যে ৫টি কারণে বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন বিদেশীরা

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারী ২০২৪ ১৩:২৮; আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:১৩

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতির আকার এক হাজার বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি, যার গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ আসে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ বা এফডিআই থেকে। কিন্তু এফডিআই বাড়াতে সরকারের নানা পদক্ষেপের পরও দিনে দিনে কমছে নতুন বিদেশী বিনিয়োগ।

দুই বছর আগেও এই বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ায় তা বেশ ভালো প্রভাব রেখেছিল অর্থনীতিতে। কিন্তু হঠাৎ করে তা কেন কমছে, এ নিয়ে নানা ধরণের বিশ্লেষণ পাওয়া যাচ্ছে অর্থনীতিবিদ ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো থেকে।

গত ১০ বছরে বিদেশী বিনিয়োগের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে, বিবিসি বাংলা এ নিয়ে কথা বলেছে বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা, অর্থনীতিবিদ ও সরকারের সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সাথে।

অর্থনীতিবিদরা এই বৈদেশিক বিনিয়োগ কমার কারণ হিসেবে ডলার সঙ্কট, অর্থ পাচার ও দুর্নীতি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, অর্থনীতির অস্থিতিশীলতা, সেবা প্রাপ্তিতে ভোগান্তি ও জ্বালানি সঙ্কটের মতো বিষয়গুলোকে মূল কারণ হিসেবে মনে করছেন।

অর্থনৈতিক খাতে বড় ধরণের সংস্কার ছাড়া এ অবস্থার উন্নতিও দেখছেন না অর্থনীতিবিদরা।

তবে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ও বর্তমান দু’জন মন্ত্রী বিবিসিকে বলেছেন, নির্বাচন কেন্দ্রিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণেই বৈদেশিক বিনিয়োগ কিছুটা কমেছে।

বিদেশী বিনিয়োগের যে চিত্র দেখা যাচ্ছে

বিনিয়োগকারী বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর বাংলাদেশে নিয়ে আসা অর্থ সংক্রান্ত জরিপ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বশেষ এই জরিপের রিপোর্ট প্রকাশ হয় গত ডিসেম্বরের শুরুতে।

রিপোর্টে দেখা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে নিট এফডিআই প্রবাহ ছিল ৩২৪ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার। অথচ আগের বছর অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থ বছরে এই পরিমাণ ছিল ৩৪৩ কোটি ৯৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার। হিসাব বলছে, বছর ব্যবধানে নিট এফডিআই প্রবাহ কমেছে ৫.৫২ শতাংশ।

নিট প্রবাহের এই চিত্রের বিপরীতে বিদেশী নতুন বিনিয়োগকারীরা এই অর্থ বছরে নতুন মূলধন এনেছে অনেক কম। ২০২১-২২ অর্থ বছরে নতুন মূলধন বিনিয়োগের পরিমাণ ১৩৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা হলেও গত অর্থ বছরে তা কমে দাঁড়ায় ৭৯ কোটি ৫৯ লাখ ডলারে। এ হিসেবে নতুন বিদেশী মূলধনি বিনিয়োগ কমেছে ৪০ দশমিক ৯১ শতাংশ।

বিশ্ব অর্থনীতি ও বাণিজ্যের গবেষণা প্রতিষ্ঠান আঙ্কটাডের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪ সালে এফডিআইয়ের প্রবাহ ছিল ২৫৬ কোটি ডলার, ২০১৫ সালে ২২৩ কোটি, ২০১৬ সালে ২৩৩ কোটি, ২০১৭ সালে ২১৫ কোটি, ২০১৮ সালে ৩৬১ কোটি, ২০১৯ সালে ২৮৭ কোটি, ২০২০ সালে ২৫৬ কোটি, ২০২১ সালে ২৮৯ কোটি। আবার ২০২২ সালে রেকর্ড ৩৪৮ কোটি ডলার আসলেও ২০২৩-এ এসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩২৪ কোটি ৯৬ লাখ ডলারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো: মেজবাউল হক বলেন, ‘গ্লোবাল ইন্টারেস্ট রেট অনেক বেড়ে গেছে বিভিন্ন দেশে। ফলে ক্যাপিটালের যে ফ্লো থাকে তা স্বাভাবিকভাবে যে সমস্ত দেশে ইন্টারেস্ট রেট বেশি, সে সমস্ত দেশে ফ্লো করে।’

‘আমার এখানে কেউ বিনিয়োগ করতে হলে তাকে দু’টি ফ্যাক্টর কনসিডার করতে হয়। তার একটা হলো এক্সচেঞ্জ রেট রিস্ক, আরেকটা হলো ইনভেস্টমেন্ট রিস্ক।’

মেজবাউল হক বলেন, ‘যে কারণে ক্যাপিটালগুলো উন্নত দেশের যেখানে এক্সচেঞ্জ রেটের কোনো রিস্ক নেই সেখানে এই মুদ্রাগুলো চলে যায়।’

বিদেশী বিনিয়োগ কেন কমছে, তা জানতে বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে বিবিসি যে প্রধান পাঁচটি কারণ খুঁজে পেয়েছে তা একে একে তুলে ধরা হল।

ডলার সঙ্কট ও মূল্যবৃদ্ধি

গত দুই বছরের টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের মূল্য বেড়েছে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ডলারের দাম ছিল ৮৬ টাকা। বর্তমানে সরকারি হিসাবে মূল্য ১১০-১১১ টাকা, কোথাও কোথাও তা নেয়া হচ্ছে আরো অনেক বেশি।

সাম্প্রতিক সময়ে ডলার সঙ্কটের কারণে এদেশে বিনিয়োগকারী অনেক বিদেশী কোম্পানি নিজ দেশে মুনাফা নিতে পারেনি।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈদেশিক বিনিয়োগ কমার অন্যতম কারণ আন্তর্জাতিক মুদ্রা ডলারের সঙ্কট ও মূল্য ওঠানামা করা। বিনিয়োগকারীরা সবার আগে রিটার্ন নিয়ে চিন্তা করেন। যখন তারা পদ্ধতিগত সমস্যা দেখতে পান তখন তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হন না।

বিশ্ব ব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ডলারের সঙ্কটের কারণে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টাকাও আটকে গিয়েছিল। ব্যাংকগুলো বলেছে, তাদের কাছে ডলার নাই। এই বিষয়গুলো বিভিন্ন দেশ দেখে নতুন করে হয়তো আর বিনিয়োগে আগ্রহী হয়নি।’

দেশে ডলারের এই সঙ্কট কাটাতে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে রিজার্ভ থেকে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন বিক্রি হয়েছে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি-র সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, ‘বৈদেশিক বিনিয়োগ বেশি এলে ফাইনান্সিয়াল একাউন্টটাও আমাদের বেটার হয়। যেটা আমাদের ১৫-১৬ বিলিয়ন ডলার পজেটিভ ছিলো সেটা আমাদের নেগেটিভ হয়ে গেছে।’

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বলেন, ‘হয়তো আমরা কমফোর্ট জোনে নাই। তবে, আমাদের ডলার সঙ্কট নাই।’

অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, নতুন মুদ্রানীতির মাধ্যমে সুদের হার বাড়িয়ে ডলার সঙ্কট কাটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। শুধু এটা দিয়ে ডলার সঙ্কট কাটানো যাবে না। বাজারভিত্তিক মুদ্রা হারের ব্যবস্থাপনা না করতে পারলে ডলারের যোগান বাড়ানো কঠিন হবে।’

অর্থ পাচার ও দুর্নীতি

ওয়াশিনটনভিত্তিক সংস্থা জিএফআইয়ের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে পাচার হয় ৭৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। টাকার অঙ্কে তা প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা।

অর্থনীতিবিদদের মতে, দেশ থেকে অর্থ পাচার হলে বাণিজ্য গতিশীলতা কমে।

ঘাটতি কমাতে কখনো কখনো বাড়তি কর আদায় করতে হয়। অর্থ সঙ্কটের কারণে সামগ্রিক অর্থনীতির আয়-ব্যয়ের এক ধরনের ভারসাম্য নষ্ট হয়।

সিপিডি-র সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘অনেক বিদেশী বিনিয়োগকারীদের দেখা যাচ্ছে তাদের টাকা পাঠাতে দেরি হচ্ছে। কারণ পাচার-সহ নানা কারণে ফরেন কারেন্সির রিজার্ভটা কমে যাচ্ছে। এটা এক ধরণের রং সিগন্যাল দিচ্ছে।’

বিশ্ব ব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাবে আর্থিক খাত নিয়ে একটা দুশ্চিন্তা বরাবরই ছিল। এটা আরো বেড়েছে।’

রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা

গত বছরের শেষে বিদেশী বিনিয়োগ কমার মূল কারণ হিসেবে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে চিহ্নিত করছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, গত বছরের শেষ দিকে বিএনপি জোটের টানা আন্দোলন কর্মসূচি, সঙ্ঘাত-সংঘর্ষের প্রভাব বিদেশী বিনিয়োগে পড়েছে।

অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘গত বছর রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা একটা বড় বিষয় ছিলো। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের অনেকে একটা দোটানায় ছিল ইলেকশন হবে কি হবে না। এ কারণে নতুন করে অনেকেই বিনিয়োগে আগ্রহী হননি।’

সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে এক ধরণের অনিশ্চয়তায় অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কিছুটা টানাপোড়েন ছিল। একটি রাজনৈতিক দল অর্থনৈতিক পরিবেশ নষ্ট করার জন্য ভীষণভাবে চেষ্টা করেছে। এ কারণে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মাঝে এক ধরনের নেতিবাচক বার্তা গেছে।’

বর্তমান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের আগে বৈদেশিক বিনিয়োগ কমার বিষয়টা খুবই নরমাল। নির্বাচনের আগে বিদেশী বিনিয়োগ

একটু স্লো ডাউন হয়। নির্বাচনের পর এখন বিদেশি রাষ্ট্রগুলো আমাদের ওপর আবার আস্থা রাখছে।’

অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা

২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল দেশের অর্থনীতি। কিন্তু গত দুই বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নানা সঙ্কট দেখা যাচ্ছে।

অর্থনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকের সুদের হার বৃদ্ধি-সহ নানা কারণে বিনিয়োগকারীদের মাঝে নেতিকবাচক প্রভাব পড়ছে।

বিশ্ব ব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আর্থিক খাত নিয়ে একটা দুশ্চিন্তা বরাবরই ছিল, সম্প্রতি এটা আরো বেড়েছে।’

‘বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শুনেছে যে বাংলাদেশে পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড তার বিল পরিশোধ করতে পারছে না। ডলারে যে বিলগুলো দেয়ার কথা সেটা পড়ে আছে।’

‘ব্যাংকাররা অনেক সময় এলসি খুলে সময় মতো এলসি সেটল করতে পারেন নাই। আন্তর্জাতিক বাজারে সে খবরও পৌঁছেছে। এসব কারণে ধারণা তৈরি হয়েছে যে, তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে লাভ হলেও সে টাকা তুলে আনতে পারবে না। এমন পরিস্থিতির কারণে তারা স্থিতিশীলতার অপেক্ষা করছে,’ বিবিসি বাংলাকে বলেন জাহিদ হোসেন।

সিপিডি-র সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, ‘সামষ্টিক অর্থনীতিই যতক্ষণ পর্যন্ত না স্থিতিশীল হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি কমে না আসছে, ততক্ষণ পর্যন্ত বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরা একটু অপেক্ষা করবে বলেই মনে হচ্ছে।’

সেবার মান ও জ্বালানি সঙ্কট

বাংলাদেশে যে সব খাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ আসছে তার মধ্যে অন্যতম হলো টেক্সটাইল, চামড়াজাত সামগ্রী, পাট, কৃষিভিত্তিক শিল্প ইত্যাদি। বিদেশীদের বিনিয়োগে আগ্রহী করতে বেশ কিছু বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু এ সব জায়গায় বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ তৈরি করা যাচ্ছে না বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির পর নিষ্কণ্টক জমি নিয়ে যে বাধা ছিল সেটা কাটানো গেছে। কিন্তু ওয়ান স্টপ সার্ভিস, মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবারহ সেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এ কারণে প্রত্যাশিত বিনিয়োগ পাওয়া যাচ্ছে না।’

এসব খাতে বিদেশী বিনিয়োগ কমে যাওয়ার পেছনে আমলাতান্ত্রিক জটিলতাও কাজ করছে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, অর্থনীতির দিক থেকে ভারত, ভিয়েতনাম, চীন কিংবা বাংলাদেশের সমতুল্য দেশগুলোতে যে পরিমাণ এফডিআই আসে সে তুলনায় বাংলাদেশে এফডিআই খুবই নগণ্য।

ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘সরকার যদিও অনেক কাজ করার কথা বলেছে। জমির ঝামেলা মেটানো, গ্যাস বিদ্যুৎ পানি এইসব আমরা দিয়ে দিব এক জায়গায়- এ ধরনের অনেক কথাবার্তা হয়েছে। তবে বাস্তবে অনেক সুযোগই নিশ্চিত করা যায়নি।’

‘যে সব বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি, সে সব অঞ্চলে যদি বিনিয়োগের পুরোপুরি পরিবেশ নিশ্চিত করা যেত তাহলে হয়তো বিদেশী বিনিয়োগে কিছুটা পরিবর্তন আনা সম্ভব হত। কিন্তু সেটি হয়নি’, বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

তবে, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘আইসিটি, বস্ত্র-সহ বেশ কিছু খাতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সুযোগ আছে। আমাদের দেশের এফডিআইয়ের সুযোগ সুবিধার দিক থেকে শতভাগ রয়েছে। আমাদের দেশে এসব ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ রয়েছে।’

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে তাকালে দেখা যায় যে সে সব দেশে বিদেশী বিনিয়োগ বেশ বড় ধরনের প্রভাব রাখছে। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম এর উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।

বাংলাদেশে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ক্ষমতাসীন সরকারের পক্ষ থেকে সব সময়ে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। কিন্তু সে সব উদ্যোগ খুব একটা কাজে আসছে না।

এ জন্য বিশ্লেষকরা অর্থনৈতিক খাতে বড়সড় ধরনের সংস্কারের প্রস্তাব দিয়ে বলছেন, সঙ্কট কাটাতে এর কোনো বিকল্প নেই।

ড. জাহিদ হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘বিদেশী বিনিয়োগের মূল আকর্ষণ হলো তারা যখন এখানে আসেন শুধু টাকা আনেন না, প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনা নিয়েও আসেন। এর ফলে দেশের শ্রমিকরা ভালো আয়ের কর্মসংস্থানের সুযোগ খুঁজে পায়। আর বিনিয়োগ না আসা মানে, ওই উপকারগুলো থেকে বঞ্চিত হবে তারা।’

সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘সম্পূর্ণ বড় বিনিয়োগকারী যারা আছে তারা তাদের বাছবিচার করে নানা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। তবে এটা নিয়ে আমরা ভীত সন্ত্রস্ত নই। যেহেতু নির্বাচন হয়ে গেছে সে কারণে এ নিয়ে বিশ্লেষকরা নানা ধরণের বিশ্লেষণ করবেন।’

‘বাস্তবতা হলো, নির্বাচনের পর সরকার গঠন হয়েছে। এখন বিনিয়োগকারীরা যে সকল বিষয় নিয়ে চিন্তিত ছিল তা অনেকটা দূর হয়ে যাবে’, বিবিসিকে বলেন তিনি।

সূত্র : বিবিসি



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top