বাগমারায় পুনরায় বন্যা, ব্যাপক ক্ষতির আশংকা

প্রতিবেদক বাগমারা | প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:৪০; আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:৪১

রাজশাহীর বাগমারায় গত এক সপ্তাহ ধরে কয়েক দফা ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে বাগমারার বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার বিঘা জমির আমন-আউশ ধান, মরিজ ক্ষেতসহ পানবরজ তলিয়ে গেছে। চাষকৃত আবাদ নষ্ট হওয়ায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এদিকে বর্ষার পানি জমে গ্রামের বিভিন্নি এলাকায় মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে।

জানা যায়, গত এক মাস আগে বন্যায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এর পর আবারো গত এক সপ্তাহ ধরে আবারো অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে ভরে যায় উপজেলার সব নদী-নালা ও খাল-বিল। এ অবস্থায় উপজেলার বাসুপাড়া, কাচারী কোয়ালীপাড়া, গনিপুর ইউনিয়নসহ কয়েকটি এলাকায় নতুন নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। এতে রোপা-আমন ও আউশ ধান, পানবরজ, করলা এবং বেগুনসহ প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। গনিপুর ইউনিয়নের চাঁপড়া মোহাম্মাদপুর গ্রামে বর্ষার পানি জমে ১০/১২ মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে। উপজেলার বাগমারা গ্রামের মোজাম্মেল মাষ্টার জানান, একডালা, বাগমারা, বালানগর, সগুনা এলাকার প্রধান ফসল পানবরজ। বন্যার কবল থেকে পানবরজ বাঁচাতে অক্লান্ত চেষ্টা করে শেষ রক্ষা করতে পারেনি।

বাগমারা গ্রামের আহম্মদ আলী, আয়েন উদ্দিন, মজনু, মোস্তফা, আহম্মেদ আলী গত এক মাস ধরে তাদের বরজে পানি যাতে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য পরিবারের লোকজন নিয়ে চারি দিকে উচ্চু করে বস্তা ভরতি মাটি দিয়ে বাঁধ দেয়। শেষ পর্যন্ত বাড়তি পানিতে রক্ষা করতে না পারায় পানি ভিতরে প্রবেশ করে লক্ষ লক্ষ টাকার পানবরজ এখন পানির মধ্যে ডুবে গেছে। বাসুপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার জানান, প্রথম বন্যায় যে পরিমান ক্ষতি হয়েছিল তার চেয়ে দ্বিতীয় দফায় অতিরিক্ত বর্ষনে আরো ক্ষতির পরিমান বেড়েছে। অপরিকল্পিত পুকুর খননে অবিরাম বর্ষনে পানিবদ্ধতায় মোহম্মাদপুর গ্রামের রাস্তা ডুবে গেছে। এতে করে ওই গ্রামের লোকজন পানিবন্ধী রয়েছে। এছাড়া অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে যখন উপজেলা কাচারী কোয়ালীপাড়া ইউনিয়নের পাউবো’র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে পড়া উপক্রম হয়েছে। একই ভাবে অতি বর্ষনে শুভডাঙ্গা, বিহানালী ইউনিয়নসহ এলাকায় প্লাবিত হয়ে নতুন নতুন এলাকায় পানি প্রবেশ করে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, চলতি বন্যায় উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নের কৃষকরা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবারো নতুন করে বন্যায় অনেকের বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে পড়েছে, নতুন নতুন ভাবে পানবরজে পানি উঠে কৃষকরা ক্ষতির সন্মুখীন হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এই মূহুর্তে সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ধারন করা সম্ভব নয়। কারণ বাড়ি-ঘর, ধান ক্ষেতের পাশাপাশি ওই সব এলাকার কৃষকদের বিভিন্ন তরিতরকারি এবং পানবরজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বন্যাকবলীত এলাকায় পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি উচ্চ মহলের সংগে কথা বলেছেন। পানি উন্নয়নসহ এলাকাবাসী বাঁধ রক্ষাতে চেষ্টা করছে। তাছাড়া প্লাবিত এলাকায় ত্রাণ তৎপরতার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

আন্দালীব



বিষয়:


বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top