আমার দল এখনও ইসরাইলকে সমর্থন করে- জো বাইডেন

রাজ টাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৩ মে ২০২১ ০৪:৩৩; আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:৪৯

ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলের আগ্রাসন ও যুদ্ধাপরাধ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা সত্ত্বেও দেশটির ওপর সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

তিনি বলেছেন, ইসরাইলের প্রতি তার দল ডেমোক্রেটিক পার্টির নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি।
শুক্রবার ওয়াশিংটন সফররত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনকালে এসব কথা বলেন বাইডেন।

ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের অবসানে দুই রাষ্ট্র সমাধানের ধারণা কয়েক দশক ধরে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে আলোচিত হয়ে আসছে। এই কূটনীতির মূল ভিত্তি ইসরাইলের পাশাপাশি সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং জেরুজালেম হবে দুই রাষ্ট্রের রাজধানী।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইসরাইলপন্থি নীতি ও ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ উপেক্ষা ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে।

ট্রাম্পের উপদেষ্টা ও মেয়ের জামাই জারেড কুশনারের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনায় দুই রাষ্ট্র সমাধানের কথা বলা হয়েছিল ঠিকই। তবে সেই নীলনকশায় ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে খুবই সীমিত সার্বভৌমত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।

তার সেই পরিকল্পনায় ইসরাইলই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের নিরাপত্তা দেখভাল করবে। ফিলিস্তিনি নেতারা কুশনারের সেই মধ্যপ্রাচ্য পরিকল্পনা নাকচ করে দেন। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পুরোপুরিই দুই রাষ্ট্র পরিকল্পনার বিষয়ে জোর দিয়েছেন।

বাইডেন পরিষ্কার করে বলেন, ‘ইসরাইলের নিরাপত্তার বিষয়ে আমার প্রতিশ্রুতির কোনো পরিবর্তন হয়নি, আদৌ কোনো পরিবর্তন হয়নি।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট যোগ করেন, ‘তবে আমি আপনাদের বলছি, একটা পরিবর্তন আছে। সেই পরিবর্তন হচ্ছে, দুই রাষ্ট্র সমাধানই একমাত্র পথ। এটিই একমাত্র জবাব, এটিই একমাত্র পথ।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘ইসরাইলের নিরাপত্তার বিষয়ে আমার প্রতিশ্রুতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।’

তিনি যোগ করেন, এই অঞ্চল (মধ্যপ্রাচ্য) ‘দ্ব্যর্থহীনভাবে’ ইসরাইলের অস্তিত্ব স্বীকার না করা পর্যন্ত ‘কোনো শান্তি আসবে না’।

এর আগে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের মধ্যেই দেশটির কাছে প্রায় ৭৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব করে বাইডেন প্রশাসন। তবে এই প্রস্তাব আটকে দেওয়ার চেষ্টা করছে তার দলেরই বেশ কয়েকজন নেতা ও আইনপ্রণেতা।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে টানা ১১ দিনের সংঘাতের পর শুক্রবার থেকে চলছে যুদ্ধবিরতি, যার পেছনে ভূমিকা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার পুনর্গঠনে অন্য দেশের সঙ্গে মিলে বড় ধরনের সহায়তা প্যাকেজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাইডেন বলেন, ইসরাইলিদের ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি যাতে অব্যাহত থাকে, সেজন্য তিনি প্রার্থনা করছেন।

তিনি আরও বলেন, হামাস যাতে অস্ত্রের মজুত না গড়তে পারে তা নিশ্চিত করতে ইসরাইলি দখলে থাকা ওয়েস্ট ব্যাংকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্যালেস্টাইনিয়ান অথরিটির সঙ্গে সমন্বয় করে ওই অঞ্চলে সহায়তা দেওয়া হবে।

যুদ্ধবিরতির পর গাজা ও ইসরাইলের উপকূলীয় এলাকায় শান্তি ফিরেছে উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, ‘সংঘাত বন্ধ করে শান্তি ফেরানোয় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ। তিনি কথা রেখেছেন, সংঘাত থামিয়ে শান্তি এনেছেন।’

ইসরাইলের ১১ দিনের ওই আগ্রাসনে গাজায় অন্তত ২৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে দুই হাজারের বেশি মানুষ। এ ছাড়া কলকারখানাসহ কয়েক হাজার ভবন ধ্বংস হয়েছে।
নিরপরাধ শিশু ও নারীসহ বেসামরিক নাগরিক হত্যা করায় জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি), অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ইসরাইলকে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত করেছে।

এর আগে ২০১৪ সালে একই ধরনের আগ্রাসনের জন্য ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ তদন্ত শুরু করেছে আইসিসি। তবে এই তদন্তে সহযোগিতার করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে তেল আবিব।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top