দু’ব্যাংকে নেই প্রকাশনা ফি প্রদানের ব্যবস্থা

গবেষণা প্রকাশে রাবি শিক্ষকদের ভোগান্তি চরমে

নুর আলম নেহাল | প্রকাশিত: ৮ এপ্রিল ২০২২ ০৩:১৪; আপডেট: ৮ এপ্রিল ২০২২ ০৩:১৫

ফাইল ছবি

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ৩৮ হাজার শিক্ষার্থী ও ১৩শ শিক্ষকের ব্যাংকিং সেবা প্রদানের জন্য ক্যাম্পাসে বর্তমানে অগ্রণী ও সোনালি ব্যাংকের একটি করে শাখা রয়েছে। তবে এই দুই ব্যাংকের একটিতেও নেই অনলাইনে প্রকাশনা ফি জমা দেয়ার কোনো আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ব্যবস্থা। যার ফলে এই ফি জমা দিতে চরম ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে গবেষণায় নিয়োজিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গবেষণার কাজে নিয়োজিত শিক্ষকগণ তাদের গবেষণার ফলাফল আর্ন্তজাতিকভাবে স্বীকৃত জার্নালে প্রকাশ করেন। এসব জার্নালে গবেষণার ফলাফল প্রকাশের জন্য প্রদান করতে হয় প্রকাশনা ফি , যা অনলাইন ব্যবস্থাপনায় সম্পাদিত হয়। অনলাইনে প্রকাশনা ফি প্রদানের এই সেবাটি নেই বিশ্ববিদ্যালয় দুটি ব্যাংকের একটিতেও। সমসাময়িক উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক পেমেন্টের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থাটি না থাকার ফলে ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক।

ফি প্রদানের জটিলতার কথা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, এই ব্যবস্থাটা না থাকার ফলে গবেষকদের অনেক ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে। যেটা একজন গবেষকের জন্য বিব্রতকর। তবে আমি মনে করি, প্রকাশনার এই ফি প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিজস্ব একটা ব্যবস্থা থাকা উচিৎ। যার মাধ্যমে প্রশাসনই এই ফি প্রদান করবে। একজন গবেষককে এর সাথে জড়িয়ে তার মূল্যবান সময় নষ্ট করা কোনভাবে উচিৎ নয় বলে মনে করেন এই গবেষক।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কুদরত-ই-জাহান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি ব্যাংকের একটিতেও এই ব্যবস্থা না থাকার ফলে আমাদের অন্য কোনো মাধ্যম হয়ে ফি প্রদান করতে হয়। ফলে একজন গবেষকের যেমন সময় নষ্ট হয় তেমনই পরতে হয় বিভিন্ন ধরনের জটিলতায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ দুটি ব্যাংকের প্রধান শাখায় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে এই ব্যবস্থা চালু করার জন্য আবেদন করেছি কিন্তু এখনো তেমন কোনো আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি। সমসাময়িক উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক পেমেন্টের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থাটি থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম আরো বেশি ত্বরান্বিত হবে বলে জানান তিনি।

ব্যবস্থাটি না থাকার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সোনালী ব্যাংক শাখার প্রধান মো.নাসির হায়দার বলেন, বিষয়টি বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের সাথে জড়িত হওয়ায় এই ব্যবস্থাটি চালু করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। ব্যাংকের কোনো শাখা চাইলেই এটি চালু করতে পারে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পক্ষ থেকে আমরা আমাদের প্রধান শাখাকে অবগত করেছি এবং তারা ইতোমধ্যেই কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বিষয়টি লিখিত আকারে অবগত করেছেন। আশা করি, খুব শীঘ্রই এই ব্যবস্থা চালু করতে পারবো।

জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো: বজলুর রশীদ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবত এ ব্যবস্থাটি চালু করার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু নানান জটিলতার কারণে আমরা তা চালু করতে পারি নি। তবে বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন আছে। আশা করছি যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থাটি চালু করা হবে।

অনলাইন প্রকাশনা ফি জমাদানের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, সাহেব বাজারে সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংক শাখার মাধ্যমে ফি জমাদানের ব্যবস্থা চালু আছে। তবে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দুটি ব্যাংক আছে সেগুলোতে এ ব্যবস্থা চালুকরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে জানান তিনি।

 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top