শেষ সময়ে আগুন ছড়াচ্ছে আমের বাজার

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১২ আগস্ট ২০২০ ২২:৩৭; আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২০ ২২:৪০

ফাইল ছবি

আর অল্প কিছুদিন পরেই বাজার থেকে হারিয়ে যাবে মৌসুমের আম। শেষ সময়ে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এই ফল। রাজশাহীর বাজারগুলোতে ছাড়াচ্ছে দামের আগুন।

পূর্বের দ্বিগুন দাম লক্ষ করা গেছে বাজারগুলিতে। প্রতি মণ আম বিক্রি হচ্ছে ১০ হাজার টাকায়। সাধারণ ক্রেতার হাতের নাগালের বাইরে চলে গেছে রাজশাহীর আম।

ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্ষার শেষে আমের সরবরাহ ফুরিয়ে আসায় বাজারে আমের সরবরাহ কম। তাই দামও বেশি। আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি। তারপর বাজারে এক এক করে বিদায় নেবে সব জাতের আম। এজন্য বাড়তি দাম নেওয়া ছাড়া তাদের কোনো উপায় নেই।

মৌসুমের সব আম বাজার থেকে বিদায় নিলেও বাজারে থাকবে আশ্বিনা জাতের আম। তবে স্বাদে টক ও আঁশ বেশি থাকায় সাধারণত এই আম সেভাবে খেতে চায় না মানুষ। সারা বছরের জন্য আচার, মোরব্বা ও জুস তৈরির কাজে বেশি ব্যবহার হয় আশ্বিনা আম। তাই শেষ মুহূর্তে হু হু করে বাড়ছে রাজশাহীর সুস্বাদু সব আমের দাম।

নগরীর প্রায় সব বাজারগুলোতে এক রেটে বিক্রি হচ্ছে আম। কোনো বাজারেই দামের তারতম্য নেই! মহানগরের শিরোইল বাসস্ট্যান্ড, শিরোই কাঁচাবাজার, শালবাগান, নওদাপাড়া, সাহেব বাজার, স্বর্ণকারপট্টি, লক্ষ্মীপুর বাজার ও কোর্টচত্বর- অবস্থানভেদে সব জায়গায় একই দাম।

কম দামের আশায় আসা ক্রেতাদের একটু মন খারাপ ই করতে হচ্ছে। শেষ শ্রাবণে রাজশাহীর বাজারে এখন কেবল চার জাতের আম মিলছে। এর মধ্যে রয়েছে- মিষ্টি ও রসালো আম ফজলি (মহারাজ), বারি-৪, আম্রপালি ও আশ্বিনা জাতের আম। তবে দাম বেজায় চড়া। 

নগরীর সাহেব বাজার এলাকার এক ফল ব্যবসায়ী বলেন, আর মাত্র এক সপ্তাহ, বেশি হলে দুই সপ্তাহ পাওয়া যাবে এসব আম। তার পর থেকে কেবল থাকবে আশ্বিনা জাতের আম। আর কিছু পরিমাণ ফজলি পাওয়া যাবে। তবে ওই ফজলি (মহারাজ) আমগুলো পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আনা হবে।

বাজারে রাজশাহীর আম ফুরিয়ে গেলেও কিছু সংখ্যক চাঁপাইয়ের আম মিলবে। কারণ রাজশাহীর অনেক পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাগান থেকে আম নামানো হয়। তাই রাজশাহীর আম শেষ হয়ে গেলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম পাওয়া যায়। ওই জেলার আম দেরিতে ওঠে এবং দেরিতে শেষ 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আম আড়তদার সমিতির সভাপতি টিপু সুলতান বলেন,  রাজশাহীর বাজারের চেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দাম কিছুটা কম। বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, শিবগঞ্জ ও কানসাটসহ এলাকার হাটে ফজলি আম ১০ হাজার টাকা মণ, বারি-৪ আম ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং আশ্বিনা জাতের আম ২ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।

সার্বিক বিষয়ে কথা হয় রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামছুল হকের সাথে। তিনি জানান, জেলায় ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। আর এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। এছাড়া অপরিপক্ব আম নামানো ঠেকাতে এবারও সময় বেঁধে দিয়েছিল রাজশাহী জেলা প্রশাসন। সে অনুযায়ী গত ১৫ মে থেকে গুটি আম, ২০ মে থেকে গোপালভোগ, ২৫ মে থেকে রানীপছন্দ ও লক্ষণভোগ বা লখনা এবং ২৮ মে থেকে হিমসাগর বা খিরসাপাত, ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে আম্রপালি, ১৫ জুন থেকে বিভিন্ন জাতের ফজলি আম নামানোর সময় শুরু হয়।

আগস্ট পর্যন্ত আম বাজারে পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সবার শেষে ১০ জুলাই থেকে নামার কথা ছিল আশ্বিনা ও বারী আম-৪ জাতের আম। তবে আবহাওয়াজনিত কারণে এবার বেঁধে দেওয়া সময়েরও অনেক পরে রাজশাহীর প্রতিটি বাগান থেকে আম নেমেছে।

এসএইচ



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top