মসজিদ মিশন একাডেমী

অধ্যক্ষর জালিয়াতি, সত্যতা পেয়েছে শিক্ষা বোর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট ২০২০ ২১:৩৪; আপডেট: ২৭ আগস্ট ২০২০ ০০:১০

রাজশাহী মসজিদ মিশন একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ

রাজশাহী মসজিদ মিশন একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ অধ্যক্ষর জালিয়াতির সত্যতা পেয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের তদন্তকারী কর্মকর্তা। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সচিব আবু হায়াত মো: রহমতুল্লাহ তিন পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে অধ্যক্ষর জালিয়াতির তথ্য-প্রমাণ বর্ননা করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয় প্রলোভিত হয়ে অধ্যক্ষ এ ধরণের অনৈতিক কাজ করেন।

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন অনিয়ম-অব্যবস্থাপনায় ভেঙ্গে পড়ে রাজশাহী মসজিদ মিশন একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ প্রশাসনিক কাঠামো। একাডেমীর অধ্যক্ষ মো: নূরুজ্জামান খান এর বিভিন্ন নিয়ম বর্হিভূত কর্মকান্ডের প্রভাব পড়ে শিক্ষা ব্যবস্থাপনাতেও। সর্বশেষ অধ্যক্ষর জালিয়াতি করে গভর্নিং বডির কমিটি গঠন করাকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের মাঝে ব্যপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। যার প্রেক্ষিতে গত ১৫ জানুয়ারী মসজিদ মিশন সংস্থা রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে জালিয়াতির অভিযোগ করেন।

তথ্যসূত্র থেকে দেখা গেছে, সাবেক শিবির নেতা ও অধ্যক্ষ মো: নূরুজ্জামান খান জামায়াতের উপর মহলের নেতৃবৃন্দের সাথে লবিং-গ্রুপিং করে ২০১৯ সালে অধ্যক্ষর পদ বাগিয়ে নেন। এরপর একাডেমীতে নিজস্ব বলয় তৈরি করে বিরোধীদের কোন ঠাসা করেন। বিভিন্ন অনিয়মের সাথে সর্বশেষ গভর্নিং বডির কমিটিও জালিয়াতি করেন। একাডেমীর সূত্র জানায়, তাঁর বিভিন্ন অর্থিক অনিয়ম থেকে বাঁচতে এই জালিয়াতি করেন।

সাম্প্রতিক সময় মসজিদ মিশন একাডেমীর কয়েক কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ তুলেন রাজশাহী সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা। আর একাডেমীর শিক্ষক-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন এই অর্থিক অনিয়ম থেকে বাঁচতেই অধ্যক্ষ বিভিন্ন অনিয়মসহ জালিয়াতির আশ্রয় গ্রহন করেন।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে দাখিলকৃত অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, গত ১২ জানুয়ারী মমিএ/রাজ/১৮৬/২০২০ নম্বর স্মারকে সংস্থার সভাপতির সাক্ষর জালিয়াতি করে অধ্যক্ষ তার পছন্দের ব্যক্তিদের নাম দিয়ে প্রস্তাবিত গভর্ণিং বডির তালিকা শিক্ষা বোর্ডে প্রেরণ করে বোর্ড থেকে অনুমোদন নেয়। পরে জালিয়াতির বিষয়টি জানাজানি হলে ১৫ জানুয়ারী বাংলাদেশ মসজিদ মিশন রাজশাহী জেলা সভাপতি মু.নুরুল ইসলাম অধ্যক্ষর জালিয়াতি উল্লেখ করে বোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডর পক্ষ থেকে কলেজ পরিদর্শক হাবিবুর রহমান গত ১১ ফেব্রয়ারী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের স্মারক নং: ১/ কল/রাজ/৩৯৩(২য়)/ ৩১ এর মাধ্যমে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সচিব আবু হায়াত মো: রহমতুল্লাহ কে উক্ত ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন।

তিনি রাসিক সচিব গত ৫ মার্চ স্মারক নং: ৪৬.১২.০০০০.০০৩.২৭.৫৭৭.২০.৫৭০ এর মাধ্যমে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তিন পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদনে অধ্যক্ষর জালিয়াতির ঘটনার সত্যতা উল্লেখ করে অধ্যক্ষ প্রলোভিত হয়ে এ ধরণের জালিয়াতি করেছেন বলে মন্তব্য করা হয়। পাশাপাশি রাসিক সচিব অধ্যক্ষর জালিয়াতি করা কমিটিকে অবৈধ বলে উল্লেখ করেন।

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর গত ১ জুন স্মারক: ১/কল/রাজ/৩৯৩(২য়)/৪৯ চিঠিতে একাডেমীর অধ্যক্ষকে শো-কজ করা হয়। এসময় তিনি কোন উত্তর না দিয়ে সময় ক্ষেপন করেন বলে বোর্ড সূত্র জানায়। এদিকে মসজিদ মিশন একাডেমী সংশ্লিষ্টরা অধ্যক্ষর সকল আর্থিক অনিয়মসহ বিভিন্ন জালিয়াতির সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করেন।
 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top