বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা বড় ধরনের দুর্নীতির সাথে জড়িত
রাবি প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৩৫; আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:২৯

কোনো অপরাধী ছাড়া এরকম সরাসরি সম্প্রাচার হওয়া অনুষ্ঠানে এভাবে হামলে পড়তে পারে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) এর কর্মকর্তারা বড় ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত বলেই সাংবাদিক এবং টিভি চ্যানেলের বুম দেখলেই এদের গায়ে জ্বালা শুরু হয়ে যায়। কৃত অপকর্ম ফাঁস হওয়ার ভয় নিয়েই তাদেরকে সব সময় থাকতে হয়। সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দুর্নীতি পরায়ন না হলে এভাবে সংবাদকর্মীদের উপর তার কর্মচারিদের লেলিয়ে দিতে পারেন না।
শনিবার বেলা ১১ টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ’ ব্যানারে আয়োজিত মাবনবন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
পেশাগত দায়িত্ব পালন কালে বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের সাংবাদিক বুলবুল হাবিব ও ক্যামেরাপার্সন রুবেল ইসলামের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন সাংবাদিক সংগঠনের কর্মরত সাংবাদিকরা। এসময় কর্মসূচীতে একাত্মতা পোষণ করেন রাজশাহী শহরের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত সবাইকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার ৫ দিন অতিবাহিত হলেও এখানোও প্রশাসন কাউকে গ্রেপ্তার বা বিচারের আওতায় আনতে পারি নি। এটি কোনো ভাবেই কাম্য নয়। এ ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের সবাইকে বহিষ্কার করতে হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে বিএমডিএর পরিচালককে অনুমতি চাওয়া হয়েছে এই কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করার জন্য । তবে বিএমডিএর থেকে কোন প্রকার সাড়া পাওয়া যায় নি। সে কারণে পুলিশ অভিযান চালাতে পারে নি। এমনটাই পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, দোষীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যহত থাকবে। আমাদের আন্দোলনের একটাই দাবি দোষীদের গ্রেফতার এবং ঘটনার সঙ্গে আরো যারা যুক্ত তাদের বহিষ্কার করতে হবে।
বিএমডিএ’ এর কর্মকর্তা বড় ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত উল্লেখ করে দৈনিক প্রথম আলোর রাজশাহী ব্যুরো প্রধান আবুল কালাম আজাদ বলেন, একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পেশাগত দায়িত্ব পালন কালে বিনা অপরাধে একজন সংবাদকর্মীকে হামলা করা হয়েছে। যে দেশে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে সেই দেশ গণতান্ত্রিক হতে পারে না। ন্যাক্কারজনক এই হামলায় জড়িত ব্যক্তিগুলো উন্মাদ আর না হয় দুর্নীতি পরায়ণ। এই ঘটনায় কিছু লোকদের সাময়িক বহিষ্কার করা হলেও হামলার মূল নির্দেশদাতাকে এখনো পর্যন্ত বহিষ্কার করা হয়নি। বিএমডিএ এর কর্মকর্তা বড় ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত বলেই সংবাদ মাধ্যমকে এতো ভয় পান। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে এই হামলার মূল হোতাকে বহিষ্কার করা হোক।
কর্মসূচিতে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক বলেন, গত ২৪ আগস্ট সরকারের নতুন পরিপত্র অনুযায়ী অফিস কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য আমাদের সহকর্মীরা গিয়েছিলো। তবে দেশের জনগনের ট্যাক্সের টাকায় যাদের বেতন হয় সেসব কর্মকর্তারা নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে সংবাদকর্মীদের উপর যেভাবে হামলা চালিয়েছে সেটি একটি গণতান্ত্রিক দেশের চিত্র হতে পারে না।
তিনি বলেন, আমাদের সহকর্মীদের উপর যেভাবে হামলা হয়েছে সেটি দেশের মানুষ স্বচক্ষে দেখেছেন। এত বড় একটি প্রমাণ পুলিশ প্রশাসনের কাছে থাকার পরেও এই দুর্নীতিবাজ বিএমডিএ'র নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে নি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টস ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিফ রিয়াদের সঞ্চালনায় এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয় ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনক, বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি বেলাল হোসেন বিপ্লব, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম সরোয়ার, ডেইলি স্টারের রাজশাহী স্টাফ রিপোর্টার আনোয়ার আলি হিমু, সমকালের রাজশাহী ব্যুরো প্রধান সৌরভ হাবিব, এসএটিভির রাজশাহী প্রতিনিধি জিয়াউল গণি সেলিম ও রাজশাহী শহরে বিভিন্ন ইলেট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং বিশ্ববদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: