প্রেমে থেকে উদ্যেক্তা হবার আইডিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২১ ০৮:৫৭; আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২১ ০৩:২৫

আরেফিন আহমেদ ও তার তাঁতের পন্য

আমার এক আত্মীয় যে কোন উৎসবে আমাদের গ্রামীন চেকের পোশাক উপহার দিতেন। তখনই ফেব্রিকের আরামদায়কতা বুঝতে পারি। তখন থেকে এর প্রেমে পড়েযায়। আর এ থেকেই উদ্যোক্তা হবার আইডিয়া। আমার ব্যাবসা শুরু হয়েছিল খুবই সাদামাটা ভাবে। আমার তাঁত ফেব্রিক প্রীতি দেখে আমার বর ৪ টা তাঁত থ্রিপিচ গিফ্ট করে। একদিন কিছু না ভেবেই মেয়ের স্কুলে থ্রিপিচ গুলো নিয়ে যাই। এর মধ্যে থেকে একটা থ্রিপিচ সেল হয়ে যায়। সেদিনটি আমার উদ্যোক্তা জীবনের শুরু ধরা যেতে পাতে।

করোনাকালে মানুষ যখন হতাশা নিয়ে ঘরে বন্ধি তখন অনলাইন প্লাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে কিছু করার চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে সফলও হচ্ছেন অনেকেই। তেমন এক উদ্যেক্তা আরেফিন আহমেদ। তার উদ্যেক্তা হবার গল্পটা এভাবেই শুরু করেন। তিনি রাজশাহী নগরীর উপশহরের বাসিন্দা।

তিনি বলেন, পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করে সব সময় ইচ্ছা ছিল নিজেকে কোন কাজের সাথে সংযুক্ত করবো। সেই ইচ্ছা ও মনের চাহিদা থেকেই উদ্যোক্তা হবার কথা মাথায় আসে। এখন তাঁত পন্য নিয়ে কাজ করছি। আমি রাজশাহীর মার্কেটগুলো সম্পর্কে মোটামুটি ধারনা আছে। কখনো পিওর তাঁত ফেব্রিক কোন কাপড়ের দোকানে দেখিনি। অথচ এগুলো খুবই আরামদায়ক। অথচ এর আরামদায়কতার কথা রাজশাহীর খুব কম মানুষ জানেন। আমি চেয়েছি আমার শহরের মানুষ গুলোকে ঐতিহ্যবাহী পন্যটি সম্পর্কে জানাতে। আর এই জানানোর আগ্রহ থেকেই আমার এই উদ্যোগের যাত্রা।

রাজ টাইমস: কাজ করতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন কি?
আরেফিন আহমেদ: প্রথম এবং প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল পন্যের সোর্সিং। যেহেতু এটা রাজশাহীর লোকাল পন্য না তাই আমাকে এই পন্য সোর্স করতে সব সময় রাজশাহীর বাইরে যেতে হয়। আর একটা চ্যালেঞ্জ ছিল আমার তাঁতী চাচার সাথে কমিউনিকেশন। বাংলাদেশে তাঁত শিল্পের সাথে জড়িত মানুষগুলো এখনো টেকনোলজির ব্যবহার স্বাচ্ছন্দ্যে করতে পারে না।তাই যখন কোন নতুন ডিজাইন বা নতুন কোন রং এর কাপড় বুনন করার প্রয়োজন পরে আমাকে রাজশাহীর বাইরে যেতে হয় এবং চযুংরপধষষু তাঁতী চাচার সাথে মিটিং গুলো করতে হয়।

রাজ টাইমস: নতুন উদ্যোক্তারা এই ধরণের ব্যবসায় আসতে চাইলে আপনার পরামর্শ কী?
আরেফিন আহমেদ: অনেক গ্রামীণ চেক তাঁত কাপড়ের মান আমি দেখেছি যা খুব একটা ভালো কোয়ালিটি মেন্টেন করে না। যারা এই পন্য নিয়ে কাজ করতে চান তাদের কাছে একটাই পরামর্শ আপনারা কখনো কোয়ালিটি কপ্রমাইজ করবেন না। কারন কিছু কিছু বিষয়ে কম্পোমাইজ কখনোই ভালো ফলাফল বয়ে নিয়ে আসে না।

রাজ টাইমস: উদ্যোক্তা জীবন সফল হতে কাদের ভূমিকা বেশি ছিল?
আরেফিন আহমেদ: আমার লাইফ পার্টনার সময় আর্থিক ও মানসিক ভাবে আমাকে সাপোর্ট করেছে। আর অবশ্যই ধন্যবাদ জানাতে চাই আমরা রাজশাহীর উদ্যোক্তা গ্রুপ কে আমার উদ্যোগের গল্পটা সকলের নিকট পৌছে দেবার জন্য।

রাজ টাইমস: বর্তমান প্রেক্ষাপটে আপনার ব্যবসা নিয়ে পরিকল্পনা কী?
আরেফিন আহমেদ: আমার একটাই পরিকল্পনা। তাঁত শিল্প বা গ্রামিন চেক শিল্প টা কে যতোটা সম্ভব মানুষের কাছে পরিচিত করানো।

রাজ টাইমস: উদ্যোক্তা জীবনের শুরু কতদিন ধরে এবং রেভিনিউ কেমন?
আরেফিন আহমেদ: প্রায় দেড় বছর থেকে এ পেশায় আছি। কাজটা শুরু করেছিলাম এবং পন্যের প্রতি ভালোলাগা ও ভালোবাসা থেকে, তাই প্রথম দিকে রেভিনিউ এর আশা খুব একটা ছিল না। তবে, আলহামদুলিল্লাহ এখন অনলাইনে প্রতি মাসে তাঁত গ্রামীণ চেক কাপড় গুলো সেল করে ২০ হাজার টাকার উপরে রেভিনিউ হয়।

রাজ টাইমস: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পরা নিয়ে জানতে চাই।
আরেফিন আহমেদ: আমার ভবিষ্যত পরিকল্পনা হচ্ছে দেশের সিংহভাগ মানুষকে তাঁত শিল্প নিয়ে জানানো। এতে করে একটা শিল্প শুধু উঠে দাড়াবে না বরং যে তাঁতীরা দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে এই শিল্প কে বাচাতে তারাও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হবে।

রাজ টাইমস: সময় দেবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। 
আরেফিন আহমেদ: রাজ টাইমস পরিবারকে আন্তরিক ধন্যবাদ। নবীন উদ্যোক্তাদের সাথে থাকার জন্য। 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top