জামায়াত-শিবিরের জ্ঞানচর্চা প্রশংসার দাবিদার : ফখরুল

রাজটাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ৩ জুন ২০২৪ ০৯:২৭; আপডেট: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৬:৪০

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি সমর্থন করেন না। কিন্তু জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের জ্ঞানচর্চা এবং কর্মপদ্ধতি প্রশংসার দাবিদার। গতকাল রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব বলেন।

জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। এই সংগঠনটির চেয়ারম্যান হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু স্লোগান দিয়ে রাজনীতি করলে হবে না। জেনেশুনে রাজনীতি করতে হবে। আমি জামায়াতের রাজনীতি সমর্থন করি না। কিন্তু তাদের রাজনৈতিক কৌশল অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত। খেয়াল করলে দেখবেন অনেকটাই কমিউনিস্ট পার্টির মতো।

এর কারণ হলো, তাদের স্টাডি সেল আছে। তাদের যে ছাত্রশিবির আছে, তাদের প্রত্যেকটার সেল আছে। তাদের লেখাপড়া করতে হয়, বই পড়তে হয়। সেই বই পড়ে তাদের উত্তর দিতে হয়। এ কারণে তারা নিজেরা পড়ে, পত্রিকা প্রকাশ করে। জ্ঞানের চর্চা ছাড়া কেউ সফলতা অর্জন করতে পারবে না।

জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পেয়ে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন। সেজন্য তিনি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নের কাজ শুরু করেন। তিনি আওয়ামী লীগ, ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি, মুসলিম লীগ প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেছেন। জামায়াতে ইসলামী তখন ছিল না। তাই ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগের সঙ্গে কথা বলেছেন। কথা বলে সবার একটা ধারণা তৈরি হয় যে, আসলে তিনি (জিয়াউর রহমান) একজন দেশপ্রেমিক। তিনি কাজ করতে চান। তাকে দিয়ে কাজ হবে। কমিউনিস্ট পার্টির মতো দল প্রেসিডেন্ট জিয়ার ১৯ দফাকে সমর্থন দিয়েছে। মোজাফফরের ন্যাপ তাকে সমর্থন দিয়েছে।

সংবিধানে যখন বিসমিল্লাহ সংযোজন করা হলো, মোজাফফর আহমদ বলেছিলেন, বিসমিল্লাহ দিয়ে যদি কাজ শুরু করা যায়, বিসমিল্লাহ বলে যদি আমি ভালো কাজ করতে পারি, তাহলে সমস্যাটা কোথায়? আমি যদি সোশ্যালিজমের সামনে বিসমিল্লাহ বসাই, আমার সমস্যা কোথায়? এভাবেই বামপন্থি-সমাজতন্ত্রীরা জিয়াউর রহমানের প্রতি আকৃষ্ট হন। তারা তাকে সমর্থন দিয়েছেন। এটা অনেকে জানে না যে, ১৯ দফা কর্মসূচিতে সিপিবি ও মোজাফফর ন্যাপ সমর্থন দিয়েছে। এগুলো আমাদের জানা দরকার। সেজন্য বলি, শুধু চিৎকার-চেঁচামেচি করে রাজনীতি হবে না, রাজনীতি করতে হলে জ্ঞানচর্চা করতে হবে।

আমি জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনকে অনুরোধ করেছি, আপনারা দয়া করে বিএনপি হতে যাবেন না। থিঙ্ক ট্যাঙ্ক হন বিএনপির। আপনারা সেমিনার করেন, আলোচনা সভা করেন, ওয়ার্কশপ করেন; যাতে আমরা জিয়াউর রহমানকে আরও বেশি করে জানতে পারি, ছড়িয়ে দিতে পারি।

বর্তমানে পত্রিকা খুললে শুধু লুট আর লুট ছাড়া কিছুই পাবেন না। কারা লুট করছে? যারা আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের বড় দায়িত্বে তারা। সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রধান আইজি—তাদেরটা বেরিয়ে আসছে। চোরাচালানির সঙ্গে জড়িত এমপি টুকরা টুকরা হয়ে যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংক লুট হয়ে যায়। স্বর্ণ হারিয়ে যায়, ডলার রিজার্ভ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নিয়ে চলে যাচ্ছে, কল্পনা করা যায়। শেয়ারবাজারে রথী-মহারথীরা লুটপাট করে শেষ করে দিচ্ছে। বাংলাদেশে এখন বড় বড় মানুষ। তারা এত বড় যে, তাদের আশপাশে যাওয়া যায় না। কেউ দরবেশ, কেউ সন্ন্যাসী, কেউ বিরাট ধর্মীয় আলেম। চট্টগ্রামের একটি ব্যাংকের শাখা থেকে ১৪৯ ভরি স্বর্ণ লুট হয়েছে। কোনো দিকে কোনো চিন্তা নেই, জবাবদিহি নেই।

জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও শাহাদাতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী মাহবুব আলমের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক সামসুল আলম সেলিম, ডা. আবু নাসের প্রমুখ।

এ সময় পেশাজীবী নেতা গাজী মাজহারুল হক, ড. এসএম আব্দুর রাজ্জাক, ড. আক্তার হোসেন, ড. নূরুল ইসলাম, প্রকৌশলী একেএম আসাদুজ্জামান চুন্নু, ডা. মো. মেহেদী হাসান, প্রকৌশলী শাহীন হাওলাদার, প্রকৌশলী আইয়ুব হোসেন মুকুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top