চোরাচালানের স্বর্ণ ছিনতাই, খুলনায় এসআইসহ ৩ পুলিশ গ্রেফতার

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারী ২০২৪ ২০:১৬; আপডেট: ১৩ জানুয়ারী ২০২৪ ২০:১৬

ছবি: সংগৃহীত

খুলনায় চোরাচালানীর কাছ থেকে স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একইসাথে চোরাচালানীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে শুক্রবার রাতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের লবণচরা থানা তাদের গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন এসআই (নিঅস্ত্র) মো: মোস্তফা জামান, এএসআই (নিঅস্ত্র) আহসান হাবীব (৩৫), কনস্টেবল মুরাদ হোসেন (৪২) ও নগরীর খালিশপুর এলাকার স্বর্ণ পাচারকারী ব্যাসদেব দে (৩৯)।

লবণচরা থানা সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতার পুলিশ সদস্যদের মধ্যে এসআই (নিঅস্ত্র) মো: মোস্তফা জামানের বাড়ি যশোর, এএসআই (নিঅস্ত্র) আহসান হাবীবের বাড়ি বাগেরহাট ও কনস্টেবল মুরাদ হোসেনের বাড়ি সাতক্ষীরায়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে লবণচরা থানায় এসআই মোকলুসুর রহমান চোরাচালান ও দস্যুতার অভিযোগে একটি মামলা করেছেন।

পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দায়িত্ব পালনকালে নগরীর লবণচরা থানার সাচিবুনিয়া বিশ্বরোড মোড়ে চেকপোস্ট বসায়। এসআই মো: মোস্তফা জামান সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন, টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেসের একটি বাসে অবৈধ স্বর্ণের বার নিয়ে এক ব্যক্তি খুলনা মহানগরীতে প্রবেশ করবে।

এ সংবাদ পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে এসআই মোস্তফা জামান সঙ্গীয় এএসআই মো: আহসান হাবিব ও কনস্টেবল মো: মুরাদ হোসেনের সাথে যোগসাজস করে সাচিবুনিয়া বিশ্বরোড মোড় এলাকার রূপসা ব্রিজ থেকে জিরো পয়েন্টগামী মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটির সামনে পাকা রাস্তার ওপর চেকপোস্ট পরিচালনা করে।

এ সময় পুলিশ দেখে একজন টুঙ্গীপাড়া পরিবহন থেকে নেমে দ্রুত হেঁটে যেতে থাকে। তখন পুলিশ সদস্যরা তাকে দাঁড়ানোর জন্য বললে সে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। দুপুর ২টার পর পুলিশ সদস্যরা ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এ সময় তাকে পালানোর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তার কাছে স্বর্ণের বার আছে বলে স্বীকার করে।

এরপর আসামি ব্যাসদেব দের জিন্স প্যান্টের বেল্টের নিচের বর্ডার কেটে সুকৌশলে বানানো গোপন পকেট দেখা যায়। ব্যাসদেব পকেট থেকে খাকি স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো ছয়টি স্বর্ণের বার এসআই মোস্তফা জামানের কাছে দেয়। এরপর পুলিশ সদস্যরা আসামি ব্যাসদেব দেকে ভয় দেখিয়ে তিনটি স্বর্ণের বার নিয়ে নেয়। পরে তারা ব্যাসদেবকে বাকি তিনটি স্বর্ণের বারসহ ছেড়ে দেয়। ছিনতাই করা তিনটি স্বর্ণ বারের মূল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা।

সূত্র জানায়, পরবর্তীতে বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানতে পারেন। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই তিন পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। তখন অভিযুক্ত তিন পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হয়। এ ঘটনায় আসামি ব্যাসদেব দে আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক অপরাধের সাথে তার জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

লবণচরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: হাফিজুর রহমান বলেন, স্বর্ণ পাচারকারীকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও অভিযুক্ত তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলার পর গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। শনিবার আদালতে সোপর্দ করার পর তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়। পুলিশ সদস্যদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া আসামিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top