বেশি পানি পানের স্বাস্থ্য ঝুকি
Abu Sufiun | প্রকাশিত: ২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:৪২; আপডেট: ২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৬:৫২
                                “পানির অপর নাম জীবন” অথবা “জীবন মানেই পানি, পানি মানেই জীবন” এ ধরনের বাক্য আমরা প্র্য়াই শুনে থাকি। কিন্তু কখনও কি শুনেছেন পানি পান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর? অবশ্যই না। কিন্তু অতিরিক্ত পানি পান অনেক সময় আপনার স্বাস্থ্যের জন্য
মানব দেহের জন্য পানি খুবই দরকার, পানি না থাকলে শরীরের মধ্যেকার অনেক রাসায়নিক প্রক্রিয়া গুলো ঠিকমতো কাজ করবে না। পানি পানে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকে, পেট পরিস্কার হয় আর সকল শারীরিক কার্য্যকলাপ সুষ্ঠ ভাবে চলে। কিন্তু পরিমাণ থেকে বেশি পানি খেলে আমাদের শরীরের সোডিয়ামের মাত্রার তারতম্য হতে পারে। শরীরের সাধারণ কাজ করার জন্য যতটুক সোডিয়াম দরকার সেটা অত্যাধিক পানি পানের ফলে আমাদের ক্ষতি করতে পারে। কিডনির ওপর চাপ পড়তে পারে। এছাড়াও
অত্যাধিক পানি পানের ফলে আমাদের শরীরের যে সব ক্ষতি হতে পারে তা হচ্ছে:
১. আপনার হার্টের ওপর চাপ পড়ে। আপনার হার্টের কাজ হলো সারা শরীরে রক্ত পাম্প করা, কিন্তু যদি পানি বেশি পান করেন, তাহলে আপনার শরীরে রক্তের মাত্রা বৃদ্ধি হবে, সুতরাং হার্টের কাজ বাড়বে ।
২. আপনার কোশিকাগুলো ফুলে যাবে। অত্যাধিক মাত্রায়ে পানি খেলে শরীরে রক্ত ঘোলাটে হয়ে যায়, এবং রক্তে থাকা ইলেক্ট্রলাইটের পরিমাণ কমে যায়। এবার এই বেমিল কে মিলাতে পানি দৌড়ে যায় কোশিকাগুলোতে, আর তাই সেইগুলো ফুলে উঠে।
৩. শরীরে পটাসিয়াম মাত্র কম হয়ে যায়। শরীরের অনেক বেশি জরুরি খনিজ হচ্ছে পটাসিয়াম। কিন্তু শরীরে পানি অত্যাধিক মাত্রায় থাকলে এই খনিজের মাত্রা কম হয়ে যেতে পারে ও আপনার শরীরে এক ভজঘট অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে আপনি শরীরে ব্যাথা-বিষ, বুকে ব্যাথা, খিটখিটে মেজাজ ইত্যাদি অনুভব করতে পারেন।
তাহলে আপনাকে কত পরিমাণে পানি খাওয়া উচিত?
বিশেষজ্ঞদের মতে একজন মানুষের প্রতিদিন পানির চাহিদা কতটুকু তা নির্ভর করে আবহাওয়া, তার কাজকর্মের পরিমাণ, শরীরের অবস্থা ইত্যাদির ওপর। পানি পান নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশে রয়েছে থার্স্ট সেন্টার বা পিপাসাকেন্দ্র। এই কেন্দ্র জানিয়ে দেয় যে কখন পানি পান করা দরকার।
১. আমাদের মতো উষ্ণ আবহাওয়ার দেশে মোটামুটি পরিশ্রমের কাজ করলে একজন মানুষের সাধারণত দিনে দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করলেই চলে। তবে এটি নির্ভর করে তার দেহ থেকে স্বাভাবিক পানি নির্গত হওয়ার পরিমাণের ওপর।
২. জ্বরের সময় প্রচুর পানি পান করা উচিত। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও প্রচুর পানি পান করতে হয়। সকালে খালি পেটে তিন-চার গ্লাস পানি পান করা এ ধরনের সমস্যায় ফলদায়ক। কিছু ওষুধ, বিশেষ করে কিছু অ্যান্টিবায়োটিক খেলে বেশি পানি পান করতে বলা হয়, যাতে তা দ্রুত নিষ্কাশিত হতে পারে।
৩. গরম আবহাওয়ায় পানির পরিমাণ কম হলে প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যেতে পারে, হলুদ বা লালচে রং ধারণ করতে পারে এবং প্রস্রাবে জ্বালা করতে পারে। এ রকম হলে বুঝে নিন পানিশূন্যতা হয়েছে। তাই প্রচুর পানি পান করতে হবে।
৪. ত্বক সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখতে যথেষ্ট পানি পান করা উচিত। ক্ষুধামান্দ্য ও অন্যান্য হজমের সমস্যায়ও পানির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
৫. কিডনির সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, হূদেরাগ ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা আছে, এমন রোগীদের চিকিৎসকেরা পানির পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দিতে পারেন।
৬. খাবারের অন্তত আধঘণ্টা আগে এবং খাবার খাওয়ার আধঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পর পানি পান করা উচিত। খাবার সময় বেশি পানি পান না করাই ভালো।
৭. ভারী কাজকর্ম বা ব্যায়ামের পর তিন-চার গ্লাস পানি পান করুন।
৮. তাড়াহুড়া করে পানি পান করবেন না। জোর করে বেশি পানি পান করার প্রয়োজন নেই। আপনার পিপাসাই জানিয়ে দেবে কখন কতটুকু পানি আপনার দরকার।

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: