পদ্মার পানিতে উঠানামা করে তাদের ভাগ্য

হারানো নীড় পুনঃনির্মান চেষ্টায় পদ্মার চরবাসীরা

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০২০ ২০:২৩; আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২০ ২০:২৫

বাঘায় পদ্মার চরে নতুন করে বসত নির্মান করছে চরবাসীরা

বন্যার পানিতে হারিয়ে গিয়েছিল তাদের ঠিকানা। পানি নেমে যাওয়ায় নতুন করে জীবন ধারণের আশ্রয় গড়তে দেখা গেছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মা চরের মানুষদের।

সোমবার (২৬ অক্টোবর) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নিরাপদে বসবাসের জন্য চরবাসী নির্মাণ করছে ঘরবাড়ি। তারা নতুন করে সেখানে বসবাসের চেষ্টা করছেন।

আকবর হোসেন, একজন চরবাসী, তিনি বলেন, ভেঙে যাওয়া ঘরবাড়ি নতুন করে মেরামত করছি। মেরামত করার পয়সা নেই। তিন ছেলে তিন মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি। এবারের ভাঙনে বাড়িঘর পদ্মা গর্ভে চলে গেছে।

কথা বলার এক পর্যায়ে কান্নাবিজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, কী করে ঘর মেরামত করব? হাতে তো পয়সা নেই। তার পরও নতুনভাবে চর জেগে ওঠায় ঘরবাড়ি মেরামত করছি। এমন কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

চরে বাস করা এসব ছিন্নমূল মানুষের প্রধান পেশা কৃষিকাজ ও পাশাপাশি পদ্মায় মাছ ধরা। তাদের যা আয় হয়, এই দিয়ে সংসার চরে। তার পর প্রতি বছর ঘড়বাড়ি ভেঙে যায়।

পদ্মায় পানি উঠা-নামার মাঝেই তাদে কষ্টের পরিধি বেড়ে যায়। প্রতি বছর ঘরবাড়ি মেরামত করতে হয়। ভাঙনের ফলে এক স্থান থেকে অন্য জায়গায় ঘরবাড়ি তুলতে হয়। এভাবেই চলে আমাদের জীবন। শুকনো মৌসুমে কৃষিকাজ, বর্ষায় মাছ ধরে জীবন-জীবিকা নির্ভর করতে হয়।

নিজের কষ্টের অনুভূতি প্রকাশ করে চৌমাদিয়া চরের আঞ্জু মোল্লা বলেন, পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ঘরবাড়ি মেরামত করার চেষ্টা করছি। ঘরবাড়ি মেরামত না করলে থাকা মুসকিল হয়ে যাবে। খোলা জায়গাতে তো বসবাস করা যায় না।

ছেলেমেয়ে নিয়ে কষ্ট করে চলতে হয় জানান কালীদাসখালী চরের গোলাম মোস্তাফা। তিনি বলেন, ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। মেরামত তো করতেই হবে। মেরামত না করলে ছেলেমেয়ে নিয়ে বসবাস কীভাবে করব।

চরবাসীদের অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, বেশ কিছু দিন আগে থেকে পদ্মার পানি কমতে শুরু করেছে। নতুন নতুন চর জেড়ে উঠছে।

এদিকে পানি কমলেও ভাংগনের কবলে কালীদাসখালী ও লক্ষ্মীনগর এলাকার মানুষ। এখানে যেভাবে পদ্মার পাড় ভাঙছে তা প্রতিকারের ব্যবস্থা না করলে এলাকার চিহ্ন থাকবে না। পদ্মার ১৫টি চরে পরিবার রয়েছে ৩ হাজার ৭৬২। এবারের ভাঙনে প্রায় দেড় শতাধিক পরিবার গৃহহারা হয়েছে।

ভেঙে যাওয়া পরিবারের তালিকা তৈরি করে উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে জানান সংশ্লিষ্ট এলাকার চেয়ারম্যান।

  • এসএইচ


বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top