সংসদে ১৬৫টি বিলের প্রায় সবই গণবিরোধী: রিজভী

রাজ টাইমস ডেস্ক : | প্রকাশিত: ৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:৩৭; আপডেট: ৫ মে ২০২৪ ০৩:১৭

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ২৭২ দিনের কার্যদিবসে এই সংসদকে আওয়ামী দলীয় আড্ডাবাজির আখড়ায় পরিণত করা হয়েছিল। ৫ বছর ধরে অবৈধ সংসদে যে ১৬৫টি বিল পাস করেছে তার প্রায় সবই গণবিরোধী। শুক্রবার বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, গত ৫ বছর ধরে ভুয়া এমপিরা সংসদে দাড়িয়ে কেবল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমান এবং বিএনপিকে নিয়ে মিথ্যাচার, খিস্তি-খেউড়, কুৎসা উদ্গীরন আর আওয়ামী কোটারী স্বার্থ চরিতার্থ করেছেন।

সংসদকে জনসম্পৃক্তহীন কথিত জনপ্রতিনিধি দাবিদাররা বিএনপিসহ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মিথ্যাচার- প্রপাগান্ডা-হুমকি-ধামকীর বক্তব্য চর্চার ময়দান বানিয়ে ফেলেছিল। তারা সাধারণ জনগণের জন্য কল্যাণকর কিছু করেনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত মাসে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলেছে, সংসদ পরিচালনায় প্রতি মিনিটে গড় ব্যয় হয় প্রায় ২ লাখ ৭২ হাজার টাকা। একাদশ জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসায় ৬১ ঘণ্টা ২৬ মিনিট ব্যয় হয়েছে। এর আর্থিক মূল্য প্রায় ১০০ কোটি ৩৯ লাখ ৩৩ হাজার ৭০৪ টাকা।

কোরাম সংকটের সংসদের ক্ষতি প্রায় ৮৯ কোটি ২৮ লাখ আট হাজার ৭৭৯ টাকা। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারনে সরকারি দল একচ্ছত্র ক্ষমতার চর্চা করেছে। তার মানে সংসদকে আওয়ামী লীগ চিরদিন ক্ষমতায় থাকার খায়েশ পূরণে আপন স্বার্থে যা ইচ্ছা তাই করেছে।

তবে শেষ হওয়া অবৈধ সংসদই আওয়ামী লীগের শেষ সংসদ। তাদের আর ফিরে যাওয়ার পথ নেই। জনগণ চূড়ান্ত লড়াইয়ে নেমেছে। তাদের জীবনবাজী রাখা উদ্বেল আন্দোলনে বিজয় এখন নিশ্চিত।

তিনি বলেন, আমরা সারাদেশ থেকে খবর পাচ্ছি -বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রেখে তথাকথিত নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে ভোটার বাড়াতে নতুন এক অভিনব কদর্য মিশনে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী। তার নির্দেশেই সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় কার্ডের মাধ্যমে সুবিধা ভোগী প্রায় দুই কোটি মানুষকে টার্গেট করেছে আওয়ামী লীগ এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় অনুগত প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

গত কয়েকদিন যাবৎ প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায়, প্রতিটি উপজেলায় সরকারের বিভিন্ন দপ্তর হতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সুবিধা প্রাপ্ত এবং উপকার ভোগীদের নিয়ে সমাবেশ করছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এবং নেতারা। প্রায় প্রতিটি সমাবেশে জেলা প্রশাসক, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ইউএনওসহ থানা ওসিরাও উপস্থিত থাকছেন।

রিজভী বলেন, প্রতিটি গ্রাম থেকে কার্ডধারী সুবিধা ভোগীদের সমাবেশে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে। না গেলে কার্ড বাতিলের হুমকি দেয়া হচ্ছে। ভয়-ভীতি প্রদর্শক করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের এই সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের কথিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অবহিতকরণ এবং আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে নৌকায় ভোট প্রদানের নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।

সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় সকল মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, স্বামী পরিত্যক্তা, ভিজিএফ, টিসিবি, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ সকল ধরনের সুবিধা ভোগীদের কার্ড ভোটের আগে জমা দেয়া এবং ভোট কেন্দ্রে এসে তা ফেরত নেয়া হবে বলে অধিকাংশ সমাবেশে জানানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ভোট কেন্দ্রে সন্তোষজনক মাত্রায় ভোটার উপস্থিতি এবং ভোট প্রদানের শতকরা হার বড় আকারে বিদেশিদের দেখানোর জন্য এই ভয়াবহ কূটকৌশল নিয়েছে।

এসময় গত ২৪ ঘন্টায় সারাদেশে বিএনপি এবং এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার মামলা ও আসামীর সংখ্যা তুলে ধরেন তিনি। রিজভী জানা, এসময়ে ২৯২ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়ে, ১১টি মামলা দায়ের হয়ে এবং এসব মামলা ১০৪৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top