‘প্রেমিকার বিয়ে শুনে ৪ তলা থেকে লাফ

পাবনার ঈশ্বরদীতে এসএম খাইরুল আজম (২৯) নামে ঈশ্বরদী ইপিজেডের এক কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা আজম চারতলা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রোববার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, নিহত খাইরুলের প্রেমিকার আজ গায়েহলুদ। সে হয়তো সেই শোক সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যা করেছে।

নিহত খাইরুল আজম কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর থানাধীন মির্জানগর এলাকার মো. আজিম-উদ-দৌলার ছেলে। তিনি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে গত দেড় মাস যাবত ঈশ্বরদী ইপিজেডের রেনেসা বারিন্দ্র লিমিটেটের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

খাইরুল আজমের বাবা জানান, প্রতিদিনের মতো আজকেও আমার ছেলে সকাল ৭টার দিকে বাড়ি হতে ঈশ্বরদী ইপিজেডের রেনেসা বারিন্দ্র লিমিটেডের উদ্দেশে রওনা হয়। কর্মস্থলে যথাসময়ে উপস্থিত হয়ে ডিউটি করার একপর্যায়ে দুপুর পৌনে ১টার দিকে অফিস থেকে একটি মোবাইল ফোনে আমাকে জানান- আমার ছেলে এসএম খাইরুল আজম তার কর্মরত ভবনের চতুর্থ তলা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। 

খবর পেয়ে আমি তাৎক্ষণিক আমার পরিবারের লোকজনসহ ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে দেখি আমার ছেলের মৃতদেহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায় পড়ে রয়েছে।

রেনেসা বারিন্দ্র লিমিটেডের অ্যাডমিন ম্যানেজার অমিত কুমার কুণ্ডু জানান, আমি খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। সেখানে গিয়ে দেখি আহত অবস্থায় খাইরুলকে আমাদের নিজস্ব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নিয়েছে। সেখানে তার অবস্থা গুরুতর দেখে সেখানকার কর্তব্যরত নার্স তাকে দ্রুত ঈশ্বরদী সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রূপপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ঈশ্বরদী ইপিজেডের রেনেসা বারিন্দ্র লিমিটেডে একটি ছেলের লাফিয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে জানতে পেরে আমি এবং ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ অরবিন্দ সরকার সেখানে উপস্থিত হই। ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত হতে ক্যামেরা ফুটেজ দেখে আমরা বুঝতে পারি, সকাল ১১টা ৪৮ মিনিটে নিহত খাইরুলের মোবাইল ফোনে একটি কল আসে এবং তিনি কথা বলেন। কথা শেষ করার পর থেকে তার স্বাভাবিক চলাচলে ছন্দপতন ঘটে। এরপর দুপুর ১২টা ১৭ মিনিটের দিকে সে তার কক্ষ ছেড়ে সিঁড়ি বেয়ে একই ভবনের ৪ তলায় উঠেন। সেখানকার রেলিং ডিঙ্গিয়ে ১২টা ২০ মিনিটে খাইরুল নিচে লাফ দেন।

পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, আমরা গোপনসূত্রে জানতে পেরেছি নিহত খাইরুলের প্রেমিকার আজ গায়েহলুদ। সে হয়তো সেই শোক সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যা করেছে।

সূত্র: যুগান্তর।