তিন মাসেও হয়নি কেন্দ্রীয় নবীন বরণ,শিবিরের আয়োজন সোমবার
ববি প্রতিনিধি: | প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:৩৫; আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:৪৯
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হওয়ার প্রায় তিন মাস পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারেনি।
তবে এর মধ্যেই আগামী সোমবার (১৭ নভেম্বর) স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে নবীন বরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রাম করতে যাচ্ছে ইসলামি ছাত্রশিবির বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
এবছর ১৩ই আগস্ট ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নবীনদের স্বাগত জানাতে আনুষ্ঠানিক কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী হতাশা প্রকাশ করেছেন।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর কেন্দ্রীয়ভাবে একটি উৎসবমুখর নবীন বরণ অনুষ্ঠান তাদের নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে এবং বিশ্ববিদ্যালয় জীবন সম্পর্কে উৎসাহিত করতে সাহায্য করে। তিন মাস অতিবাহিত হলেও প্রশাসনের এমন উদাসীনতা তাদের হতাশ করেছে।
উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেরাব হোসেন জাকির বলেন, "তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো নবীন বরণ অনুষ্ঠিত না হওয়ায় আমরা শিক্ষার্থীরা গভীরভাবে হতাশ ও ক্ষুব্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই আয়োজনটি নতুনদের অনুপ্রাণিত করে, পরিচিতির সুযোগ সৃষ্টি করে এবং একটি ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অনুষ্ঠান না হওয়ায় নিজেদের উপেক্ষিত মনে করছি। আমরা দ্রুত নবীন বরণের তারিখ ঘোষণা এবং যথাযথ আয়োজনের দাবি জানাচ্ছি।"
২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের মধ্য দিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হওয়া থেকেই ছাত্রশিবির কমিটি ছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রকাশ্যে তেমন কোনো বড় ধরনের প্রোগ্রাম করতে না পারলেও সংগঠনটি প্রতি বছরই স্বল্প পরিসরে বা গোপনীয়তার সাথে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন বলে জানিয়েছেন শিবিরের একাধিক নেতা।
গত বছর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এই বছরেই প্রথম বারের মতো বড় পরিসরে নবীন বরণ প্রোগ্রাম করতে যাচ্ছে তারা। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। উক্ত অনুষ্ঠানে নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য পুরস্কার হিসাবে থাকছে:টি-শার্ট, শাল, ডায়েরি, কলম, চাবির রিং, বই এর আগে চলতি মাসের ৪ তারিখ 'এক শিক্ষার্থী এক কুরআন' প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২৫০০ কুরআন বিতরণ করেছে তারা, যেখানে প্রধান অতিথি হিসাবে ছিলেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম।
ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলেও সেটি আছে শুধুই খাতা-কলমে। ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ইশা, ছাত্রকাউন্সিল-সহ সকল রাজনৈতিক সংগঠন তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে অনায়াসে। এ বিষয়ে কয়েক দফায় প্রশাসনের সাথে কথা বলা হলেও এ পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। কার্যত রাজনৈতিক বয়ানের মতো তারা জানান, "বিষয়টি শুনেছি, বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, "বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির তার প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশ ও সৃজনশীল প্রতিভা বিকশিত করবার জন্য কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্রশিবির ২০২৪-২৫ শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গাইডলাইন ও নবীন বরণ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একাডেমিক এবং উচ্চশিক্ষায় পৌঁছানোর জন্য একটা গোছানো গাইড লাইন থাকবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা মিলন মেলা এবং দৃঢ় বন্ধন সৃষ্টি হবে। আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করতে বদ্ধপরিকর। ইসলামী ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষার আলোকে শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে, ইনশাআল্লাহ।"
নবীন বরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. তৌফিক আলম বলেন, "আজকে মিটিং ডেকেছি, মিটিংয়ে উপস্থিত সদস্যদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নবীন বরণের আয়োজন করা হবে।"

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: