তামিম বিভ্রান্ত নাকি তামিমকে নিয়ে বিভ্রান্তি
রাজ টাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৮ জুন ২০২২ ০৫:২৫; আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৪০

কথায় আছে ‘মুখের বুলি আর বন্দুকের গুলি একবার বেরিয়ে গেলে ফেরত আসে না’। তবে গুলি গায়ে না লাগলে যুক্তি দেওয়ার সুযোগ থাকে। কথার ক্ষেত্রেও তাই। বুলি ছেড়ে তামিম যুক্তি দিচ্ছেন- কারো নাম তো তিনি মুখে আনেনি। বোর্ড তাকে অনুরোধ করেনি সেটাও বলেননি।
একদিন আগে তামিম বলেছেন, ‘টি-২০ নিয়ে আমার যে পরিকল্পনা, তা আমাকে বলার সুযোগই দেওয়া হয় না। হয় আপনারা (সংবাদ মাধ্যম) বলে দেন, নয়তো অন্য কেউ বলে দেয়। তো ওভাবেই চলতে থাকুক।’
তামিম জানান, এতোদিন তিনি ক্রিকেট খেলছেন, তার চিন্তা তারই মুখ থেকে শোনা উচিত। এতটুকু তার প্রাপ্য। কিন্তু সব অন্যরা বলে দেন।
তার কথার প্রেক্ষিতে বিসিবি সভাপতি পাপনের মুখ খুলতে হয়েছে। তিনি পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন, অন্তত চারবার তামিমের সঙ্গে তার টি-২০ পরিকল্পনা নিয়ে আলাপে বসেছে বোর্ড। তামিমকে বোর্ড টি-২০ ফরম্যাটে ফেরার অনুরোধ করেনি ‘এটা মিথ্যা’ বলে অভিহিত করেছেন বোর্ড কর্তা।
টি-২০ ক্যারিয়ার নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে যাওয়ার পরে ‘অন্য কেউ’ শব্দটাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন তামিম। তিনি ফেসবুকে দাবি করেছেন, তার কথার সূত্রে অনেকে বিভ্রান্ত হচ্ছেন বা মিডিয়ায় বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। তিনি বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি এমন কিছু বলেননি।
তামিমের সিদ্ধান্তটা ‘মিডিয়া বা অন্য কেউ জানিয়ে দিচ্ছে’। এই অন্য কেউটা কে? ফেসবুকে বিবৃতি দেওয়ায় আপাতত এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে না তার। তবে কেউটা যে বিসিবি বা বিসিবির কোন কর্মকর্তাকে বুঝানো হয়েছে তা বুঝতে বাকি থাকার কথা নয়। কারণ গত ১৭ মে তামিমের টি-২০ ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলেছেন ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস।
চট্টগ্রামে তিনি বলেছিলেন, ‘তামিম আমাদের মোস্ট সিনিয়র ক্রিকেটার। তার সঙ্গে আমাদের একাধিক বৈঠক হয়েছে। আপনারাও জানেন। আপনাদের কাছেও (সংবাদ মাধ্যমে) পরিকল্পনা নিয়ে সে কথা বলেছে। তিন মাস ধরে তাকে ফেরানোর চেষ্টা করছি। এরপর কি আর কিছু বলার থাকে? ছয় মাস গেলে আনুষ্ঠানিকভাবে আপনারা জানতে পারবেন। সে থাকবে কিনা তার মুখ থেকেই শুনবেন।’
তামিমের টি-২০ ভবিষ্যত নিয়ে সর্বশেষ কথাটা বলেছিলেন জালাল ইউনুস এবং তামিমের সিদ্ধান্ত তিনি জানিয়ে দেননি। বরং দেশসেরা ওপেনারের কোর্টে ঠেলে দিয়েছিলেন বল। তামিমের বিশ্রাম চার মাস পেরিয়ে গেছে। সামনে বিশ্বকাপ। তিনি তার টি-২০ ভবিষ্যত নিয়ে কী বিভ্রান্ত? সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না? তেমনটা হলে বোর্ডের কাছে সময় চাইতে পারেন।
তামিম তার ফেসবুক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ছয় মাস হতে এখনও দেড় মাস বাকি। কিন্তু সেই সময়টার অপেক্ষা কেউ করছে না।’ কেউ অপেক্ষা না করার কারণ যে দুয়ারে কড়া নাড়া টি-২০ বিশ্বকাপ তামিম নিশ্চয় সেটা আঁচ করতে পারেন। সিদ্ধান্ত যদি তার নেওয়াই থাকে চার মাস আর ছয় মাস কী? তা নিয়ে লুকোচুরিই বা কেন? ঘড়ির কাঁটা ধরে ছয় মাস পূর্ণ হলেই ঘোষণা দিতে হবে এমন কথাও তো নেই!
সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেট থেকে তিনি বিশ্রাম নিয়েছেন করোনাকালে তিন ফরম্যাটের ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়া কঠিন হওয়ায়। ওয়ানডে ও টেস্ট নিয়ে তার আলাদা পরিকল্পনা আছে। দুই ফরম্যাটে বাড়তি মনোযোগ দিতে চান বলে। সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেট পরিকল্পনায় না থাকলে ওই সংস্করণ নিয়ে ‘আলগা চাপ’ নেওয়ার দরকার কী তামিমের? ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দীর্ঘ বিমান যাত্রার ক্লান্তি নিয়েও কেন বিভ্রান্তি দূর করার চাপ তার মাথায়?
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: