই শিক্ষার্থীরা বাটিতে করে খাবার নেন, টাকা চাইলে বড় ভাইয়ের নাম বলে চলে যান। আজ দুপুরে কয়েক জন শিক্ষার্থী খেতে এলে টাকা চাওয়ায় উত্তেজিত হয়ে কটনবাড পাওয়ার অভিযোগ করে ডালের পাত্র ফেলে দেন।

এসময় ছাত্রলীগকর্মীরা ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ডালের পাত্রে পাওয়া কটনবাডের কথা না বলে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে সিট না দিয়ে ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীরা সিট বরাদ্দ পাচ্ছে ,খাবারের মান উন্নয়ন, হলের ওয়াইফাই সমস্যা, ভাইভা না দিয়েও হলে সিট বরাদ্দ পাওয়া , বারবার আশ্বস্ত করেও সমাধান না করা এমন সব অভিযোগ। প্রায় তিন ঘন্টা ধরে হল গেইটে তালা ঝুলিয়ে স্লোগান দিতে থাকে স্বার্থ হাসিল কারী শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রাধ্যক্ষ ড. সুজন সেনের পদত্যাগের দাবিও তুলেন তারা।

শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, অবৈধ শিক্ষার্থীদের ছাঁটাই করে বৈধ শিক্ষার্থীদের হলে তুলে দিচ্ছেন জিয়া হল প্রাধ্যক্ষ ড. সুজন সেন। এদিকে যাদেরকে হল থেকে ছাটাই করা হয়েছে তারা অধিকাংশই ছাত্রলীগের মাধ্যমে অবৈধভাবে হলের সিটে থাকতেন। প্রাধ্যক্ষ সুজন সেনকে অপসারণ করতে পারলে ছাত্রলীগের অবৈধ কর্মীরা আবারও জিয়া হলে অবৈধভাবে থাকতে পারবেন। ডালের পাত্রে কটনবাড পাওয়া ছাত্রলীগের সাজানো নাটক বলে মন্তব্য করছেন অনেকেই।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসাবুল হক, ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর, অত্র হলের প্রাধ্যক্ষ সুজন সেন ও হলের আবাসিক শিক্ষকরা, হল কাউন্সিলের আহবায়ক, সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ, ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ঘটনাস্থলে এসে আলোচনা বসেন। এদিকে পরিবেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি আবারো বসবেন বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন তারা।

আলোচনা শেষে জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ সুজন সেন বলেন, হলের শিক্ষার্থীরা বেশকিছু অভিযোগ করেছে। এগুলো সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগামী রোববার আমাদের সঙ্গে বসতে চেয়েছেন। সেদিন বসে এই অভিযোগগুলোর সমাধান করা হবে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওয়াইফাই সমস্যা, হলের সিট নিয়ে সমস্যা, ডাইনিংয়ে খাবারের মান নিয়ে সমস্যাসহ বেশ কিছু অভিযোগ জানিয়েছেন। আমরা হল কর্তৃপক্ষকে নিয়ে আগামী রোববার বসে এই সমস্যাগুলো সমাধানে বসবো।।





বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top