কুমিল্লাই চ্যাম্পিয়ন, পারল না সিলেট

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২২:৩১; আপডেট: ১২ মে ২০২৪ ০১:৪৫

ছবি: সংগৃহীত

মুকুট শোভা পায় মাথায়। শিরোপা শোভা পায় কুমিল্লার হাতে। বিপিএলের ইতিহাসে সব মিলিয়ে চতুর্থবার এবং টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ফাইনালে তারা হারিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে।

উত্তেজনা শেষ হয়ে গেল রুবেল হোসেনের এক ওভারে জনসন চার্লস ২৩ রান নেওয়ার পর। এরপর চার বল বাকি থাকতেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জয় সাত উইকেটে।

কুমিল্লার জয়ের নায়ক চার্লসকে ঘিরে সতীর্থরা কেমন উদ্যাপন করলেন, সেটা দেখা হলো না গ্যালারি ঠাসা দর্শকদের। হঠাৎ নিভিয়ে দেওয়া হলো ফ্লাডলাইট। অন্ধকার চারদিক। এর মধ্যেই শুরু হলো লেজার শো, খানিক পর মিউজিকের সঙ্গে আতশবাজির ঝলকানি। বিপিএলের পর্দা নামল মিরপুর আবারও আলোকিত করে।

বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএলের ফাইনালে মুশফিকুর রহিম অপরাজিত থাকেন ৪৮ বলে ৭৪ রানে। এর আগে নাজমুল হোসেনের হাফ সেঞ্চুরিতে (৬৪) টস হেরে ব্যাট করতে নামা সিলেট স্ট্রাইকার্স সাত উইকেটে তোলে ১৭৫ রান। এই রান তাড়া করে জিততে হলে রেকর্ড গড়তে হতো কুমিল্লাকে। সেটাই করে দেখিয়ে চতুর্থবার বিপিএলের শিরোপা ঘরে তুলল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

ম্যাচ শুরুর আগে নগরবাউল জেমসের ‘পাগলা হাওয়ায়...’ দর্শকদের উন্মাতাল নৃত্যে মেতেছিল গ্যালারি। জেমসের ভক্ত মাশরাফি মুর্তজা একটু দূরে থেকেই তখনও শেষ প্রস্তুতিতে মগ্ন। জেমসকে দেখার সুযোগ তার নেই। ২০ গজ দূরে থাকা আন্দ্রে রাসেলের তো জেমসকে চেনার কথাই না। তিনিও প্রস্তুতিতে তখন ব্যস্ত। দর্শকে ঠাসা গ্যালারির সঙ্গে ফাইনালের উত্তেজনা আগে থেকেই টের পাওয়া যাচ্ছিল।

বিপিএলের ফাইনালে রেকর্ড রান তাড়া করতে নেমে সুনীল নারিন-ঝড় বেশিদূর এগোতে দেননি রুবেল হোসেন। লিন্ডে ফেরান কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুলকে। কিন্তু এক প্রান্ত আগলে রেখে লিটন দাস দলকে টেনে নিয়ে যান। অন্য প্রান্তে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জনসন চার্লস মন্থর ব্যাটিং করেন শুরুতে। রুবেলের হাত ফসকে একবার জীবনও পান।

লিটন ৩৯ বলে ৫৫ করে আউট হওয়ার পর জনসন ‘জীবন’ পাওয়ায় সুযোগটা কাজে লাগান। আগের তিন ওভারে ১৬ রানে দুই উইকেট নেওয়া রুবেল নিজের চতুর্থ ওভারে দেন ২৩। ২৪ বলে দরকার ছিল ৫২। সেখান থেকে তিন ওভারে কুমিল্লার প্রয়োজন হয় ২৯ রান। চার্লস ৫২ বলে সাত চার ও পাঁচ ছক্কায় ৭৯* রান করে দলকে জিতিয়ে ফেরেন।

মিরপুরে রাতের ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া যেন সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ফিল্ডিংয়ে পাঠিয়ে প্রথম ওভারেই দুটি ওভার থ্রোতে হলো বাউন্ডারি। সিলেট পেয়ে গেল অতিরিক্ত আট রান। প্রথম ওভার থেকে শুরু, এরপর ব্যাটিংয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পুরো সময়টা ছিল ভুলে ভরা। শেষ বলেও মহাভুল। ফ্রি হিটে মিড উইকেটে ক্যাচ তুলেছিলেন মুশফিক, সেটি নিয়েছিলেন লিটন। তবে ফ্রি হিট ভুলেই গিয়েছিলেন। একটি রান অতিরিক্ত চলে আসে। প্রথম ও শেষের বলে ভুলের মতো প্রায় পুরো ইনিংসেই কুমিল্লা মিস ফিল্ডিং করেছে। অন্তত পাঁচটি চার অতিরিক্ত হয়েছে। জর্জ লিন্ডের দুটি ক্যাচ মিস করেন কুমিল্লার ফিল্ডাররা। রায়ান বার্ল ও নাজমুল হোসেনও ‘জীবন’ পান।

ব্যাটিংয়ে সিলেটকে দুই তরুণ নাজমুল হোসেন ও তৌহিদ হৃদয়ই শুরু থেকে টেনেছেন। কিন্তু হৃদয় ফাইনালে হতাশ করলেন। আউট হন দ্বিতীয় বল খেলতে গিয়ে শূন্যতে।

চমক দেখাতে এদিনও ওয়ানডাউনে নামেন মাশরাফি। কিন্তু বাজিতে আর কাজ হয়নি। আউট হন এক রানে। মুশফিককে ওপরে এনে ভালো কাজই করেছিলেন মাশরাফি। তৃতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন ও মুশফিক গড়ে তোলেন ৭৯ রানের জুটি। নাজমল হোসেন বিপিএলে এবার চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি করার পরও ড্রেসিংরুম থেকে মাশরাফি তাকে শান্ত থাকার ইঙ্গিত দেন। উদযাপনে মন না দিয়ে হয়তো টিকে থাকতেই বলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি আউট হন ৬৪ করে। একই সঙ্গে দারুণ এক মাইলফলক স্পর্শ করেন। প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটার হিসাবে বিপিএলের এক মৌসুমে ৫০০ রানের রেকর্ড গড়েন নাজমুল। পুরো বিপিএলে এর আগে পাঁচশ রানের কীর্তি ছিল একমাত্র রাইলি রুশোর। নাজমুল এবার খেলেছেন ৪৩*, ৪৮, ১৯, ৫৭, ১২, ১৩, ৮৯*, ৯, ৬০, ৬, ১৫, ৩, ৩৮, ৪০ ও ৬৪ রান।

নাজমুল আউট হওয়ার পর মুশফিক আক্রমণাত্মক হন। তবে তাকে কেউই সঙ্গ দিতে পারেননি। থিসারা পেরেরা, জর্জ লিন্ডে, রায়ান বার্ল কিংবা জাকির হাসান সবাই ব্যর্থ হন। মুশফিক এক প্রান্তে অপরাজিত থাকেন ৭৪ রানে। তার ৪৮ বলের ইনিংসে ছিল পাঁচ চার ও তিন ছক্কা।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top