নাটোরের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শহীদ রেজা-রঞ্জুর মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

নিজস্ব সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২২:৩৯; আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:১৪

রেজা-রঞ্জুর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পন

নাটোরের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শহীদ রেজা-রঞ্জুর শাহাদত বার্ষিকী পালিত হয়েছে। বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯ টায় শহীদদের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান, দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

নাটোর পৌরসভার পক্ষ থেকে মেয়র ঊমা চৌধুরী জলি শহীদ রেজা-রঞ্জুর কবরে পুষ্প স্তবক প্রদান করেন। এরপর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড, পূজা উদযাপন পরিষদ এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করা হয়।

নাটোর পৌরসভার পক্ষ থেকে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভা প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল , নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ এর সভাপতি এস এম শাহাদত হোসেন রাজিব , হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের চিত্তরঞ্জন সাহা এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের এডভোকেট খগেন্দ্র নাথ রায়।

এছাড়া শহীদদের পরিবারের পক্ষ থেকে শহরের গাড়ীখানা ও ভাঙ্গা মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। নাটোর পৌরসভা কবর প্রাঙ্গনে কোরআনখানীর আয়োজন করে।

শহরের গাড়ীখানা এলাকার বাসিন্দা শহীদ মজিবর রহমান রেজা নাটোর মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি ও নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস এবং শহরের কানাইখালী এলাকার বাসিন্দা শহীদ গোলাম রব্বানী রঞ্জু নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের এজিএস এর দায়িত্বে থাকাকালীন মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং নাটোরে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেন। তারা উভয়েই ভারতের শিলং ও দেরাদুনে প্রশিক্ষন গ্রহণ করে ১৯৭১ সালের আগষ্ট মাসে দেশে ফিরে আসেন। নাটোরে আসার পথে জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার দয়ারামপুর এলাকায় বড়াল নদী অতিক্রমের সময় হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকার আল-বদর বাহিনীর আক্রমনের শিকার হন। প্রশিক্ষন ও ভারী অস্ত্রের সমন্বয়ে তারা রাজাকার আল-বদর বাহিনীকে পরাস্ত করেন। এ ঘটনায় শত্রুপক্ষের প্রায় ২৫ জন নিহত হন। শহীদ রেজা ও রঞ্জু পরবর্তিতে গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় এলাকায় গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষন প্রদান ও সংগঠিত করেন। মশিন্দা এলাকায় ডাক্তার রওশন আলীর বাড়িতে অবস্থান করার সময় রাজাকারদের হাতে আটক হয়ে নির্মমভাবে নিহত হন বলে জানিয়েছেন শহীদ গোলাম রব্বানী রঞ্জুর ভাই লিয়াকত আলী বাবলু। ১ সেপ্টেম্বর নিহত হওয়ার পর তাদের লাশ পাকিস্তান সেনাবাহিনী নাটোর থানায় নিয়ে আসে। ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হলে তিনদিন ধরে তাদের লাশ সেখানে পড়ে থাকে। এরপর শহরের কানাইখালী এলাকার সাহসী মানুষেরা মর্গ থেকে মরদেহ এনে নিজেদের এলাকার নারদ নদের পাশে তাদের দাফন করেন।

নাটোর পৌরসভার পক্ষ থেকে তাদের কবর সংরক্ষন করা হয়েছে এবং প্রতিবছর তা পরিচর্যা করা হয়। নাটোর পৌরসভার দুটি সড়কের নামকরণ তাদের নামে করা হয়েছে। কৃতজ্ঞ নাটোরবাসী গভীর শ্রদ্ধায় মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের আত্নদানকারী শহীদ মজিবর রহমান রেজা ও শহীদ গোলাম রব্বানী রঞ্জুকে স্মরণ করে।

 



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top