মদপানে নয়, বিষপানেই গোদাগাড়ীর দুই কৃষকের মৃত্যু

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২২ ০৭:২১; আপডেট: ১৪ মে ২০২২ ০৭:২২

কৃষক অভিনাথ মার্ডি ও রবি মার্ডি। ছবি: সংগৃহীত

গোদাগাড়ী উপজেলার নিমঘটু গ্রামের সাঁওতাল সম্প্রদায়ের কৃষক অভিনাথ মার্ডি ও রবি মার্ডি বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। আত্মহত্যা প্ররোচণা মামলার তদন্ত শেষে আদালতে এই অভিযোগপত্র করা হয়েছে দাখিল।

আজ শুক্রবার গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, অভিনাথ মার্ডি ও রবি মার্ডির আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলায় গভীর নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াত হোসেন অভিযুক্ত বলে তদন্তে জানা গেছে। সেচের পানি না পেয়ে বিষপানে দুই কৃষকের আত্মহত্যা বিষয়টি তদন্তে উঠে এসেছে। এ সংক্রান্ত পৃথক দুটি অভিযোগপত্র এরই মধ্যে আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।

সময়মতো পানি না পাওয়ায় বোরো ধানের জমি ফেটে চৌচির হলেও বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভীর নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াত হোসেন দুই কৃষককে পানি দেননি। দিনের পর দিন ঘুরেও পানি না পেয়ে নিমঘটু গ্রামের সাঁওতাল কৃষক অভিনাথ মার্ডি ও তাঁর চাচাতো ভাই রবি মার্ডি গত ২৩ মার্চ বিষপান করেন। সেদিন রাতেই অভিনাথ মারা যায়। এক দিন পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রবি।

অভিনাথ ও রাবির মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে গোদাগাড়ী থানায় গভীর নলকূপ অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে গোদাগাড়ী মডেল থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার দুটি মামলা করে। কিন্তু, দুই কৃষক চোলাই মদ পান করে মারা গেছেন বলে প্রথম দিকে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল বিভিন্ন মহল থেকে। তবে, তাঁদের মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, দুজনে একই ধরনের বিষপান করে মারা গেছেন। এরপর পুলিশ আদালতে মামলা দুটির অভিযোগপত্র দাখিল করেছে।

মামলা দুটিতে একমাত্র আসামি করা হয়েছিল বিএমডিএর গভীর নলকূপ অপারেটর ও ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনকে। ঘটনার ১১ দিন পর তিনি গ্রেপ্তার হন। বিএমডিএ সেদিনই তাঁকে চাকরিচ্যুত করে। তিনি এখন কারাগারে।

অভিযোগপত্রে পুলিশ শুধু সাখাওয়াত হোসেনকেই অভিযুক্ত করেছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোদাগাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে জানান, গত মাসের শেষের দিকে অভিনাথের মৃত্যুর ঘটনার মামলাটির অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এরপর চলতি মাসের শুরুতে রবির মামলাটিরও অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।

মাহফুজুর রহমান জানান, অপারেটর সাখাওয়াত পানি দিতে কৃষকদের হয়রানি করতেন। স্বজনপ্রীতি করে কাছের লোকদের আগে পানি দিতেন। অভিনাথ ও রবি পানি না পাওয়ার কারণে আত্মহত্যা করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। তদন্তেও এটি প্রমাণিত হয়েছে। তাই অভিযোগপত্রও সেভাবে করা হয়েছে।

রাজশাহী জেলা পুলিশের আদালত পরিদর্শক আব্দুর রফিক জানান, কয়েকদিনের ব্যবধানে গোদাগাড়ী থানা থেকে অভিযোগপত্র দুটি প্রথমে তাঁর দপ্তরে পাঠানো হয়েছিল। তিনি অভিযোগপত্র দুটি আদালতে দাখিল করেছেন। আদালত তা গ্রহণ করেছেন।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top