সরকারি অর্থ অপচয়ে প্রকল্প গ্রহণ

রাসিকের ত্রুটি যুক্ত ফুটওভার ব্রিজে আগ্রহ নেই পথচারীদের

বিশেষ প্রতিনিধঃ | প্রকাশিত: ১২ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৪৮; আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৪৭

সংগ্রহীত

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের উদোগে নির্মিত ফুটওভার ব্রিজের উপর রয়েছে টিকটকারদের আনাগোনা। অথচ বিপুল অর্থ ব্যায়ে নিয়ে নির্মিত ফুটওভার ব্রিজে আগ্রহ নেই পথচারীদের। এদিকে রুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষাবিদের মতে, এসব ফুটওভার ব্রিজের একন কোনোও প্রয়োজন নেই। অপর দিকে নগরবাসী বলছেন, শুধুমাত্র সরকারি অর্থ অপচয় করার জন্য এসব প্রকল্প হাতে নেয়া হয়।’


রাসিক সূত্র মতে, রাজশাহী নগরীতে ৮টি ফুটওভার নির্মাণকাজ হাতে নেয় রাসিক কর্তৃপক্ষ। পথচারীদের রাস্তা পারাপারের জন্য রাসিকের পলাতক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সময়ে এ ব্রিজগুলো নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এর মধ্যে রাজশাহী নগরীর নিউ গভঃমেন্ট ডিগ্রী কলেজ গেট, লক্ষীপুর মিন্টু চত্ত্বর, নওদাপাড়া বাজার, তালাইমারী মোড়, বিনোদপুর মোড় ও অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে নির্মাণকৃত ৬টি ফুটওভার ব্রীজের কাজ শেষ হয়। অপর দিকে নগরীর মনিচত্বর ও মিশন গার্লস স্কুলের সামনে ফুটওভার ব্রিজের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।

নগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় দুইটি প্যাকেজে প্রায় ৫০ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ে এসব ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণ করা হয়। নির্মাণকাজ পেয়েছে মাসুদ স্টিল ডিজাইন বিডি লি. ও এমএসসিএল এ্যান্ড এমএসডিবিএল নামের দুটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি ফুটওভার ব্রীজের উচ্চতা ৫.৮ মিটার ও প্রশস্ততা ৩.৬ মিটার। ফলে অনেক উঁচুতে পায়ে হেঁটে উঠে রাস্তা পার হয়ে আবার নিচে নামার জন্য কেউ এই ব্রিজ ব্যবহার করছেন না। রাস্তার মাঝখান দিয়েই পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা। ফলে কোনোই কাজে আসছে না এ ব্রিজগুলো।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ‘ব্রিজের নিচ দিয়ে রাস্তা পারাপারের জন্য যথেষ্ট জায়গা আছে। সড়ক বিভাজকেও নাই গ্রিল। যার কারণে কেউ ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করেনা। আর রাজশাহীর শহরে এতো গাড়ির চাপও নাই যে গাড়ীর ভয়ে মানুষ ফুটওভাব ব্রিজ দিয়ে কষ্ট করে রাস্তা পার হবে। এমনিতেই রাস্তা পার হতে যেখানে লাগে সর্বোচ্চ ৩০ সেকেন্ড। সেখানে ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে গেলে লাগবে অন্তত কয়েক মিনিট। তাহলে কে উঠবে ওই ব্রিজে। কোনো সম্ভাবতা যাচাই-বাছাই না করেই এই ব্রিজগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন শুধুমাত্র সরকারি অর্থ অপচয় করার জন্য এসব প্রকল্প হাতে নেয়া হয়।’ যার কারণে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হলেও সেখান দিয়ে পথচারীরা চলাচল করছেন না।

ফুটওভার ব্রিজের পাশে ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘ এসবে মানুষের কোনো কাজেই আসে না। কেউ তো উঠে না। সরকারি টাকা লুটপাটের জন্য এসব ব্রিজ করা হয়েছে।’ ব্রিজের নিচের অপর ফল ব্যবসায়ী বলেন, ‘টিকটক আর ভিডিও করতে এসব ব্রিজে উঠে। সাধারণ মানুষ উতো উঁচু ব্রিজে দিয়ে পারাপার হবে ক্যান? নিচ দিয়েই তো আরামে যাওয়া যায়। তাহলে কষ্ট করে ওত উঁচু দিয়ে উঠবে ক্যান।’

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. এমএসটি ইলমে ফরিদতুল এক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এগুলো নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা আগামীতে থাকতে পারে। তবে এখন এগুলোর কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের যেখানে সমস্যা নেই, সেখানে আগাম সমাধানের দরকার কী? এগুলো বানানোর সময় প্লানিং ও ট্রাসপোর্ট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কেউ ছিল না বলেই এগুলো মিসিং হয়েছে। একারণেই এগুলো মানুষ ব্যবহার করছে না।’
রাসিকের প্রশাসক ও রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ফুটওভার ব্রিজ ব্যহারে মানুষ এখনো অভ্যাস্ত নয়। তবে যেটি হয়ে গেছে, সেটি আর তো নষ্ট করা যাবে না।’ এগুলো ব্যবহারের উপযোগী করতে আমরা কাজ করছি। নির্মাণেও কিছু ত্রুটি আছে।



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top