মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা: গতিই যেখানে মৃত্যু

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ১২ মে ২০২১ ০২:১২; আপডেট: ১২ মে ২০২১ ০২:৪৬

প্রতীকি ছবি

বর্তমানে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ভয়াবহ মর্মান্তিক আকার ধারন করেছে আর এর ভয়াবহতা তুলনামূলক বেশী পরীলক্ষিত হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। উচ্চবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্ত পরিবারের এক শ্রেণির তরুণ প্রজন্ম পিতামাতার কাছে আবদার করে বা চাপ প্রয়োগ করে এমনকি জিম্মি করে পছন্দসই ব্র্যান্ডের বা মডেলের মটরসাইকেল কিনে রাস্তা দাপিয়ে বেড়ায় যাদের অধিকাংশেরই কোন কাজ নেই শুধু শোডাউনই মূল লক্ষ্য। উঠতি বয়সি এইসব তরুণেরা স্বভাবতই রাস্তার কোন নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে ড্রাইভিং লাইসেন্স, হেলমেট ছাড়াই রাস্তায় নেমে নিজের সাথে সাথে অন্যের জীবনকেও হুমকীর সম্মুখীন  করছে। বর্তমান সমাজে অনেক পিতামাতাই তাদের একমাত্র সন্তানকে দুর্ঘটনায় হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন।   

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মোটরবাইকের সংখ্যা। বিআরটিএ’র তথ্য অনুযায়ী  ১৯৯৯ সালে যেখানে রেজিস্ট্রেশনকৃত প্রায় দুইলক্ষ পনের হাজার মোটরসাইকেল ছিল তা ১৮ বছরে প্রায় দশগুণ বেড়ে ২০১৭ সালে এসে প্রায় বিশলক্ষ পঞ্চাশ হাজার হয়েছে। দুর্ঘটনা বৃদ্ধির এটি একটি উল্লেখযোগ্য কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী মটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রতি দশহাজারে মৃত্যুর সংখ্যা পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে ৮.৬ জন, ভারতে ৯ জন কিন্তু বাংলাদেশে এই সংখ্যা ২৮.৪ জন। অন্য একটি গবেষণায় এসেছে, বাংলাদেশে যেসব মটরসাইকেল দুর্ঘটনা হয় এর ৪৪ শতাংশই ভয়াবহ মারাত্মক রকমের, ৪৭ শতাংশ মারাত্মক এবং মাত্র ৫ শতাংশ কম আঘাতপ্রাপ্ত হয়। আর এইসব দুর্ঘটনার ৮৯.৬ শতাংশের জন্য দায়ী মোটরসাইকেলের বেপরোয়া গতি।

এইসকল অনাকাঙ্ক্ষিত মর্মান্তিক দুর্ঘটনা রোধে চাই কঠোর পদক্ষেপ ও সামাজিক সচেতনতা। পিতামাতাকে হতে হবে অধিক দায়িত্বশীল। সন্তানের বেপরোয়া জীবনযাপন থেকে রক্ষা করতে ছোট থেকেই পারিবারিক সুশিক্ষা নিশ্চিত করা জরুরী। উচ্চ গতির এই মরণ বাইকের পরিবর্তে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে সাইক্লিং এ অভ্যস্ত করা দরকার যেটি অনেক উন্নত বিশ্বে সচরাচর দেখা যায়। এই অভ্যাস গঠনের জন্য চাই সামাজিক সচেতনতা এবং নিরাপদ সাইক্লিং এর জন্য চাই মহাসড়কের পাশে পৃথক লেন। মোটরসাইকেল বাদ দিয়ে সাইক্লিং এ অভ্যস্ত হলে জীবনের নিরাপত্তার পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের ইতিবাচক মনোজাগতিক পরিবর্তন ঘটবে।   

 

লেখক: মোঃ শাকিলুর জামান শাকিল

গবেষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

[email protected]           



বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top