রুটিন উপাচার্যের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাবির বিতর্কিত নিয়োগপ্রাপ্তরা

কে এ এম সাকিব, রাবি | প্রকাশিত: ২৬ জুন ২০২১ ২২:২৮; আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:৩০

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি দায়িত্বে থাকা (রুটিন) উপাচার্য আনন্দ কুমার সাহার একাডেমিক রেজাল্ট নিয়ে প্রশ্ন তুললেন অ্যাডহকের ভিত্তিতে বিতর্কিতভাবে নিয়োগপ্রাপ্তরা।

শনিবার (২৬ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই প্রশ্ন তুলেন। এই সময় তারা বলেন, রাবিতে শিক্ষক নিয়োগে বর্তমান যে নীতিমালা রয়েছে সেই নীতিমালা প্রণয়নের সাত সদস্য কমিটির সভাপতি ছিলেন বর্তমান রুটিন দায়িত্ব প্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা। সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত ১৩৮ জনের মধ্যে যে ৯ জন শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের যোগ্যতা তাঁর দ্বারা প্রণীত বিধিমালা থেকে অনেক উচুঁমানের।

বরং আমরাই প্রশ্ন রাখতে পারি প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহার একাডেমিক রেজাল্ট কি? আমাদের জানা মতে এই নিয়োগের বিপক্ষে প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহার সহিত যারা সহমত জ্ঞাপন করেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যকের একাডেমিক রেজাল্ট ভাল নয়।

সংবাদ সম্মেলনে তারা উপাচার্য আনন্দ কুমার সাহা কর্তৃক মন্ত্রণালয় প্রেরিত প্রতিবেদনের সমালোচনা করে প্রতিবেদনটি খন্ডন করে তাদের পক্ষে যুক্তিতর্কসমূহ তুলে ধরেন। তারা দাবি করেন, নিয়মিত উপাচার্যের দেওয়া নিয়োগ আদেশে রুটিন দায়িত্ব পালনকালে বর্তমান উপাচার্য এমন স্থগিত আদেশ দিতে পারেন না।

তারা আরো বলেন এ ধরণের ভুল ব্যাখ্যায় ভরা প্রতিবেদন মন্ত্রনালয়কে দেওয়া ষড়যন্ত্রের একটি অংশ। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ এবং উক্ত প্রতিবেদন প্রত্যাহারের দাবী জানাই।

তারা প্রতিবেদন খন্ডন করে যুক্তিসমূহ তুলে ধরে বলেন, তিনি উল্লেখ করেছেন, ৭৩ এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী উপাচার্য এ্যাডহকে নিয়োগ দিতে পারেন, তবে নিয়োগ দেওয়ার পর রিপোর্ট করতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে সিন্ডিকেটে রিপোর্ট করা হয়নি।

মুলত নিয়ম হলো; এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার পর পরবর্তী সিন্ডিকেটে রিপোর্ট প্রদান করতে হয়। গত ০৫.০৬.২০২১ ইং তারিখ এই নিয়োগ হওয়ার পর অদ্যবধি কোনো সিন্ডিকেট হয় নাই।

তিনি উল্লেখ করেছেন; রাবির রেজিষ্ট্রার মহোদয় উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও অন্য একজন কে দায়িত্ব দিয়ে নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে,যা ৭৩ এর এ্যাক্টের ব্যত্যয়।

অথচ এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আপনারা সকলেই জানেন রাবির রেজি. মহোদয় গত ০৫.০৬.২০২১ এবং ০৬.০৬.২০২১ ইং তারিখ অজ্ঞাত কারনে আত্মগোপনে ছিলেন এমনকি তাঁর নিজ ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ ছিলো। গত ০৭.০৬.২০২১ ইং তারিখ সে রাবিতে এসে তাঁর আত্মগোপনে যাওয়ার রহস্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন।

এখানে বর্তমান রুটিন উপাচার্য সত্যকে লুকিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। আপনাদের আরো অবগত করা প্রয়োজন যে, রেজি; মহোদয়ের চাকরি ২৪ ঘন্টা যে কোন সময় তাকে দায়িত্ব পালনে বদ্ধপরিকর। তার দীর্ঘ সময় অনুপস্থিতি এক্ষেত্রে উপাচার্য মহোদয় অধীনস্থ কোন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়ে কার্য সম্পন্ন করতে পারেন। আরো উল্লেখ করা প্রয়োজন.৭৩ এর এ্যাক্ট অনুযায়ী উপাচার্য মহোদয়ের উপর অর্পিত ক্ষমতা বলে রেজিঃ উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তিনি অন্য কোন কর্মকর্তা দিয়ে কার্য সম্পাদন করতে পারেন।

তিনি উল্লেখ করেছেন; যে সকল পদের বিপরীতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে এবং প্রক্রিয়াধীন সে সকল জায়গায় এ্যাডহক দেওয়া আইনসিদ্ধ নয়।

অথচ এটাও মিথ্যা। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত পদের বিপরীতে এডহকে নিয়োগ দেওয়া হয় নি। বিজ্ঞপ্তি র বাইরে ৩০০ এর অধিক শুন্য পদ রয়েছে। সেগুলোর বিপরীতে এই এডহক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেছন, রাবির ৭৩ এর এ্যাক্ট অনুযায়ী কোন বিভাগে বা অফিসে জনবল নিয়োগ দেওয়া হলে বিভাগ বা অফিসের প্লানিং কমিটির বা কর্তৃপক্ষের চাহিদা পত্র থাকতে হবে।

এখানেও তিনি অজ্ঞতা দেখিয়েছেন। এডহক নিয়োগের জন্য নয়, কোন চাকুরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ক্ষেত্রে এই চাহিদাপত্র প্রয়োজন হয়। আবার এক্ষেত্রেও উপাচার্য যদি তাদের কাছে চাহিদা পত্র চেয়ে না পান তাহলে তিনি নিজ ক্ষমতাবলে সার্কুলার দিতে পারেন।

সর্বশেষ উল্লেখ করেছেন; শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসির নিয়মিত নিয়োগ এবং এ্যাডহক নিয়োগের উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল।

আমরা আপনাদের নিকট মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনামাটি পেশ করছি যেখানে সুস্পষ্ট ভাবে লেখা রয়েছে অনুরোধ করা হলো। অনুরোধ কখনও নিষেধাজ্ঞা হতে পারে না।

অনুরোধ সম্বলিত পত্রটি আসার পর সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আব্দুস সোবহান স্যার উক্ত পত্রটি ক আকারে মার্ক করে পত্রটি স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন ১০.০১.২০২১। যার প্রেক্ষিতে রাবিতে একজনকে অফিসার হিসেবে এডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এ ব্যাপারে তারা কিছু বলছেন না। একই বিশ্ব বিদ্যালয়ে দুই নিয়ম চলতে পারে?আপনারা কি মনে করেন?

এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার দিনই তাৎক্ষনিক ভাবে মন্ত্রনালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন আমাদের জানামতে তদন্ত কমিটি এ নিয়োগকে অবৈধ ঘোষনা করেনি বা শিক্ষা মন্ত্রনালয় এ নিয়োগকে অবৈধ বলেনি কিন্ত রুটিন দায়িত্ব প্রাপ্ত উপাচার্য কোন ক্ষমতা বলে এ নিয়োগকে অবৈধ অ্যাখ্যা দিয়ে আমাদেরকে কর্মে যোগদান করতে দিচ্ছেন না।

আমরা মনেকরি একজন রুটিন দায়িত্ব প্রাপ্ত উপাচার্য তার কর্তব্য দায়িত্ব এবং ক্ষমতা ভুলে গিয়ে মিথ্যাচার এবং একের পর এক ৭৩ এ্যাক্ট লঙ্ঘন করছেন। একজন রুটিন উপাচার্য পদায়ন, বদলি, ফাইন্যান্স কমিটির মিটিং ও সিন্ডিকেট করতে পারেনা। ইতিমধ্যে তিনি পদায়ন এবং বদলি করেছেন এখন তিনি ফাইন্যান্স ও সিন্ডিকেট মিটিং করতে চান।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top