গুরুত্বহীন খালেদা জিয়া !

নতুন নেতৃত্বের পরিকল্পনায় তারেক

আবদুর রহিম | প্রকাশিত: ২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২১:২৭; আপডেট: ২১ মে ২০২৪ ২০:৪২

ব্যক্তি নেতৃত্বেই বিএনপি চলছে, ভাঙছে। ভেঙে পড়েছে চেইন অব কমান্ড। দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আদর্শ থেকে সরে এসেছে বিএনপি। দল পরিচালনায় সাবেক সেনাপ্রধানের আদর্শ গ্রহণ করা হচ্ছে না। দেশের বিভিন্ন সেক্টরের জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিদের পরামর্শও গ্রহণ করা হচ্ছে না। দেয়া হচ্ছে না সৎ, যোগ্য, ত্যাগী ও মেধাবী নেতাকর্মীদের খুঁজে দায়িত্ব।

এ পরিস্থিতিতে সাবেক সেনাপ্রধানের স্ত্রী, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ারও গুরুত্ব কমেছে। খালেদা জিয়াকে ডার্ক সাইডে রেখে নতুন নেতৃত্বের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন তারেক রহমান। খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে তারেক রহমান তার পছন্দের নেতাদের কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন।

এ নিয়ে দলের ভেতরে সিনিয়র নেতাদের মধ্যে কিছুটা অস্বস্তি থাকলেও প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলছেন না। রাজনীতির শেষ সময়ে সম্মান হারানোর ভয়ে চুপ হয়ে আছেন জ্যেষ্ঠ নেতারা। দীর্ঘ সময় থেকে আন্দোলনের ইস্যু নষ্ট করেছে বিএনপি। গুলশান থেকে নয়াপল্টন, কোথাও নেই জাতীয়তাবাদ! ক্ষুব্ধ আদর্শবাদী নেতারা। খালেদা জিয়ার বিষয়ে তারেকের চাওয়া কী এখনো বিএনপিতে ধোঁয়াশা বলে মনে করছেন শীর্ষনেতারা।

বিএনপি সূত্রগুলো বলছে, খালেদা জিয়াসহ নেতাকর্মীদের মুক্তি ও দাবি আদায়ের কর্মসূচি নিয়ে এ মুহূর্তে রাজপথে যাবে না বিএনপি। ড. কামালকে সংসারে এনে, কয়েকজনকে সংসদে পাঠিয়ে সব হারিয়েছে।

তাই সব দিক বিবেচনা করে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি কৌশলে দলকে শক্তিশালী করতে পদক্ষেপ নিয়ে এগোচ্ছে। সব স্তরে সাংগঠনিক পুনর্গঠনের মাধ্যমে মাঠের নেতাদের চাঙ্গা করা হচ্ছে। তারেক রহমানের অবস্থান মজবুত করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টানা তিন দফায় ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি অনেক দিন থেকেই কোণঠাসা। রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে নিজেদের লক্ষ্য নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় কৌশল গ্রহণেও ব্যর্থ হচ্ছে দলটি।

জামিনে মুক্ত থাকলেও সক্রিয় রাজনীতিতে নেই দলের সাজাপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার সিদ্ধান্ত ও পরামর্শও সরাসরি দলে গ্রহণ হচ্ছে না। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে পরিচালনা করছেন দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম।

নেতাকর্মীরা মনে করছেন, দুই শীর্ষস্থানীয় নেতা রাজনীতির মাঠে সরাসরি না থাকায় বড় সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না দলটি। সময়ের সঙ্গে রাজনীতির সঠিক পদক্ষেপ নেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। বিএনপির কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না। এ পরিস্থিতিতেই গতকাল উদযাপিত হয় বিএনপির ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

ভোর ৬টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১১টায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ, সাড়ে ১১টায় মহানগর দক্ষিণ ও বেলা ১২টায় উত্তরের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

বিকাল ৩টায় বিএনপির উদ্যোগে ভার্চুয়াল আলোচনা সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আলোকে সারা দেশে জেলা-উপজেলায়ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি যথাযোগ্যভাবে পালিত হয় বলে জানা গেছে।

৭৫ বছর বয়সি খালেদা জিয়া বর্তমানে গুলশানে তার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় রয়েছেন। তিনি আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজায় কারাজীবন শুরু করেন খালেদা জিয়া, পরে চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজার রায় আসে।

তার বিরুদ্ধে আরও ৩৪টি মামলা রয়েছে। সব মিলিয়ে খালেদা জিয়ার বিষয়ে করণীয় নিয়ে দলগতভাবে বিএনপি এক্ষেত্রে নিশ্চুপ, খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের কথা বলতে বারণ করা হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

সেক্ষেত্রে আগের মতো খালেদা জিয়ার পরিবারই ছুটছে জামিনের আবেদনপত্র নিয়ে। তার পরিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে মুক্তির এক্সটেনশন চেয়ে আবেদন করেছে। গত সপ্তাহে পরিবারের পক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার এ আবেদন করেন।

আবেদনে করোনাকালীন দুর্যোগে গত ২৫ মার্চ থেকে ছয় মাসের জামিনে থাকা খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়নি এবং তার সুচিকিৎসা নিশ্চিতের জন্য শারীরিক অসুস্থতার কোনো পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি বলে উল্লেখ করা হয় বলে বিভিন্ন সূত্রের দাবি।

বর্তমান বিএনপির করুণ পরিস্থিতির জন্য বড় একটি অংশ মির্জা ফখরুল ইসলামকে দায়ী করেন। নরম ফখরুলের কাছ থেকে সব সময় ক্ষমতাসীন দল সুবিধা নিচ্ছে, এমন অভিযোগ দলের ভেতরে-বাইরে রয়েছে। দলের সব কঠিন ইস্যুগুলোও তিনি সহজভাবে গ্রহণ করছেন! বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়েও তিনি পজেটিভ ছিলেন! ড. কামালের ঐক্যতেও তিনি পজেটিভ ছিলেন!

একাদশ সংসদ নির্বাচনে সকাল ১০টার আগেই অনেক প্রার্থী রাতে সিল মারার অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়, তখনো মহাসচিব পজেটিভ ভাষায় গণমাধ্যমকে বলেছেন, এখনো জয়ের ব্যাপারে বিএনপি আশাবাদী। ঐক্যের কথা বলে বলে দলের নেতাকর্মীদেরও ধোঁকা দিয়েছেন বলে বড় অংশের দাবি। ফখরুলের সঙ্গে আরও কয়েকজন সিনিয়র নেতাও রয়েছেন।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ১৯৮১ সালে দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর প্রথমবার সংকটে পড়েছিল বিএনপি। ’৯০ দশকে জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পরও দ্বিতীয়বার গভীর সমস্যার মুখে পড়ে দলটি।

২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের সময় খালেদা জিয়াসহ বিপুলসংখ্যক শীর্ষ নেতা কারাবন্দি হলে তৃতীয় দফায় দলটি নেতৃত্ব সংকটে পড়েছিল। এভাবে নানা সংকট ও ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়েই দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে এখনো টিকে আছে। বিশেষ করে ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে বিপর্যস্ত হওয়ার পর একযুগেও আর দলটি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।

বিএনপির দুঃসময় কাটতে পারে বলে মন্তব্য করে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার আমার সংবাদকে বলেছেন, দলীয় প্রধানের বিষয়ে কথা বলার পাশাপাশি সরকারের জনবিরোধী কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করতে হবে বিএনপিকে। সে ক্ষেত্রে তারা অনেক পিছিয়ে। তাদের এটিও করা উচিত। তাহলেই হয়তো বিএনপির দুঃসময় কাটতে পারে।

বিএনপিকে জনগণের আস্থা অর্জনে বিশ্বাসযোগ্য নেতৃত্বের প্রয়োজন। তারা ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে কারা দেশ পরিচালনা করবেন, তা স্পষ্ট করা প্রয়োজন। এ নেতৃত্বকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হতে হবে। একই সঙ্গে শ্যাডো ক্যাবিনেট প্রক্রিয়া অনুসরণ করা দরকার।

সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আমার সংবাদকে বলেন, দেখুন এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বিএনপি ক্ষমতায় নেই, তবুও এ দীর্ঘ সময়ে কেউ বিএনপিকে ছেড়ে চলে যায়নি, দলে কোনো ভাঙনও তৈরি হয়নি।

দলের এই সংকট সময়েও সকল স্তরের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন। বিএনপির সঙ্গে ২০ দলের যে ঐক্য সেটিও মজবুত রয়েছে। সময়ের আলোকে বিএনপিসহ আরও কিছু দল নিয়ে যে ঐক্যফ্রন্ট তৈরি হয়েছে তাতেও কোনো সমস্যা নেই।

এক সঙ্গে দলের, জোটের, ঐক্যফ্রন্টের সবাই এই সরকার থেকে জনগণকে মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি। অতীতে বিএনপির অনেক দুঃসময় গেছে, অনেক পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে কিন্তু দলের এই সংকট সময়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের যৌথ নেতৃত্বে সুশৃঙ্খল রয়েছে।

খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনের ব্যাপারে বলেন, ‘আমরা সবসময় বলেছি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়েছে, যে সাজা তার প্রাপ্য না এবং জামিনটা তার প্রাপ্য ছিলো। আমরা আশা করি, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে।’

সংকট-দুঃসময় মোকাবিলায় বিএনপির সব নেতাকর্মী দলের অনুগত দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী আমার সংবাদকে বলেন, বিএনপি অতীতের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থানে আছে। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ওপর অন্যায়ভাবে আক্রোশ দৃশ্যমান হওয়ায় বিএনপিতে কোনো ভুল বোঝাবুঝি নেই।

দেশের জনগণ ও দলের নেতাকর্মীরা সবই বুঝেন। দলের দুঃসময়ে, সংকট মোকাবিলায় সব নেতাকর্মী বুদ্ধিদীপ্ত ও চৌকসের পরিচয় দিয়ে যার যার অবস্থান থেকে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

আমির খসরু আরও বলেন, বিএনপি জনগণের রাজনীতি করে, জনগণের শক্তিতে বিএনপি বিশ্বাসী, তাই রাজনীতির এই দুঃসময়ে এই দলের প্রতি মানুষের আস্থাও অতীতের চেয়ে আরও বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিএনপির কিছু ভুলও রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের আদর্শ থেকে দূরে থাকা বিএনপির মারাত্মক ভুল। এছাড়া একতাবদ্ধ না হওয়া এবং জনগণকে সম্পৃক্ত না করাটাও বিএনপির রাজনীতির নেতিবাচক দিক। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিএনপি একা এ অবস্থা থেকে দেশকে বের করে আনতে পারবে না। সব রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিয়ে সর্বদলীয় ঐক্যের মাধ্যমে বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন আনতে হবে।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ আমার সংবাদকে বলেন, ‘খালেদা জিয়া কারাগারে থাকাবস্থায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দক্ষভাবে দল পরিচালনা করেছেন। তার নেতৃত্ব সবাইকে আকৃষ্ট করেছে। তিনি রাত দিন সব সময় সঠিকভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন।

দলের সবাই সন্তুষ্টি। কেন্দ্র থেকে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন, এখনো নিয়মিত করে যাচ্ছেন। দলের দুর্দিনে তারেক রহমানের নেতৃত্ব দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করেছে। আমরা সবাই তার নেতৃত্বে খুশি।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘টানা তিন দফায় ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। স্বাভাবিকভাবে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

বিএনপির কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না। অবশ্য মামলা হামলার কারণে নেতাকর্মীরা বেকায়দায় রয়েছেন। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য যা যা প্রয়োজন, তা চেষ্টা করছে বিএনপি।

দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পারলে দলটির জন্য ভালো তো বটেই, দেশের জন্যও ভালো। তবে এ সময়টা কবে আসবে, বলা কঠিন। এটাও ঠিক, জামায়াতকে ত্যাগ করতে পারলে বিএনপির ঘুরে দাঁড়াতে বেশি সময় লাগবে না।’

সৌজন্য: আবদুর রহিম; দৈনিক আমার সংবাদ, ঢাকা-02-09-2020। সূত্র : http://dailyamarsangbad.com/newspaper/241134/ দলে-গুরুত্বহীন-খালেদা#   

আন্দালীব/02



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top