বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ড
৪৪ মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর
রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ৩ মার্চ ২০২৪ ১২:২৫; আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ২০:৩৮

রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪৬ জনের মধ্যে ৪৪ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় বাকি দুজনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়নি। ডিএনএ পরীক্ষার পর তাদের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার রাতের ওই অগ্নিকাণ্ডে আহত ১১ জন এখনো রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। এদের মধ্যে পাঁচজন এখনো শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
গতকাল স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেন ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একেএম হেদায়েতুল ইসলাম। তিনি জানান, দুজনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়নি। তারা হলেন অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ও নাজমুল ইসলাম। অভিশ্রুতির মরদেহ আছে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে আছে নাজমুলের মরদেহ।
সাংবাদিক অভিশ্রুতির নাম বিভিন্ন নথিতে ‘বৃষ্টি খাতুন’ হিসেবে পাওয়া গেছে। একেএম হেদায়েতুল ইসলাম জানান, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের পর অভিশ্রুতির মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। আর নাজমুল হাসানের স্বজনদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর আঙুলের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) পরীক্ষা করা হয়েছে। তার আঙুলের ছাপের সঙ্গে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বনগ্রামের বৃষ্টি খাতুনের জাতীয় পরিচয়পত্রের আঙুলের ছাপের মিল রয়েছে। বৃষ্টি খাতুনের বাবার নাম সবুজ শেখ, মায়ের নাম বিউটি বেগম।
এ বিষয়ে রমনা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া বলেন, ‘অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টির মরদেহ হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার পর তার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’ অভিশ্রুতির বাবা দাবি করা সবুজ শেখ বলেন, ‘ডিএনএ পরীক্ষার পর হয়তো মেয়ের মরদেহ আমাদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হবে।’
অগ্নিকাণ্ডে আহতদের চিকিৎসায় ১৭ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডের প্রধান করা হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. সামন্ত লাল সেনকে। গতকাল শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী জানান, এখানে ১১ জন ভর্তি আছেন। সুস্থ হয়ে ওঠায় ছয়জনকে ছেড়ে দেয়া হবে। বাকি পাঁচজনের কেউই শঙ্কামুক্ত নন। এ কারণে তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
গ্রিন কোজি কটেজে আগুন লাগার ঘটনায় মামলা করেছেন রমনা থানার এসআই শহিদুল ইসলাম। এতে হত্যাচেষ্টা ও অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে চার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে। ব্যক্তি হিসেবে আসামি করা হয়েছে ফাস্টফুডের দোকান ‘চুমুক’-এর মালিক আনোয়ারুল হক, ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরাঁর মালিক সোহেল সিরাজ ও ভবনের ব্যবস্থাপক মুন্সি হামিমুল আলম বিপুলকে।
আর ভবন মালিক হিসেবে আসামি করা হয়েছে আমিন মোহাম্মদ গ্রুপকে। আসামিদের মধ্যে আনোয়ারুল ও হামিমুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে আরো দুজনকে। গ্রেফতার হওয়া চারজনকে গতকাল দুদিনের রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি দিয়েছেন মহানগর হাকিম নুরুল হুদা চৌধুরী।
মামলায় নাম আসার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল গণমাধ্যমে লিখিত বক্তব্য পাঠায় আমিন মোহাম্মদ গ্রুপ। এতে প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ বিভাগের প্রধান গাজী আহম্মেদ উল্লাহ বলেন, ‘গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের মালিক মোহাম্মদ গ্রুপের নয়। আমিন মোহাম্মদ গ্রুপ শুধু ডেভেলপার হিসেবে ভবনটি নির্মাণ করেছে। নির্মাণ শেষে ২০১৫ সালে ভবনটি মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: