সরকারি স্কুলে বেশি আগ্রহ বেসরকারিতে আসন খালি

রাজটাইমস ডেক্স | প্রকাশিত: ৫ জানুয়ারী ২০২১ ১৪:১৪; আপডেট: ২ মে ২০২৪ ১৫:১৫

প্রতিকি ছবি

সরকারি স্কুলেই সন্তানকে ভর্তি করাতে চান সবাই। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগে থেকেই অভিভাবকদের মধ্যে এ নিয়ে শুরু হয় পেরেশানি। এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে চলে দৌড়ঝাঁপ। চেষ্টার কোনো ত্রুটি করতে চান না তারা। অন্য দিকে শিক্ষাবর্ষ শুরুর পরেও বেসরকারি স্কুলগুলোতে এখনো অনেক আসন শূন্য রয়েছে। নির্ধারিত খালি আসনের বিপরিতে শিক্ষার্র্থী পাচ্ছে না বহু বেসরকারি স্কুল। যদিও চলতি শিক্ষাবর্ষে করোনার কারণে কোনো স্কুলেই ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে না। লটারির মাধ্যমেই এ বছর ভর্তি করা হচ্ছে শিক্ষার্থী। তাই স্কুলে না দৌড়িয়ে এবার অনলাইনে ভর্তি ফরম পূরণে সময় ব্যয় করছেন অভিভাবকরা।

অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সন্তানকে ভালো কোনো সরকারি স্কুলে ভর্তি করাটা তাদের কাছে বহু প্রতীক্ষিত ও প্রত্যাশিত একটি চাহিদা। অনেক অভিভাবক রয়েছেন যারা এক বছর আগে থেকেই সন্তানকে বিভিন্ন কোচিং কিংবা শিক্ষকের কাছে পাঠিয়ে ভর্তির জন্য প্রস্তুত করেন। কিন্তু এ বছর যেহেতু অনলাইনে আবেদন করে এবং লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে সে জন্য অভিভাবকদের দৌড়াদৌড়ি কম থাকলেও কিছুটা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা কাজ করছে।


এ দিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সরকারি স্কুলে ভর্তিতে নতুন করে অনলাইন আবেদনের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। এর পর ১১ জানুয়ারি সারা দেশে একযোগে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভর্তির লটারি আয়োজন করা হবে। আবেদনের বর্ধিত সময়ের মধ্যে গত পাঁচ দিনে প্রথম থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত নতুন করে প্রায় ৫০ হাজার আবেদন করা হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট আবেদন জমা পড়েছে সাড়ে পাঁচ লাখের মতো।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তিতে প্রথম থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত সারা দেশে প্রায় ৮০ হাজার শূন্য আসনের জন্য প্রথম দফায় প্রায় পাঁচ লাখ আবেদন আসে। কিন্তু পরে ষষ্ঠ শ্রেণীর ভর্তিতে শিক্ষার্র্থীদের বয়স নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে আদালতে রিট করেন অভিভাবকরা। পরে ভর্তিতে বয়সসীমা শিথিল করে আবেদনের সময় বাড়ানোর ঘোষণা দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।


রাজধানীর নামী-দামি কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যান্য স্কুলে আসনের বিপরীতে এখনো শিক্ষার্থী সঙ্কট রয়েছে। অনেক স্কুলে নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়েও শিক্ষার্থী ভর্তি নিচ্ছে। গত কয়েক দিনে বেশ কিছু স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শূন্য আসনের বিপরীতে তারা শিক্ষার্থী সঙ্কটে রয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা আশা করছেন, সরকারি স্কুলে যারা ভর্তি হতে পারবে না তারাই এসে ভর্তি হবে।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মাঝারি ও ছোট আকারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলতি বছরে শিক্ষার্থী সঙ্কট বেশি। আগে যারা এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করত তাদের অনেকেই করোনার সময়ে গ্রামে চলে গেছে। তাই বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি নীতিমালা জারির পরে রাজধানীর স্কুলগুলোতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হলেও অনেক প্রতিষ্ঠানের ভর্তির জন্য ছাত্রছাত্রী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান শিক্ষকরা।

পুরোপুরি বিপরীত চিত্র দেখা গেছে, নামী-দামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। রাজধানীর বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চারটি শাখায় দিবা ও প্রভাতী শিফটে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ শ্রেণীতে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে। সূত্রমতে এসব শ্রেণীতে প্রায় তিন হাজার শূন্য আসনে ভর্তির জন্য আবেদন জমা পড়ছে অনেক বেশি। আগামী ১২ থেকে ১৬ ও ১৭ এবং ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ক্লাস-ভিত্তিক আলাদাভাবে লটারি আয়োজন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।

মাউশির উপপরিচালক (মাধ্যমিক) মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন জানান, দেশের সব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এবার একযোগে অনলাইন আবেদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং একযোগে শেষ হবে। বর্তমানে দ্বিতীয় ধাপের আবেদন কার্যক্রম চলছে। সেটি শেষ হলে ১১ জানুয়ারি সারা দেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভর্তি লটারি আয়োজন করা হবে। তবে বেসরকারি স্কুলগুলোতে তাদের চাহিদা মতো সরকারি স্কুলের ভর্তির লটারির পর শিক্ষার্থী পাবে। এখন অনেক অভিভাবক লটারির অপেক্ষায় রয়েছেন। কাজেই ১১ জানুয়ারির পর বেসরকারি স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য চাপ বাড়বে।



বিষয়: শিক্ষা


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top