আজ সারাদেশে মানববন্ধন

পরিস্থিতি বুঝে কর্মসূচি ঘোষণা করবে জামায়াত

রাজটাইমস ডেস্ক: | প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:৪৪; আপডেট: ১৮ মে ২০২৪ ২৩:৩৬

ছবি: ফাইল

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আজ রোববার সারা দেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। আজকের কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেমন আচরণ করে, এর ওপর ভিত্তি করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি। এ ছাড়া মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আজ ঘরোয়াভাবে আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবিতে বিএনপি ও জামায়াত একসঙ্গে আন্দোলনের চিন্তা করছে। এ নিয়ে উভয় দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের একাধিক বৈঠক ও আলোচনা হয়েছে। তবে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জামায়াত খুব শিগগির বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক হয়ে দাবি আদায়ে মাঠে নামবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি। জামায়াত গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে প্রথম দুটি কর্মসূচি যুগপৎভাবে পালন করলেও বিএনপির সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের পর নিজস্ব আঙ্গিকে এককভাবে কর্মসূচি পালন করছে।

সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার আরামবাগে নির্বিঘ্নে মহাসমাবেশ করে জামায়াত। সেখানে দলটির ভারপ্রাপ্ত আমির মুজিবুর রহমানসহ অনেক কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন। সেই থেকে বড় কোনো সভা-সমাবেশের পরিবর্তে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে হরতাল-অবরোধের মতো টানা কর্মসূচি পালন করে আসছে দলটি। এখন গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ নেতাকর্মীদের রাজপথে জড়ো করার লক্ষ্যে আজ ৪৪ দিন পর মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছে জামায়াত।

যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপিসহ আরও কয়েকটি দল এবং সমমনা জোটের উদ্যোগে মহাসমাবেশ ডাকা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের সঙ্গে সহিসংতার একপর্যায়ে সেদিন নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। ফলে পরদিন সারা দেশে হরতাল ডাকে বিএনপি। জামায়াতও পৃথকভাবে একই কর্মসূচি দেয়। সেই থেকে যুগপতে যুক্ত না হলেও একই কর্মসূচি পৃথকভাবে পালন করে আসছে জামায়াত। অন্যদের সঙ্গে তালমিলিয়ে এ পর্যন্ত ১০ দফায় ২০ দিন অবরোধ এবং তিন দফায় চার দিন হরতাল কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।

জামায়াতের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এবারের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসকে (১০ ডিসেম্বর) তারা বেশ গুরুত্ব দিচ্ছেন। অন্যদিকে মানবাধিকার দিবসে মানববন্ধন কর্মসূচিকে ঘিরে ৪৪ দিন পর আবার দলের নেতাকর্মীদের মাঠের জমায়েতে ফিরিয়ে আনতে গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপিও। এর মাধ্যমে সরকার ও পুলিশের আচরণ কী হয়, সেটিও দেখতে চান উভয় দল ও জোটের নীতিনির্ধারকরা। এর ভিত্তিতেই পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করা হবে বলে জানা গেছে।

জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মুজিবুর রহমান গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, দেশে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বহু ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। জামায়াত নেতাদের দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। বিরোধীদলীয় শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অনেককে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ব মানবাধিকার দিবসের এই দিনে আটক রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দেওয়ার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

জামায়াতের দুজন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কালবেলাকে বলেন, তারা ভোটাধিকার আদায় এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দীর্ঘদিন ধরেই রাজপথে মিছিল-মিটিং করে আসছেন। সেই আন্দোলন এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। তাদের মূল দাবি, দলের আমির শফিকুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তি এবং সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। এসব দাবি আদায়ে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। সে ক্ষেত্রে তারা আজকে মানববন্ধনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেবেন পরবর্তী কর্মসূচি কেমন হবে।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, নির্দিষ্ট দাবি আদায়ে কর্মসূচির ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। আমরা অতীতেও রাজপথে সক্রিয় ছিলাম, এখনো আছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন ঘিরে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করেও কিন্তু সফল হতে পারেনি।

এদিকে ‘নিম্ন আদালতে প্রহসনের বিচার, ফরমায়েশি রায় ও গুপ্ত হত্যার’ প্রতিবাদে গতকাল শনিবার ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে করেছে জামায়াত। গতকাল সকালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেনের নেতৃত্বে মতিঝিলে ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি রেজাউল করিমের নেতৃত্বে রামপুরায় মিছিল করেন নেতাকর্মীরা।




বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস
এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর
Top