পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করায় ভারতকে চিঠি
রাজ টাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৫৭; আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫ ২০:৪১

আগে থেকে না জানিয়ে হঠাৎ করে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ায় উদ্বেগ জানিয়ে ভারতকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। চিঠিতে আবার পেঁয়াজ রফতানি চালু করতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে মঙ্গলবার এ চিঠি দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়, ১৪ সেপ্টেম্বর ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় আকস্মিক পেঁয়াজ রফতানির ঘোষণায় যে পরিবর্তন এনেছে, তাতে গভীর উদ্বেগ জানাচ্ছে বাংলাদেশ। এটা বাংলাদেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের সরবরাহকে সরাসরি প্রভাবিত করছে।
চিঠিতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ-ভারতের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের আলোচনার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে- ওই বৈঠকে বাংলাদেশ ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছিল ভারত যেন বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের রফতানিতে বিধিনিষেধ আরোপ না করে। আর যদি কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করতে হয়, তাহলে বাংলাদেশকে যেন আগেই অবগত করা হয়। এছাড়া গত অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরেও এ সংক্রান্ত আলোচনা হয়েছিল বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, সর্বশেষ ১৪ সেপ্টেম্বর ভারত সরকারের পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণায় বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের মধ্যে ২০১৯ ও ২০২০ সালে হওয়া আলোচনা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ায় গুরুত্ব দেয়া হয়নি।
এদিকে গেল মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যদি এ ধরনের পরিবর্তন করে থাকে তা বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে আগে জানিয়ে দেবে- এ রকম একটা বিষয় আছে। পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের আগে বাংলাদেশকে জানানোর কথা থাকলেও জানায়নি ভারত। তবে আবার রফতানির বিষয়ে দিল্লির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ জানিয়েছি এবং আমরা প্রত্যাশা করছি ভালো একটা ফলাফল পাব।
গেল সোমবার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারকরা। তারা বলছেন, এলসি খোলার পরও পণ্য না পাওয়ার বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক। বাজারে সংকট দেখা দিতে পারে পেঁয়াজের। তবে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হওয়ার আশা করছে বাংলাদেশের বন্দর কর্তৃপক্ষ।
সোমবার ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়েছে, সব ধরনের পেঁয়াজ রফতানি পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এক্ষেত্রে ট্রানজিশনাল এগ্রিমেন্ট প্রযোজ্য নয় বলেও ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে ভারত রফতানি বন্ধ করায় ফের অস্থির বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজার। বাজারে সরবরাহ থাকার পরও সোমবার সন্ধ্যা থেকেই দেশের বাজারে ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ানো হয়েছে পণ্যটির দাম। রীতিমতো মূল্যের দিক দিয়ে ফের ‘সেঞ্চুরি’ হাঁকিয়েছে। অর্থাৎ কেজিপ্রতি ১০০ টাকা অতিক্রম করেছে। একদিনের ব্যবধানে মঙ্গলবার কেজিতে ৫০ টাকা বাড়িয়ে রাজধানীর পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজে কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৭৫ টাকা। আর খুচরা বাজারে কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে এক দিনের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা।
আন্দালীব/16
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: