বাগমারায় হিমাগারে মজুতকৃত আলু সংকট

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা | প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২০ ০০:৩০; আপডেট: ৫ মে ২০২৪ ২০:৩৯

রাজশাহীর বাগমারায় সরকারের বেধেঁ দেয়া দামে আলু মিলছে না। হঠাৎ করে খুচরা বাজারে ৩০ টাকা, পাইকারী বাজারে ২৫ টাকা ও হিমাগার পর্যায়ে ২৩ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রির নির্দেশনায় বাজারে আলু সংকট দেখা দিয়েছে।

পেঁয়াজের পর আলুর দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ ক্রেতারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। এমনটি হওয়ার কারণ হিসাবে বাজার ব্যবস্থার ত্রু টিকে কৃষকরা দায়ি করছেন। এক সময় আলুচাষে বেশ লাভ থাকলেও বিগত ৫/৬ বছর ধরে এলাকার কৃষকরা আলু করে বার বার লোকশানের মুখে পড়ে। তবে এলাকার প্রধান অর্থকারী ফসল হিসেবে এ চাষ কৃষকরা ছাড়তে পারেনি।

কৃষকরা মওসুমে আলু বিক্রির পর পুনরায় আলু চাষের জন্য প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও বেশী দামের আশায় আলু স্টোরে মজুত করে। কিন্তু সরকারের বেধেঁ দেওয়া দামে সে আসা গুড়ে বালি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা গেছে, বাগমারা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় আলু চাষের জন্য মাটি উপযোগী। উর্ব্বর মাটি ও অনুকূল আবহাওয়ায় প্রচুর পরিমানে আলু চাষ হয়। এক সময়ে আলুর ভালো ফলন ও দাম পেয়ে বেশী লাভের আসায় অধিক আলু চাষে কৃষকরা ঝুঁকে। কিন্তু গত কয়েক বছরে মওসুমের শুরু থেকে আলুর মূল্য হ্রাস ও হিমাগার ভিত্তিক চক্রের কারণে কৃষকরা আলু নিয়ে বিপাকে পড়ে। ফি বছর আলুর লোকশানে অনেক কৃষককে দিনের পর দিন ঋণের বুঝা মাথায় বইতে হয়।

এ বছর উপজেলায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়। মওসুমে আলু বিক্রির পর প্রতিবারের ন্যায় অতিরিক্ত আলু এলাকার কৃষকরা স্টোরজাত করে। এলাকায় যে পরিমান স্টোর রয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় সংকলণ ক্ষমতা কম।

উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌর সভা মিলে ৪টি স্টোরে ৮ লক্ষ বস্তা রাখা যায়। স্টোরগুলোর ধারন ক্ষমতার অতিরিক্ত আলু হওয়ার কারণে চাষিরা আলুর স্টোরগুলোর (হিমাগার) মধ্যস্বত্ব ভোগী সিন্ডিকেটের হাতে ধরাশায় হয়ে পড়ে।

বালানগর গ্রামের আলু চাষি জানান, স্টোরের আলু রাখার সময় বিভিন্ন কৌশল করে স্টোরের ভাড়া বৃদ্ধি করে। আলু বিক্রির সময় আলু অনেক কম হয়। ব্যবসায়ীরা পচা ও দাগী আলু বাদ দিয়ে ৮৫ রেটের বস্তায় ৭৮/৮০ কেজি আসে। এতে প্রতি বস্তায় আলু ১০ থেকে ১২ কেজি কমে যায়। স্টোরের কারসাজির জন্য ২৫০/- টাকার স্টোর ভাড়া বর্তমানে ৩৫০/- টাকা করা হয়েছে। এতো সব কারণে এলাকায় কৃষকরা চাষকৃত আলুতে বিগত ৫/৬ বছর ধরে লোকশানে রয়েছে।

এছাড়া মওসুমে বাজার নিয়ন্ত্রণ না থাকায় কৃষকরা আলুর ন্যায্য মূল্য পায় না বলেও অভিযোগ করেন তারা। এতে রোদ-বৃষ্টিতে খেটে আয়ের অংশ কৃষককের ঘরে উঠে না।

এবারে অতি বর্ষায় অন্য তরিতরকারী সংকটে আলুর দাম চাঙ্গা হয়েছে। নিত্য প্রয়োজনের সাথে তাল মিলিয়ে হিমাগারের আলু বিক্রিতে কৃষকরা লাভের আশা করলেও সরকারের দাম বেধেঁ দেওয়ায় কিছুটা বিব্রত হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগীরা।

এদিকে হঠাৎ করে খুচরা বাজারে ৩০ টাকা, পাইকারী বাজারে ২৫ টাকা ও হিমাগার পর্যায়ে ২৩ টাকা বিক্রির নির্দেশনায় বাজারে আলু সংকট দেখা দিয়েছে। স্টোরগুলোতে কৃষকরা আলু বিক্রি করতে যাচ্ছে না। দাম অতিরিক্ত হলেও এভাবে বেধেঁ দেয়া দামে নাখোশ কৃষকরা। কৃষকদের দাবি মওসুমে আলুর দাম তদারকি ও অতিরিক্ত উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি ও শ্রমিকের মজুরীতে তাদের যেন আবারো দুরাবস্থা না হয় তা আমলে নিয়ে সুব্যবস্থা করা হোক।

কাফি/০১



বিষয়: বাগমারা


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top