ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনে কমবে বেকারত্ব, সহনীয় হবে মাংসের দাম

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১২:১৩; আপডেট: ৮ মে ২০২৪ ০৪:২৭

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল। ছবি: সংগৃহীত

ছাগল একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাণিসম্পদ। বাংলাদেশে উৎপাদন হওয়া অধিকাংশ ছাগলই ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের। এটিই আদি দেশি জাত।ব্ল্যাক বেঙ্গল পৃথিবীর পাঁচটি সেরা মাংস উৎপাদন জাতের অন্যতম। এদের বাচ্চা উৎপাদন ক্ষমতা অধিক, মাংস সুস্বাদু, চামড়া আন্তর্জাতিকমানের, দেশের জলবায়ুতে জীবনযাপনের উপযোগিতা বেশি। বেকারত্ব দূরীকরণ ও দারিদ্র্য বিমোচনে এর ভূমিকা অপরিসীম। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে এ জাতের ছাগলের উৎপাদন আরও বাড়লে নাগালে আসবে মাংসের দাম।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রাণিসম্পদ খাতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপিতে স্থিরমূল্যে প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। সার্বিক কৃষিখাতে প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

ছাগল বাংলাদেশের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রাণিসম্পদ। বিশ্বে ছাগল পালনে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। দেশে আদিকাল থেকে যে ছাগল পালন হচ্ছে তা ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের, আর বিদেশ থেকে বিশেষত ভারত থেকে আমদানি করা রামছাগল। এ দেশের আবহাওয়া ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল পালনে অত্যন্ত উপযোগী। এই জাতের ছাগল পালনের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর বেকারত্ব দূরীকরণ ও দারিদ্র্য বিমোচন সহজেই সম্ভব।

জানা যায়, দেশে বিদ্যমান ছাগলের অধিকাংশই ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের। দরিদ্র জনগণ স্বল্প খরচে অনায়াসে এ জাতের ছাগল পালন করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রাম ছাগলের চেয়ে বেশি। চিকিৎসা খরচ, বিড়ম্বনা ও মৃত্যুহারও কম। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল রাম ছাগলের অনেক আগে বয়োঃপ্রাপ্ত হয় এবং একই সময় রাম ছাগলের তুলনায় ২ থেকে ২ দশমিক ৫ গুণ বেশি বাচ্চা জন্ম দেয়।

তবে প্রজনন (ব্রিডিং) কার্যক্রমের যথাযথ রেকর্ড না থাকায় অন্য জাতের সঙ্গে ব্রিডিং/ইনব্রিডিংয়ের কারণে দিন দিন ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগলের কৌলিক মান হারাচ্ছে। বিদ্যমান সরকারি খামারগুলোর অবকাঠামো অনেক পুরোনো হওয়ায় ছাগল উৎপাদন, জাত সংরক্ষণ, সম্প্রসারণ প্রভৃতি কাজে আশানুরূপ অগ্রগতি অর্জন সম্ভব হচ্ছে না। প্রান্তিক খামারিদের মধ্যে ছাগল পালনের আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাব রয়েছে। এজন্য গ্রামীণ পর্যায়ে সঠিক প্রজনন সেবা নিশ্চিত করা, ছাগল পালনে আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে খামারিদের প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী খামার স্থাপন, দক্ষ জনবল তৈরি, জনসচেতনতা সৃষ্টি, সরকারি খামারগুলো থেকে উপজেলা পর্যায়ে খামারিদের ছাগল পালনে প্রয়োজনীয় সেবার জন্য বিদ্যমান সাতটি সরকারি ছাগল খামারের সংস্কার ও উন্নয়নে মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প’ শীর্ষক প্রকল্পটি গ্রহণ করে। সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে গৃহীত প্রকল্পটির প্রথম সংশোধিত অনুমোদিত মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। বাস্তবায়নকাল ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top