সিসির পতন কি ঘনিয়ে আসছে?

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০২১ ০০:২৭; আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:০৯

ফাইল ছবি

মিসরের সামরিক শাসক প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির পতন ঘনিয়ে আসছে বলে এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছেন দেশটির বামপন্থি রাজনীতিবিদ ড. মামদুহ হামজা।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম মিডল ইস্ট আইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন মিসরের নানা আন্দোলনের সক্রিয় এ নেতা।

প্রেসিডেন্ট সিসির সমালোচনা করা এই সেতার একসময় তার কড়া সমর্থক ছিলেন৷ হামজার মতে, আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ফের কোনো গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হবেন। কেননা সিসি গণমানুষের সমর্থন হারিয়েছেন।

হামজা এর আগে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি অংশ নেন ২০১১ সালে স্বৈরাচারী হোসনি মোবারকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভেও। সেই ব্যক্তি এখন ভবিষ্যদ্বাণী দিচ্ছেন, সিসির পতন সন্নিকটে।

এই নেতা বলেন, আমরা ২০১১ সালে জীবনমান উন্নয়নের জন্য লড়াই করেছিলাম। আমার মতে, পরবর্তী গণঅভ্যুত্থান হবে শুধু টিকে থাকার জন্য। দুটি বিষয়ের মধ্যে অনেক পার্থক্য।

সিসি তার কঠিন প্রতিপক্ষ মুসলিম ব্রাদারহুডকে তো প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছেন। তা হলে গদি থেকে সিসিকে সরাবে এমন সাধ্য কার জানতে চাইলে হামজা বলেন, সিসি মূলত তেমন শক্তিশালী নয়। তাকে দেখতে যতটা শক্তিশালী মনে হয়, বাস্তবতা কিন্তু এমন নয়। বর্তমানে তার অবস্থান অত্যন্ত নড়বড়ে। যে কোনো মুহূর্তে তার বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টি হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, মানুষ এখন দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর দ্বারা সহজে যোগাযোগ করতে পারেন। মানুষ জানে মিথ্যা কখনো স্থায়ী হয় না। সর্বোচ্চ এক থেকে দুই বছরের মধ্যে মিশরে পরিবর্তন ঘটবে।

সিসিকে ক্ষমতা থেকে সরাবে কে এমন প্রশ্নের জবাবে হামজা জানান, তিনি সামরিক শাসন ও গুপ্তহত্যার বিরুদ্ধে।

গণঅভ্যুত্থানের বিষয় উল্লেখ করেন হামজা বলেন, এটি গণমানুষের আন্দোলন হবে। এমন কৃষক আন্দোলনে অংশ নেবেন, যাদের জমিতে পানি নেই চাষের জন্য। এমন শিক্ষকরা এতে অংশ নেবেন, যা স্কুলগুলোতে ক্লাসরুমের অভাবে পড়াতে পারছেন না। এমন অভিভাবকরা আন্দোলনের যোগ দেবেন, যারা মনে করছেন তাদের সন্তান শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। চিকিৎসা বঞ্চিত মানুষও হয়তো থাকবে আন্দোলনে।

‘সিসি প্রথমে বললেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হতে চান না। কিন্তু পরে তিনি প্রেসিডেন্ট হলেন। পরে বললেন, ভর্তুকি কমাবেন না। কিন্তু কথা রাখেননি। এর পর সুয়েজ খালের নতুন শাখা করে বললেন, এটির পেছনে ব্যয় হওয়ার অর্থ ঠিকই ফেরত আসবে। কিন্তু হচ্ছে উল্টো।’

সিসির বিরুদ্ধে অর্থ লোপাট ও অপচয়ের অভিযোগ করে ড. মামদুহ হামজা বলেন, সিসি প্রচুর টাকা খরচ করে সড়ক নির্মাণ করছেন; কিন্তু এসব সড়কে যথেষ্ট যান চলাচল নেই। মানুষ তা জানে। তিনি যা প্রয়োজন তার চেয়ে তিনগুণ বড় সেতু তৈরি করছেন সেটাও মানুষ জানে। মানুষ তার সব কীর্তি সম্পর্কেই অবগত। আর সিসির জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা- জনগণ।

প্রসঙ্গত, মিসরে ২০১৩ সালে গণবিক্ষোভে দেশটিতে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মুসলিম ব্রাদারহুডের মোহামেদ মুরসিকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদচ্যুত করেন সিসি৷ এরপর ২০১৪ সালে তিনি মিসরের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top