২৫০ প্রজাতির গাছ নিয়ে গৃহিণী হেনার ছাদবাগান

২৫০ প্রজাতির গাছ নিয়ে গৃহিণী হেনার ছাদবাগান

রাজটাইমস ডেস্ক | প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল ২০২২ ০১:৩০; আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৩৯

 গৃহিণী হেনার ছাদবাগান। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিটি গাছকে সন্তানের মতো দেখাশোনা করেন তিনি। প্রতিদিন বিকেলে তাদের সঙ্গে এক ঘণ্টা সময় কাটান। ফলগুলো দেখে তার মনে প্রশান্তি জাগে। গাছগুলোর সঙ্গে তার গভীর বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে।

ঠিক এরকম অনুভুতির কথা জানাচ্ছিলেন নিজ বাড়ির ছাদকৃষিতে ২৫০ প্রজাতির গাছ লাগানো উদ্যোক্তা গৃহণী মোহসীনা হেনা।

মোহসীনা শেরপুর জেলা শহরের সজবরখিলা মহল্লার বাসিন্দা। তার স্বামী সাবেক নালিতাবাড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান রিপন। তাদের রয়েছে দুই সন্তান। বড় মেয়ের নাম মাইশা মমতাজ মৌলি। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। ছেলের নাম এ কে এম মাকসুদুর রহমান। সে শেরপুর জেলা শহরের একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।

২ হাজার ৫০০ বর্গফুটের তার এই ছাদে শোভা পাচ্ছে পুদিনাপাতা, বেগুন, মাল্টা, স্ট্রবেরি, জাম্বুরা, কমলা, কালো ও সাদা জাম, সফেদা, আম, লিচু, কদবেল, শরিফা, লাল পেয়ারা, কয়েক প্রকারের লেবু, শজনে, শীত লাউ, টমেটো, মরিচ, বড়ই, জলপাই, ডালিম, কমলা, বরবটি, চালকুমড়া, শসা, করলা, ড্রাগন ফলসহ বিভিন্ন ফুলের ২৫০টি প্রজাতিরও বেশি গাছ।

প্রতিটি গাছে এসেছে ফলন। ঝুলে আছে বিভিন্ন রকমের ফল, ফুলসহ নানা রকমের সবজি। যে কারোর দেখেই মনে হবে, এ যেন ছাদ নয়, এক টুকরো উদ্যান।

ছাদকৃষিতে সফল এই গৃহিণী বলেন, আমি মাঝেমধ্যে ইউটিউব ও টেলিভিশনে শাইখ সিরাজের কৃষিবিষয়ক অনুষ্ঠান দেখতাম। তখন প্রায়ই ভাবতাম, যদি আমিও বাড়িতে ছাদকৃষি করতে পারতাম। এরপরই কয়েকটি নার্সারি থেকে গাছ সংগ্রহ শুরু করি। এখন আমার ছাদে ২৫০টিরও বেশি প্রজাতির গাছ আছে। সারা দিন গৃহস্থালির কাজ শেষে যখন বিকেলে বাগানে আসি। গাছ ও গাছে থাকা ফুল, ফল ও সবজিগুলোর দিকে তাকালে সব ক্লান্তি নিমেষেই শেষ হয়ে যায়।

এ ছাড়া গাছগুলোর সঙ্গে সময় কাটালে মনে এক অন্য রকম প্রশান্তি জাগে। আমার ছাদকৃষি থেকে পাওয়া ফল, সবজি যেভাবে নিজেদের প্রয়োজনের চাহিদা মেটায়, অন্যদিকে এগুলো আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে পাঠিয়েও আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনে আনন্দ পাই।

অন্য গৃহিণীদের জন্য আপনার কী পরামর্শ থাকবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে হেনা জানান, যাদের নিজস্ব ছাদসহ বাড়ি আছে, তারা যেন অবশ্যই সেটাকে কাজে লাগান। ছাদকৃষি করা তেমন কোনো কঠিন কাজ নয়। ইচ্ছা থাকলেই যে কেউ ছাদকৃষি করতে পারেন। এতে আপনার সময় কাটবে এবং সবজির চাহিদাও মিটবে।

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান রিপন বলেন, আমার স্ত্রী নিজ সন্তানের মতো গাছগুলোকে দেখাশোনা ও পরিচর্যা করে। আমি প্যারালাইসিসজনিত অসুস্থতার কারণে ঠিকমতো কথা বলতে ও চলাফেরা করতে পারি না। দিনের বেশির ভাগ সময় বিছানায় শুয়ে-বসে কাটাতে হয়। তবু যখন মন খারাপ থাকে, ছাদে গাছ দেখতে চলে আসি। গাছে ঝুলন্ত ফল, সবজি দেখলে মন একদম ভালো হয়ে যায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. মোহিত কুমার দে ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমান সময়ে মাঠকৃষির পাশাপাশি ছাদকৃষিরও জনপ্রিয়তা বাড়ছে। একদিকে ছাদকৃষি যেমন নিজেদের পুষ্টি ও খাদ্যচাহিদার জোগান দেয়, অন্যদিকে এই কাজে নিজের মনের প্রশান্তিও বাড়ে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ছাদ-বাগানিদের নিয়মিত সহযোগিতা ও তথ্য সরবারহ করছে।



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top