দফায় দফায় বৃষ্টিতে মানুষের দুর্ভোগ

বাগমারায় বন্যার পানি কমলেও স্বস্তি নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা | প্রকাশিত: ৮ অক্টোবর ২০২০ ০১:৪২; আপডেট: ৮ অক্টোবর ২০২০ ০১:৪৭

বাগমারায় বন্যায় দুরাবস্তাগ্রস্ত মানুষ

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় দ্বিতীয় দফায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। গত ৬ দিনে পানি বাড়তি হয়নি। তবে গত ৩ দিন ধরে দফায় দফায় অতি বৃষ্টিতে জনজীবনে দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। এখনও গ্রামে গ্রামে বাড়ি-ঘর তলিয়ে মানুষ গৃহবন্দি রয়েছে। মাটির ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে পড়া লোকজন বাড়িতে ফিরতে পারেনি। জমির ফসলাদি নষ্ট, বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্থ ও গৃহবন্দি হয়ে পরায় মানুষের মধ্যে অশান্তি বিরাজ করছে। এদিকে সরকারি ভাবে তেমন সাহায্য সহযোগিতা না পেয়ে বানভাসিরা অনাহারে-অর্দ্ধাহারে দিন যাপন করছে বলে ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন।

জানা গেছে, টানা বর্ষণের সাথে উজানের পানি মিলে পানির তোড়ে ফের এলাকায় দেখা দেয় প্রবল বন্যা। বন্যা আর উজানের পানিতে নতুন নতুন এলাকায় পানি প্রবেশ করে ব্যাপক ক্ষতি হয়। উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বাড়ি-ঘর বাদে রোপা-আমন ও আউশ ধান, পানবরজ, এবং সবজি ক্ষেতসহ প্রায় ৩১ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এমতবস্থায় প্রতি নিয়তই প্রচুর পরিমান বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এতে করে বাড়ি থেকে বের হওয়া তো দূরের কথা বাড়িতে বানভাসিরা অনাহারে-অর্দ্ধাহারে দিন যাপন করছে। প্রবল বৃষ্টি আর বন্যার পানিতে জন জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

বুধবার (৭ অক্টোবর) দুু’ দফা মুষল ধারে বৃষ্টিতে মানুষ, গরু, ছাগল, কাক ভেজা ভিজেছে। এক দিকে নীচে পানি উপর দিকে বৃষ্টি নামায় এতে যেন মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বড়বিহানালী ইউনিয়নের বড়কয়া, সিন্দুরলংগ, বেড়াবাড়ি, ছোটকয়া, মইতাখালি, ঝিকরা এলাকায় শতশত পরিবারের মানুষ পানিবন্দির অবস্থায় রয়েছে। বড়বিহানালী, দ্বীপপুর, গোয়ালকান্দি, বাসুপাড়া, ঝিকরাসহ কয়েকটি ইউনিয়নের বর্ষার পানি জমে ৩ শতাধিক মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে। বড়বিহানালী ইউনিয়নের বড়কয়া গ্রামের অজিত মিঞা জানান, বন্যা ও অতি বৃষ্টিতে তার বাড়ি-ঘর তলিয়ে গেছে। বাড়িতে এখনো যেতে না পেরে অন্যের বাড়িতে রয়েছেন। একই গ্রামের শ্রী অঞ্চন ও গ্রামের মৃত আফছার আলীর বিধবা স্ত্রী ফাতেমা বেওয়া, মৃত তমেল আলীর বিধাব কন্যা জয়নব, আশরাফুল ইসলাম ও জয়নবের মাটির বাড়ি পড়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয়ে রয়েছেন বলে জানান। বিশেষ আশ্রয়ে বেশ অসুবিধায় অনাহারে অর্দ্ধাহারে জীবন যাপন করছেন বলে জানান তারা।

বড়বিহানালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মিলন জানান, গত কয়েকদিনের বর্ষন ও বন্যায় ইউনিনের সবগুলো গ্রামই প্লাবিত হয়েছে। এই ইউনিয়নের সাড়ে চার হাজার পরিবারের মধ্যে প্রায় চার হাজার পরিবারই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, যে পরিমান ক্ষতি সেই পরিমান সরকারী বরাদ্দ পায়নি। ক্ষতি গ্রস্ত পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। তবে সবাইকে দেয়া সম্ভব হয়নি বলে জানন তিনি।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ জানান, ক্ষতির পরিমান নির্ধারনের জন্য স্ব-স্ব দপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরীর জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বরাদ্দকৃত পরিমান স্ব-স্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে প্রেরন করা হয়েছে।

কাফি/০১



বিষয়: বাগমারা


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top