নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জামায়াতের

রাজটাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ৮ জানুয়ারী ২০২৪ ১৮:৩১; আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:০৪

ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন বাতিল ও অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণার দাবি করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

সোমবার (৮ জানুয়ারি) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এ দাবি জানান।

এসময় কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন দলটির নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমিরআবদুর রহমান মুসা প্রমুখ।

দেশবাসীর উদ্দেশে ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে আজ জনগণের ন্যায্য ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই চলছে। গণতন্ত্র হত্যাকারী বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার গত ১৫ বছর ধরে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে। তারা ক্ষমতা প্রলম্বিত করার লক্ষ্যে এবারো ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন করে।

তিনি বলেন, সরকার বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম নির্যাতন চালিয়ে ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা নবায়নের ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের ডাকে সাড়া দিয়ে প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করে ও ভোটদান থেকে বিরত থাকে। সরকারের হুমকি-ধমকি অগ্রাহ্য করে জনগণের এই সাহসী ও দৃঢ় সিদ্ধান্তে আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দেশবাসীকে আন্তরিক মোবারকবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। জনগণের এ ভূমিকা বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

তিনি আরো বলেন, ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলন থেকে শুরু করে প্রতিটি আন্দোলনে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল এবং আন্দোলন সফল করে তুলেছিল। বাংলাদেশে চলছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। গণতান্ত্রিক বিশ্ব ও প্রতিষ্ঠানসমূহ বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে। দেশের জনগণ নিজেদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছে। সরকার জনমতকে অগ্রাহ্য করে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য নীল-নকশা প্রণয়ন করে।

তিনি বলেন, তারা তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রহসনের নির্বাচন সফল করে তোলার লক্ষ্যে নিজেদের দলীয় লোকদের স্বতন্ত্র, ডামি ও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে এবং জনগণকে ভয় দেখিয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধ্য করার মাধ্যমে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর অপকৌশল গ্রহণ করে। সেই সাথে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৮ অক্টোবর থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধীদলের ৩৫ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং মাত্র ২ মাসের মধ্যে ৬২টি মামলায় ১৬ শতাধিক নেতাকর্মীকে সাজানো ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ফরমায়েসি রায়ের মাধ্যমে সাজা প্রদান করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সরকারের পরিকল্পনা ছিল জনগণকে দমিয়ে রেখে জাল ভোট প্রদান করে এবং দলীয় লোকদের দ্বারা ভোটকেন্দ্রে ভিড় জমিয়ে ভোটার উপস্থিতির মহানাটক মঞ্চস্থ করা। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ সাহসিকতা ও দৃঢ়তার সাথে সরকারের হুমকি-ধমকি অগ্রাহ্য করে ৭ জানুয়ারির প্রহসনের ভোট বর্জন করে সরকারের সকল ষড়যন্ত্র বানচাল করে দিয়েছে। জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত এই নির্বাচনের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।

জামায়াত আমির বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাতির সামনে ওয়াদা করেছিলেন, ‘এটি নিয়ম রক্ষার নির্বাচন, শিগগিরই আরেকটি নির্বাচন হবে’। কিন্তু তিনি তার ওয়াদা রক্ষা করেননি। ২০১৮ সালেও তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহ তার কথায় আস্থা রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র শক্তি ব্যবহার করে ভোটের আগের রাতেই ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখে এবং দিনের বেলায় ভোটের নামে প্রহসন করা হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জাতীয় সংসদ, সিটি করপোরেশন, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদসহ কোনো নির্বাচনই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানাচ্ছি। দেশের জনগণ নির্বাচন বর্জন করে ও ভোটদান থেকে বিরত থেকে যে ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে সরকার জনগণের দাবি মেনে নিয়ে শুভ বুদ্ধির পরিচয় দিবেন বলে আমরা আশা করি।




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top