লাগামহীন ঋণ সুবিধা পাচ্ছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৯ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৪৩; আপডেট: ৯ নভেম্বর ২০২২ ১৯:৫৬

ফাইল ছবি

ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুসারে ব্যাংকের সংরক্ষিত মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি ঋণ দেয়ার সুযোগ না থাকলেও লাগামহীন ঋণের সুবিধা পাচ্ছে দেশের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। খবর বণিক বার্তার।

প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য সর্বোচ্চ ঋণসীমা তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী পাঁচ বছর এসব প্রতিষ্ঠানকে যত খুশি তত ঋণ দিতে পারবে ব্যাংকগুলো। বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় অর্থ সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে এ সুবিধা দেয়া হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দাবি করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে গতকাল এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনের সেই কপি দেশের সব ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীর কাছে পাঠানো হয়েছে।

ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ২৬খ(১) ধারা অনুযায়ী, একটি কোম্পানিকে ব্যাংকের সংরক্ষিত মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি ঋণ দেয়ার সুযোগ নেই। যদিও বিশেষ বিবেচনায় দেশের অনেক কোম্পানিই এখন ব্যাংকগুলোর মূলধনের ২৫ শতাংশের অনেক বেশি ঋণ ভোগ করছে। এবার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য গণহারে এ সুবিধা দেয়া হলো।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে অর্থ সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখার লক্ষ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপনের জন্য ব্যয়, যেমন—জমি কেনা, মেশিনারি আমদানি ও কেনা বাবদ ব্যয়, মেশিনারি স্থাপন-সংক্রান্ত ব্যয়, মেরামতের জন্য ব্যাংকগুলো তাদের প্রয়োজনীয় ঋণ দিতে পারবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ব্যবহূত কয়লাসহ অন্যান্য কাঁচামাল কেনা বা আমদানির লক্ষ্যে ব্যয় নির্বাহের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোনো একক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গ্রুপকে কোনো ব্যাংক ঋণ দিলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমোদনের ক্ষেত্রে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ২৬খ(১) ধারার শর্তাংশে বর্ণিত নিষেধাজ্ঞা আগামী পাঁচ বছরের জন্য কার্যকর হবে না। তবে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ২৬খ(১) ধারার শর্তাংশে উল্লেখিত ২৫ শতাংশ ঊর্ধ্বসীমার স্থলে আগামী পাঁচ বছরের জন্য ঊর্ধ্বসীমা কত হবে তা বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করবে।

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বেশির ভাগই সরকারি ও বিদেশী বিনিয়োগে নির্মাণ হচ্ছে। এ খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ রয়েছে কেবল এস আলম ও ওরিয়ন গ্রুপের। চীনের একটি কোম্পানির সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলমের (এসএস পাওয়ার) ১ হাজার ২২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অপেক্ষায় আছে ওরিয়ন গ্রুপ। বেসরকারি এ গ্রুপ এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ঋণসহায়তা চেয়ে আবেদন করেছিল।

সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলে গত এক যুগে ১৮টি বৃহৎ কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল। কিন্তু বিনিয়োগ তহবিলের উৎস নিশ্চিত করতে না পারা, পরিবেশ বিপর্যয়সহ বিভিন্ন ইস্যুতে এরই মধ্যে ১০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে সরকার। বাদ দেয়া এ বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে পাঁচটিরই উৎপাদনক্ষমতা ছিল ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের বেশি।

#এসকে

বণিক বার্তার প্রতিবেদন



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top