ধর্ষণের শাস্তি কোন দেশে কেমন
রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৯ মার্চ ২০২৫ ২০:০৮; আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৫ ০০:১৭

ধর্ষণ কঠিন শাস্তিযোগ্য অপরাধ হলেও বাংলাদেশে প্রতিনয়ত এ অপরাধ বেড়ে চলেছে। জনমনে প্রশ্ন উঠছে, কেন বাড়ছে ধর্ষণের মতো পৈশাচিক অপরাধের ঘটনা? এক্ষেত্রে দেশের আইনে কি শাস্তি কম? আর পৃথিবীর অন্যান্য দেশে ধর্ষণের শাস্তি কেমন? এখানে আমরা জেনে নেব- পৃথিবীর কোন দেশে ধর্ষণের শাস্তি কেমন।
বাংলাদেশ
বাংলাদেশে বিদ্যমান আইনে ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। ২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর এ আইন পাস করা হয়।
সৌদি আরব
সৌদি আরবের শরিয়া আইনে ধর্ষণ একটি ফৌজদারি অপরাধ এবং এর শাস্তি হিসেবে দোররা মারা থেকে শুরু করে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।
সংযুক্ত আরব-আমিরাত
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তবে দেশটির আইনে অপরাধ সংঘটনের সময় ভুক্তভোগীর বয়স ১৪ বছরের নিচে হলেই কেবল সেটিকে জোরপূর্বক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ইরান
ইরানে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি জনসমক্ষে ফাঁসি কিংবা গুলি করে হত্যা। তবে কখনো কখনো অভিযুক্ত এই সর্বোচ্চ শাস্তির হাত থেকে রক্ষা পেয়ে যেতে পারে, যদি সে ধর্ষিতার কাছ থেকে ক্ষমা নিয়ে আসতে পারে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ইরানে মোট ২৫০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, যার মধ্যে ১২ জনকে শাস্তি দেয়া হয়েছে ধর্ষণের দায়ে।
যুক্তরাষ্ট্র
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন শাস্তির বিধান রয়েছে।
চীন
চীনে কোনো নারীকে ধর্ষণ কিংবা ১৪ বছরের কম বয়সী কোনো মেয়ের সঙ্গে যৌনমিলনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে যদি ভুক্তভোগী মারা যান অথবা মারাত্মকভাবে আহত হন। তবে সাধারণ ক্ষেত্রে তিন বছর থেকে ১০ বছর কারাদণ্ডের শাস্তি রয়েছে।
ভারত
২০১৮ সালে পাস হওয়া এক নির্বাহী আদেশে ভারতে ১২ বছরের কম বয়সী মেয়ে শিশু ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা হয়। এছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে ধর্ষণ প্রমাণিত হলে ন্যূনতম ১০ বছর শাস্তির বিধান রয়েছে।
পাকিস্তান
পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা দশ থেকে পঁচিশ বছরের কারাদণ্ড। গণধর্ষণের ক্ষেত্রে শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
মিশর
মিশরে ধর্ষণ একটি ফৌজদারি অপরাধ যার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। মামলার পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে এই শাস্তি।
ইরাক, বাহরাইন ও উত্তর কোরিয়ায় ধর্ষণের অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।
মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়ায় ধর্ষণ একটি ফৌজদারি অপরাধ, যার মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর ধর্ষণও অন্তর্ভুক্ত। সম্মতিহীন যেকোনো যৌনতার জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ৩০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
নরওয়ে ও ইসরায়েল এই রাষ্ট্রগুলোতে ধর্ষণের সাজা ৪ থেকে ১৫ এবং ৪ থেকে ১৬ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ৩ হাজার ৯৪৯টি, ২০১৯ সালে ৫ হাজার ৮৭২টি, ২০২০ সালে ৬ হাজার ৫৫৫টি ও ২০২১ সালে ৬ হাজার ৩৪১টি ধর্ষণের মামলা করা হয়েছে। গত পাঁচ বছরে রাজধানী ঢাকায় ৩ হাজার ৪২টি ধর্ষণের মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক নারী ২ হাজার ৪৭০ জন এবং শিশু ৫৭২ জন। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ধর্ষণ মামলা হয়েছে ৫২৩টি। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক নারী ৪৩০ জন এবং শিশু ৯৩ জন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: